জানাজায় অংশগ্রহণ: ইমানি দায়িত্ব ও অশেষ সওয়াবের সুযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:১৪ এএম
দুনিয়ার সফরের শেষ গন্তব্য মৃত্যু। মৃত্যু এক অপ্রিয় হলেও চূড়ান্ত সত্য, যা সুনিশ্চিত, অনিবার্য ও অবশ্যম্ভাবী। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন, প্রতিটি প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করতে হবে। (সুরা আলে ইমরান: ১৮৫)
ইসলামে জানাজার নামাজ ফরজে কিফায়া। অর্থাৎ কোনো মুসলমান মারা গেলে মহল্লার কিছুসংখ্যক মানুষ জানাজার নামাজ আদায় করলে বাকিরা দায়িত্বমুক্ত হয়ে যায়। তবে জানাজার নামাজে অংশগ্রহণ কেবল সামাজিক রীতি নয়; এটি একজন মুসলমানের ওপর আরেক মুসলমানের গুরুত্বপূর্ণ অধিকারগুলোর একটি।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, এক মুসলমানের অধিকার অন্য মুসলমানের ওপর পাঁচটি: সালামের জবাব দেওয়া, রোগীকে দেখতে যাওয়া, জানাজার সঙ্গে যাওয়া, দাওয়াত কবুল করা এবং হাঁচি দিলে তার জবাব দেওয়া। (রিয়াদুস সলেহিন: ৯০০)
কোনো মুসলমানের জানাজা ও দাফনকার্যে অংশগ্রহণ সমাজের মুসলমানদের জন্য একটি ইমানি দায়িত্ব। একই সঙ্গে এতে রয়েছে বিপুল সওয়াবের প্রতিশ্রুতি। যদিও সবার উপস্থিতি বাধ্যতামূলক নয়, তবুও এমন মহৎ ও ফজিলতপূর্ণ আমল থেকে পিছিয়ে থাকা কোনোভাবেই সমীচীন নয়।
জানাজা ও দাফনে অংশগ্রহণের সওয়াব সম্পর্কে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রেখে এবং নেকির আশায় কোনো মুসলমানের জানাজার সঙ্গে যাবে, তার জানাজার নামাজ আদায় করবে এবং দাফন করা পর্যন্ত সঙ্গে থাকবে, সে দুই কিরাত সওয়াব নিয়ে ঘরে ফিরবে। এক কিরাত উহুদ পাহাড়ের সমান। আর যে ব্যক্তি জানাজার নামাজ আদায় করে দাফনের আগেই ফিরে আসে, সে এক কিরাত সওয়াব নিয়ে ফিরবে। (রিয়াদুস সলেহিন: ৯৩৫)
অতএব, জানাজায় অংশগ্রহণ শুধু সামাজিক দায়িত্ব নয়; এটি ইমানের পরিচয় ও পরকালের পাথেয় সঞ্চয়ের এক মহামূল্যবান সুযোগ।



