শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

ট্রাংকে ঈদের কাপড় লুকিয়ে ঘ্রাণ শুকতাম : আনোয়ার হোসেন

প্রকাশিত: ২ জুন ২০১৯  

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪) : আর মাত্র কয়েকদিন। তারপরই মুসলামান ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম উৎসব ঈদুল ফিতর। এরই মধ্যে ঈদের আনন্দ ছড়িয়ে পড়েছে ঘরে ঘরে। কেনাকাটা নানা আয়োজন নিয়ে ব্যস্ত ছোট-বড় সকলেই। আয়োজনে পিছিয়ে নেই যুগের চিন্তা পরিবারও। প্রতি ঈদের ন্যায় এবারো ঈদ আনন্দে ভাগ করে নিতে আমাদের সাথে যুক্ত হয়েছেন বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। তাদেরই একজন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন জহিরুল হক। 

 

এবারের ঈদ প্রস্তুতি নিয়ে আনোয়ার হোসেন জানান, ঈদ প্রতিবারের মতো এবারও আমার বাড়িতে সপরিবারে উদযাপন করবো। ঈদের কেনাকাটা আমি করি না আমি শুধু আমার উপার্জনের টাকা স্ত্রী কাছে দেই, সেইই মেয়েদেরকে নিয়ে তাদের পছন্দের মত কেনাকাটা করে নিয়ে আসে । তারাও আমার জন্য পাঞ্জাবি নিয়ে আসছে। আমি সব সময় ব্যস্ত থাকি কেনাকাটার সময় পাই না।

 

আনোয়ার হোসেন বলেন, ঈদের দিন সবার সাথে ঈদের নামাজ আদায় করবো। ঈদের নামাজ পড়ে নেতা কর্মীদের সাথে দেখা সাক্ষাৎ করবো। ইচ্ছা আছে ঈদের ছুটিতে দেশের বাইরে কোথাও ঘুরতে যাবো। দেখা গেছে সব সময় ব্যাস্ত থাকি তাই বিশেষ দিন গুলোতে পরিবাকে একান্ত সময় দেয়ার জন্য কিছু সময় দিয়ে থাকি ।বিশেষ করে ঈদে দিন  মেয়ে ও মেয়ের জামাইয়ের জন্য সময় রাখবো। 

 

ছোটবেলার ঈদ আর এখনকার ঈদ উদযাপনের মধ্যে পার্থক্যটা অনেক জানিয়ে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বলেন, ছোট বেলায় যে আনন্দটা ছিলো তখন এখন তা করতে পারি না। ওই সময় আমাদের অভিভাকরা আমাদের জামা কাপড় কিনে দিতো আমরা তা স্বযতেœ রেখে দিতাম। ঈদের জামা কাপড় নিয়ে অনেক গবেষনা করতাম । কখন ঈদ আসবো জামা কাপড় পড়বো কখন নামাজ পড়বো। কখন সালামি নিবো এখন এই চিন্তাটা আমাদের মধ্যে নাই, এখন সুযোগও নাই, সময় নাই। এখন সারাক্ষণ রাজনীতি আর সামাজিক কর্মকান্ড নিয়ে ব্যস্ত থাকি। এখন শুধু নেতাকর্মীরা আসে তাদেরকে বকশীস বা সালামি দিতে হয় নাতিরা আসে তাদেরকে দিতে হয়। এখন আমাদের দেয়ার সময়, নেয়ার সময় নাই।

 

ঈদ সালামি নিয়ে কোন মজার স্মৃতিচারণ করে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, ঈদের সালামী নিয়ে তো ছোট বেলার মজার ঘটনাতো আছেই, ঈদের দিন বড় ভাই, বাবা সালামী দিতো। আমি যখন ছোট ছিলাম সেই সময় যখন পাঞ্জাবি, সার্ট, প্যান্ট পড়তাম তখন  কেরলিন কাপড়ের সার্ট আর ট্যাটনোট কাপড়ের প্যান্ট ছিলো। আর তখন নতুন পাতলা স্পঞ্জের  চপ্পল / স্যান্ডেল  বের হয়েছিলো । তখন কেনার পর আমি ট্রাঙ্কের  ভেতর রেখে দিতাম আর মাঝে মাঝে বের করে ঘ্রাণ শুকতাম ।

 

তিনি বলেন, এই ঘটনাটা আমার খুব মনে পড়ে আমার জীবনে কেরলিন কাপড়ে শার্ট আর ট্যাটন কাপড়ে প্যান্ট আর স্পঞ্জের স্যান্ডেল কেনার পর ট্রাংকে রেখে দিতাম আর মাঝে মাঝে বের করে ঘ্রাণ শুকতাম। আর কবে ঈদ আসবো সেই চিন্তাই থাকতাম।
 

আনোয়ার হোসেন মজা করে বলেন, আগেতো স্ত্রী ( আয়রণ) ছিলো না তখন জামা কাপড় ভাঁজ করে বালিশের নিচে রেখে দিতাম । আর তখন কার সময় বন্ধুবান্ধবদের সাথে তো এক ধরণের প্রতিযোগিতা থাকতো। কার জামা কত সুন্দর থাকতো । আর ঈদের যখন সালামি পাইতাম তখন সালামির টাকা জমাইয়া ঈদের পরে আমাদের বাংলো ঘরের সামনে দিয়ে আচার বিক্রেতারে ডাক দিয়া তেঁতুলের আচার, চালতার আচার, আমের আচার এগুলি কিইনা খেতাম। আমাদের বাংলো ঘরে দরজা বন্ধ করে খাইতাম একা একা, কেউ যদি না দেখতে পারে। এই সালামির টাকা দিয়া এগুলো কিনে খাইতাম। এখন আর সেই দিন নাই ! কেরনীল কাপড়ও নাই ট্যাটনের কাপড় নাই! এখন সেই স্পঞ্জের স্যান্ডেল নাই। 

 

শুভানুধ্যায়ীদের অগ্রীম ঈদ শুভেচ্ছা জানিয়ে আনোয়ার হোসেন বলেন, বার্তা রইলো এই আমাদের ধর্মেও বিধান আছে। নিজে খাও, অন্যকেও খায়াও। যারা গরিব অসহায় আছে তাদেরকে যাকাত ফেতরা দেওয়ার বিধান আছে। আমরা যেনো আমাদের আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশি যারা অসহায় আছে তাদেরকে যেন সাহায্য সহযোগিতা করি।   


 

এই বিভাগের আরো খবর