শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

সেদিনের পর থেকে আজও ছাগলের মাংস খাইনা : হোসনে আরা বীনা

প্রকাশিত: ১৯ আগস্ট ২০১৮  

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪) : ‘ঈদ তো আর এখন আগের মত কাটানো হয়না।  ছোটবেলায় ঈদ উদযাপন একরকমভাবে করতাম আর এখনকার উদযাপনি ভিন্ন রকমের অন্যভাবে। বয়সের সাথে সাথে ঈদ আনন্দের অনুভূতিও পাল্টায়। ঈদুল আজহা উপলক্ষে যুগের চিন্তা ২৪’এর সাথে ঈদ আড্ডায় যোগ দিয়ে এমননি ভাবে নিজের অনুভূতির কথা জানান নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা (ইউএনও) হোসনে আরা বীনা।

ঈদুল আজহা এবার নারায়ণগঞ্জেই উদযাপন করবেন বলে জানান ইউএনও হোসনে আরা বীনা । তিনি বলেন, ঈদের কোনো ছুটি না থাকায় নারায়ণগঞ্জ ছেড়ে অন্য কোথাও যাওয়া হচ্ছে না। তবে এবারের ঈদটা আমার জন্য অন্যকরম। আব্বু-আম্মুও এবার হজ্বে গেছে। আর আমার হাজবেন্ডও বাবা-মায়ের সাথে ঈদ কাটাতে ফরিদপুর যাবে। অতএব কেউই থাকবেনা। তাই এবার আমার ঈদ একাই কাটাতে হবে।  

ঈদুল আজহায় কোরবানীর পশু কেনা প্রসঙ্গে তিনি জানান, ‘এখনো গরু কেনা হয়নি।  তবে আগামীকাল বা ঈদের আগেই কেনা হয়ে যাবে’।

ঈদের সারটি দিন ব্যস্ততায় কাটবে জানিয়ে তিনি বলেন, সকাল থেকেই ব্যস্ততা শুরু হবে। এর মধ্যে নামাজের সুযোগ থাকলে নামাজ পড়বো। তারপর কোয়াটারে কোরবানির আয়োজন থাকবে। তারপর দুপুর থেকে আত্মীয়-স্বজনদের সাথে দেখা সাক্ষাত পর্ব চলবে একেবারে বিকেল পর্যন্ত।  

তবে বিকেলের দিকে ডিসি স্যারে বাংলোতে আমাদের প্রশাসনের সকল কর্মকর্তাদের দাওয়াত রয়েছে, সেখানে যাব। এভাবেই  কেটে যাবে ঈদের সারাটা দিন।

ছোটবেলার ঈদ উদযাপনের স্মৃতিচারণ করে হোসনে আরা বীনা বলেন, ‘ছোটবেলায় কখনও এক জায়গায় একাধিকবার ঈদ উদযাপন করা হয়নি। বাবার সরকারী চাকরী হওয়ার সুবাদে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জায়গায় ঈদ কাটাতে হত। কখনও ছুটি পেলে গ্রামেও যাওয়া হত। তবে খুব  কম সময়ই এমন সুযোগ আসতো।’

ছোটবেলার ঈদুল আজহায় ছোটবেলার একটি স্মৃতি মনে দাগ কেটে আছে বলে জানান হোসনে আরা বীনা। তিনি বলেন, তখন আমরা রাঙামাটিতে থাকি। কোরবানির জন্য একটা কোরবানি ঈদের বেশ কয়েকদিন আগে বাবা একটি ছাগল কিনে আনে।  

আমরা তিন ভাইবোন মিলে ছাগলটিকে খুব যতœ করতাম। পাহাড়ে ঘুরতে নিয়ে যেতাম। ঘাস,পাতা-লতা কুড়িয়ে খাওয়াতাম।  দিন যতোই যাচ্ছিল মায়া ততোই বাড়ছিলো। ঈদ ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে মনটাও খারাপ হয়ে যাচ্ছিল। ঈদের দিন যখন ছাগলটাকে কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছিল তখন ছাগলটির চিৎকার করছিলো। যা আজও আমার কানে এসে বাজে। এ ঘটনাটা আমার মনে এমনভাবে দাগ কেটেছে যে আমি সেদিনের পর থেকে আজও ছাগলের মাংস খাইনা।

ঈদুল আজহার তাৎপর্য সম্পর্কে বলতে গিয়ে ইউএনও হোসনে আরা বীনার মতে, ঈদুল আজহার মূল উদ্দেশ্যে হল পশু কোরবানির মধ্যে দিয়ে নিজেদের মনের সকল হিংসা-বিদ্বেষ, লোভ-লালসা ও সকল মন্দ চিন্তার বিসর্জন দেয়া। তাই আমাদেরও উচিত এ কোরবানি ঈদে পশু কোরবানির মধ্যে দিয়ে নিজেদের ভেতরের পশুত্ব দূর করতে হবে।

ইউএনও হোসনে আরা বিনা সকলকে ঈদ শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, সকলের ঈদ ভালো এবং নির্বিঘেœ কাটুক। পাশাপাশি ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে যে সকল জায়গায় হাট বসানো হয়েছে। সে সকল জায়গায় যাতে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয় সে ব্যাপারে ক্রেতা এবং বিক্রেতা উভয়কেই লক্ষ্য রাখতে হবে।

এই বিভাগের আরো খবর