শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

শৈশবের ঈদ মানেই বাংলা সিনেমা দেখা : রুহুল আমিন

প্রকাশিত: ২০ আগস্ট ২০১৮  

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪): জেলা বিএনপির  সহ সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল আমিন শিকদার। ফুটবল প্রেমী রুহুল আমিন শৈশবে ফুটবলার হতে চেয়েছিলেন । তবে শেষ পর্যন্ত হয়েছেন রাজনীতিবিদ। ২৭ বছরের রাজনৈতিক জীবনে নিজ নামে পরিচিত হওয়াটাকেই অনেক বড় প্রাপ্তি মনে করনে। ব্যক্তি জীবনে এক সন্তানের জনক রুহুল আমিন কথা বলেছেন যুগের চিন্তা ২৪ এর ঈদ আড্ডায়। যুগের চিন্তা ২৪ এর পাঠকদের জন্য আড্ডার অংশ বিশেষ তুলে ধরা হলো।

যুগের চিন্তা: কেমন আছেন?

রুহুল আমিন: শুধু আমি না। বাংলাদেশের মানুষ ভাল নেই। 
যুগের চিন্তা: কেন ভাল নেই?

রুহুল আমিন: মনে হচ্ছে বাকশালের সময় চলছে। এই সরকার দেশের মানুষের মুখ বন্ধ করে রাখতে চায়। এর প্রমাণ সর্বশেষ নিরাপদ সড়কের আন্দোলনের মতো একটি ন্যায্য আন্দোলনে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের ঘরে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে এখন নির্যাতন করছেন। চারিদিকে অত্যাচার নির্যাতন। এই অবস্থায় ভাল থাকা যায় না। 

যুগের চিন্তা: ঈদ চলে এসেছে। ঈদের পরিকল্পনা কী?

রুহুল আমিন: আমাদের বাড়ির পাশে আমাদের মসজিদে নামাজ পড়বো। নামাজ পড়েই বাবার কবরে চলে যাবো। সেখান থেকে বাড়ির পাশে বোনের বাড়িতে যাবো। কোরবানি করবো। এইতো। আর কোন পরিকল্পনা নেই। নেত্রী কারাগারে না থাকলে তার সঙ্গে দেখা করতে যেতাম। 

যুগের চিন্তা: শৈশবের ঈদ নিয়ে কিছু মনে পড়ে?  

রুহুল আমিন: পাঁচ চাচার এক ভাতিজা হওয়ার কারনে ছোটবেলা কোরবানি নিয়ে তেমন কোন কাজ করতে হতো না। তাই তেমন স্মৃতিও নেই। গরু কেনা থেকে জবাই করা সবকিছু তারাই  করতেন। তবে হ্যা, আমার শৈশবের ঈদ মানেই বাংলা সিনেমা দেখা। নামাজ পড়েই চলে যেতাম বাংলা সিনেমা দেখতে।
যুগের চিন্তা: এই ঈদে কাউকে মিস করবেন?

রুহুল আমিন: বাবা রাজনীতি পছন্দ করতেন না। আজকের রুহুল আমিন হয়ে উঠার পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান আমার পাঁচ বোনের। তারা না থাকলে আমি এ যায়গায় আসতে পারতাম না। আমি যাই হই যতটুকুই হই সকল কিছুই আমার বোনদের জন্য। হয়তো অট্টালিকা করতে পারিনি কিন্তু তিন বোনদের মাস্টার্স পর্যন্ত পড়াশোনা করিয়েছি ওদের বিয়ে দিয়েছি। এই ঈদে আমার তিন বোনকে মিস করবো। বাবাকে মিস করবো বলছি না। বিশেষ করে খাগড়াছড়িতে এক বোন আছে শিক্ষিকা। তাকে অনেক বেশি মিস করবো। 

যুগের চিন্তা: রাজনীতিবিদ না হলে কী হতেন?

রুহুল আমিন: আমি একজন ভালো ফুটবলার ছিলাম। মোহামেডানের সার্পোর্ট করতাম। রাজনীতিবিদ না হলে হয়তো  খেলোয়ার হতাম।
যুগের চিন্তা: রাজনীতির শুরুটা কেমন করে হলো, আর পথ চলাটাই বা কেমন ছিলো?

রুহুল আমিন: ১৯৮৮ সালে আমার চাচা ফতুল্লা থানা যুবদলের দপ্তর সম্পাক ছিলেন। তার হাত ধরেই রাজনীতিতে আসি। ১৯৯১ সালে মেট্রিক পরীক্ষার পর ফতুল্লা স্টেশন শাখা ছাত্রদলের নির্বাচিত সভাপতি হই। তারপর ওয়ার্ড সভাপতি, ইউনিয়নের নির্বাচিত সভাপতি, শেষে ফতুল্লা থানার প্রচার সম্পাদক। সেখান থেকে কাজ করতে করতে এখন জেলা বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক। 

যুগের চিন্তা: রাজনীতি থেকে কী পেয়েছেন আর কী হারিয়েছেন?

রুহুল আমিন: বিএনপি আমাকে একটু বেশিই দিয়েছে। অনেক কিছু পেয়েছি। সবচেয়ে বড় হলো মানুষের সম্মান পেয়েছি। পরিবারের সঙ্গে সময় দিতে পারি না। এটা খারাপ লাগে। ছেলেটাকে স্কুলে নিয়ে যেতাম গোসল করিয়ে দিতাম। এখন আর পারি না । পালিয়ে থাকতে হয়। অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। 
যুগের চিন্তা: পরিবারের কথা যখন  চলেই আসলো। পরিবারের কথা বলুন। 

রুহুল আমিন: আমার মা আছেন। বাবা বেঁচে নেই। আমরা পাঁচ বোন দুভাই আর আমার স্ত্রী আর ছেলে এইতো সংসার। এখন ছেলেকে নিয়েই ব্যস্ততা। 
যুগের চিন্তা: রাজনীতিতে কার কাছে সবচেয়ে বেশি কৃতজ্ঞ?

রুহুল আমিন: যখন রাজনীতি শুরু করি তখনকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সূর্যসেন হলের যুগ্ম সম্পাদক ইকবাল আল মোর্শেদ আমাকে স্টেশন শাখার সভাপতি বানায়। তার প্রতি কৃতজ্ঞ। নারায়ণগঞ্জে  কেউ নেই।

যুগের চিন্তা: ২৭ বছরের রাজনৈতিক জীবনের সফলতা কী?

রুহুল আমিন: একসময় মানুষ আমার বাবার নামে আমাকে চিনতো। রাজনীতির কারনে এখন আমার নামেই আমাকে চিনে। আমি যে এলাকায় থাকি সেখানে আওয়ামীলীগ বিএনপির উর্দ্ধে আমাকে সবাই ব্যক্তি হিসেবে মূল্যায়ণ করে। এটা একটা বড় সফলতা।

যুগের চিন্তা: অবসরে কী করেন?

রুহুল আমিন: তেমন কিছুই করি না। পরিবার ও প্রিয়জনদের সঙ্গে সময় কাটানোর চেষ্টা করি। 

যুগের চিন্তা: আপনার মন্দ দিক নিয়ে বলুন।

রুহুল আমিন: রাজনীতিতে সবাইকে সম্মান দিই না। এটা একটা দোষ। কারো উপদেশ তেমনভাবে গ্রহণ করি না। আমার ইগোর সমস্যা আছে প্রচুর।  

যুগের চিন্তা: সময় দেয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। যুগের চিন্তা পরিবারের পক্ষ থেকে ঈদের শুভেচ্ছা নিবেন।

রুহুল আমিন: আপনাকেও ধন্যবাদ। যুগের চিন্তা পরিবার এবং নারায়ণগঞ্জবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা। 
 

এই বিভাগের আরো খবর