Logo
Logo
×

মতামত

ভূ-রাজনীতি: অস্তিত্বের সংকট ও উত্তরণের পথ

Icon

প্রকাশ: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:৩১ পিএম

ভূ-রাজনীতি: অস্তিত্বের সংকট ও উত্তরণের পথ

ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশের মানচিত্রটা ছোট। কিন্তু লোভটা বিশাল। চারদিকে শকুনের ছায়া। উত্তরের পাহাড় থেকে দক্ষিণের নীল জল। সবই যেন আজ নিলামে দেশটা চায়। ভারত হাত বাড়ায়। চীন থাবা মেলে। আমেরিকা দাবার চাল দেয়। আর রাশিয়া? সেও নিঃশব্দে ঘাঁটি সাজায়। বাংলাদেশ আজ কোনো সার্বভৌম রাষ্ট্র নয়, যেন এক ভূ-রাজনৈতিক দড়ি। সবাই টানছে। যে যার নিজের দিকে। কেউ বন্ধু সেজে পকেট কাটছে, কেউ অভিভাবক সেজে শৃঙ্খল পরাচ্ছে। মিয়ানমারের মতো দেশও আজ চোখে আঙুল উচিয়ে ধমকায়।

একসময়ের শান্ত জনপদ আজ বিশ্বের রণক্ষেত্রে পরিণত। ​ঘরের চিত্রটা আরও করুণ। সেখানে ক্ষমতার মহোৎসব চলছে। উৎসব নয়, আসলে উন্মাদনা। নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামাত, তালিকায় বাদ নেই কেউ। গদি চাই। যেকোনো মূল্যে। দেশের মাটি ধসে পড়ুক, রক্তগঙ্গা বইুক, মানুষের নাভিশ্বাস উঠুক। গদিতে বসাটাই শেষ কথা। সবাই এখানে রাজা। কিন্তু প্রজা কোথায়? সাধারণ মানুষের শান্তি এখন জাদুঘরে। আগে ছিল না, আজও নেই। দেশটা যেন এক পণ্য। যার যার মতো পারছে, ছিঁড়ে খাচ্ছে। টানাটানি চলছেই। কিন্তু এই দড়ি কি ছিঁড়ে যাবে? না কি দেশটা খাদের কিনারে দাঁড়িয়ে শেষ সূর্যাস্ত দেখবে? ​প্রশ্নটা এখন আর রাজনীতির নেই। প্রশ্নটা অস্তিত্বের। আর এই নিয়েই আমার আজকের কলাম।

​ ভূ-রাজনীতির ত্রিমুখী চাপে পিষ্ট বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব: একটি অন্তহীন টানাপোড়েন

বাংলাদেশ। দেশটি দক্ষিণ এশিয়ার একটি কৌশলগত কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। ভারত তার 'চিকেন’স নেক' করিডোরের নিরাপত্তা এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের স্থিতিশীলতার জন্য বাংলাদেশের ওপর নির্ভরশীল। অন্যদিকে, চীন তার 'বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ' (BRI) প্রকল্পের মাধ্যমে এই অঞ্চলে তার আধিপত্য বিস্তার করতে চায়। আমেরিকা আবার এই অঞ্চলে চীনের প্রভাব রুখতে 'ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি' (IPS) নিয়ে হাজির হয়েছে। এই তিন বৃহৎ শক্তির মাঝখানে পড়ে বাংলাদেশ আজ যেন এক রশি টানাটানির শিকার। এক পক্ষকে খুশি করলে অন্য পক্ষ বেজার হয়। এই শক্তির লড়াইয়ে দেশের জাতীয় স্বার্থ অনেক সময় গৌণ হয়ে পড়ে, প্রাধান্য পায় বিদেশি প্রভুদের সন্তুষ্টি। এতে সাধারণ মানুষের মনে এই আশঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে যে, আমাদের সিদ্ধান্তগুলো কি আসলেই ঢাকা থেকে নেওয়া হচ্ছে, না কি দিল্লি, বেইজিং বা ওয়াশিংটন থেকে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে? এই সার্বভৌমত্বের সংকট আমাদের জাতীয় আত্মমর্যাদাকে দিন দিন ধূলিসাৎ করছে।

 দুঃসাহস ও দুর্বল পররাষ্ট্রনীতির মাশুল:

একটি রাষ্ট্র তখনই অন্য রাষ্ট্রের কাছে অবজ্ঞার শিকার হয়, যখন তার অভ্যন্তরীণ ভিত্তি দুর্বল থাকে। মিয়ানমার বছরের পর বছর ধরে রোহিঙ্গাদের আমাদের ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়ে কেবল অর্থনৈতিক বোঝাই বাড়ায়নি, বরং তারা আমাদের আকাশসীমা লঙ্ঘন এবং সীমান্তে গোলাগুলি করে সার্বভৌমত্বকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে জোরালো বন্ধুহীনতা এবং আমাদের কূটনৈতিক স্থবিরতার কারণে মিয়ানমারের মত দেশ  আমাদের ‘চোখ রাঙানোর’ দুঃসাহস দেখাচ্ছে। যখন একটি দেশ নিজের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক কোন্দলে লিপ্ত থাকে, তখন প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলো সুযোগ সন্ধানী হয়ে ওঠে। মিয়ানমারের জান্তা সরকার ভালো করেই জানে যে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো এখন একে অপরকে দমনে ব্যস্ত, তাই সীমান্ত সুরক্ষায় যে জাতীয় ঐক্য প্রয়োজন তা বর্তমানে অনুপস্থিত। এই দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তারা বঙ্গোপসাগরে আমাদের অধিকার এবং স্থল সীমান্তের নিরাপত্তাকে বারবার হুমকির মুখে ফেলছে।

​ক্ষমতার মোহে অন্ধ অভ্যন্তরীণ রাজনীতি ও আদর্শের বিচ্যুতি:

বাংলাদেশের রাজনীতি এখন জনসেবা নয়, বরং ‘গদি দখল’ এবং ‘গদি রক্ষা’র এক আদিম লড়াইয়ে রূপ নিয়েছে। নিষিদ্ধ  ঘোষিত আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামাত বা জাতীয় পার্টি দলগুলোর কর্মকাণ্ড বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, তাদের মূল লক্ষ্য ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা। এই ক্ষমতার নেশা এতই তীব্র যে, তারা দেশের বৃহত্তর স্বার্থকে বিসর্জন দিতেও দ্বিধা করছে না। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপ বা সমঝোতার কোনো জায়গা অবশিষ্ট নেই; আছে কেবল পরস্পরকে নিশ্চিহ্ন করার অশুভ প্রতিযোগিতা। যখন রাজনীতিতে পেশিশক্তি এবং অর্থের ঝনঝনানি বেড়ে যায়, তখন আদর্শিক কর্মী নয়, বরং সুযোগসন্ধানী ও তোষামোদকারীদের জয়জয়কার হয়। সাধারণ মানুষের অধিকারের কথা কেবল নির্বাচনী ইশতেহারে শোভা পায়, কিন্তু বাস্তবে তারা কেবল সস্তা শ্রম আর ভোটব্যাংক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এই অন্ধ মোহ দেশটাকে একটি স্থায়ী রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

ধর্মীয় রাজনীতির উত্থান ও সামাজিক মেরুকরণের ক্ষত:

বাংলাদেশের সামাজিক বুননে ধর্মের প্রভাব অনস্বীকার্য, কিন্তু সাম্প্রতিককালে এই ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের প্রবণতা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। একদিকে প্রগতিশীলতার দোহাই দিয়ে এক গোষ্ঠী ধর্মীয় মূল্যবোধকে আঘাত করছে, অন্যদিকে ইসলামিক দলগুলো ক্ষমতার লড়াইয়ে অংশ নিতে ধর্মকে রাজনৈতিক ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। এই মেরুকরণ সমাজের মানুষের মধ্যে এক অদৃশ্য দেয়াল তুলে দিয়েছে। এক দল অন্য দলকে 'কাফের' বা 'দেশদ্রোহী' আখ্যা দিচ্ছে। এই বিভাজন কেবল রাজপথের লড়াইয়ে সীমাবদ্ধ নেই, এটি এখন মানুষের অন্দরমহলেও ঢুকে পড়েছে। ধর্মের নামে ঘৃণা ছড়ানো আর উগ্রবাদের উত্থান দেশের শান্তিকে বিষিয়ে তুলেছে। সাধারণ মানুষ যারা কেবল শান্তিতে নিজের ধর্ম পালন করতে চায়, তারা আজ এই উগ্র রাজনৈতিক খেলার শিকারে পরিণত হচ্ছে, যা দীর্ঘমেয়াদে গৃহযুদ্ধের মতো পরিস্থিতির ঝুঁকি তৈরি করছে।

নিয়ন্ত্রণহীন ক্ষমতার আস্ফালন ও প্রশাসনিক কাঠামোর ধস:

বর্তমানে বাংলাদেশে ক্ষমতার কোনো সুনির্দিষ্ট কেন্দ্র নেই; বরং ‘সবাই ক্ষমতাধর’ এমন এক ভীতিকর পরিবেশ বিরাজ করছে। পাড়া-মহল্লার ছোট নেতা থেকে শুরু করে উচ্চপদস্থ আমলা সবার মধ্যেই এক ধরনের বিচারহীনতার সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। পুলিশ প্রশাসন থেকে শুরু করে বিচার বিভাগ, সবখানেই দলীয়করণের ছোঁয়া লেগেছে। ফলে সাধারণ মানুষ আজ প্রতিকার পাওয়ার সব জায়গা হারিয়ে ফেলেছে। যখন কোনো রাষ্ট্রে আইনের শাসনের চেয়ে ব্যক্তির ইচ্ছা বড় হয়ে দাঁড়ায়, তখন সেই রাষ্ট্র মাৎস্যন্যায় বা অরাজকতার দিকে ধাবিত হয়। সরকারি অফিসগুলোতে ঘুষ ছাড়া ফাইল নড়ে না, আর রাজনৈতিক প্রভাব ছাড়া বিচার মেলে না। এই নিয়ন্ত্রণহীনতা সমাজকে এক গভীর হতাশায় নিমজ্জিত করেছে। মানুষ আজ নিজ দেশে নিজেকে পরবাসী মনে করছে, যেখানে তাদের জানমালের কোনো নিরাপত্তা নেই।

অর্থনৈতিক রক্তক্ষরণ ও মধ্যবিত্তের নিঃশব্দ হাহাকার: 

মেগা প্রজেক্ট আর উন্নয়নের চাকচিক্যের নিচে চাপা পড়ে গেছে সাধারণ মানুষের কান্না। দেশের অর্থনীতি আজ সিন্ডিকেট আর লুটেরা ধনিক শ্রেণির কবলে। নিত্যপণ্যের দাম আকাশচুম্বী, অথচ মানুষের আয় বাড়েনি। ডলার সংকট, ব্যাংকিং খাতের লুটপাট আর বিদেশে অর্থ পাচারের ফলে অর্থনীতি আজ খাদের কিনারায়। মধ্যবিত্ত সমাজ, যারা না পারে সইতে, না পারে কইতে, তারা আজ নিঃশব্দে ক্ষয়ে যাচ্ছে। শান্তি বলতে যা বোঝায়, তা সাধারণ মানুষের খাবারের টেবিল থেকে হারিয়ে গেছে অনেক আগেই। শাসকগোষ্ঠী যখন উন্নয়নের পরিসংখ্যানে ব্যস্ত, তখন গ্রামের সাধারণ কৃষক বা শহরের শ্রমজীবী মানুষ আধপেটা খেয়ে দিন পার করছে। এই অর্থনৈতিক বৈষম্য সমাজে এক বিশাল বিস্ফোরণের বারুদ তৈরি করছে, যা যেকোনো সময় আগ্নেয়গিরির মতো ফেটে পড়তে পারে।

​শিক্ষা ও সংস্কৃতির পঙ্গুত্ব: একটি মেধাশূন্য প্রজন্মের পদধ্বনি শুনতে পাই আমরা। একটি জাতিকে ধ্বংস করার জন্য যুদ্ধের প্রয়োজন হয় না, তার শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিলেই চলে। বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা আজ পরীক্ষা-নিরীক্ষার এক ল্যাবরেটরিতে পরিণত হয়েছে। প্রশ্নপত্র ফাঁস থেকে শুরু করে পাঠ্যবইয়ের বিতর্ক সব মিলিয়ে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এক গভীর অন্ধকারে নিমজ্জিত। উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো আজ জ্ঞানচর্চার বদলে রাজনৈতিক ক্যাডার তৈরির কারখানায় পরিণত হয়েছে। মেধাবীরা দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছে (Brain Drain), আর যারা থাকছে তারা দলীয় পরিচয়ে অযোগ্য জায়গা দখল করছে। মেধার বদলে আনুগত্য যখন মূল্যায়নের মাপকাঠি হয়, তখন সেই জাতির কপালে লাঞ্ছনা ছাড়া আর কিছু জোটে না। সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও আজ স্থবিরতা; সৃজনশীলতার বদলে কেবল চাটুকারিতার চর্চা হচ্ছে, যা একটি জাতির মেরুদণ্ডকে ভেতর থেকে ঝাঁঝরা করে দিচ্ছে।

নাগরিক অধিকার ও বাকস্বাধীনতার সংকোচন: ভয়ের সংস্কৃতি

গণতন্ত্রের অন্যতম স্তম্ভ হলো বাকস্বাধীনতা, যা আজ বাংলাদেশে কেবল কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বা সাইবার নিরাপত্তা আইনের মতো নানা কালাকানুন ব্যবহার করে ভিন্নমতের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে। সাংবাদিকরা সত্য লিখতে ভয় পাচ্ছেন, আর সাধারণ মানুষ সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের অভাব-অভিযোগ জানাতেও দ্বিধা করছেন। এই ‘ভয়ের সংস্কৃতি’ (Culture of Fear) রাষ্ট্রকে একনায়কতন্ত্রের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। যখন কোনো সমাজ তার ক্ষোভ প্রকাশ করতে পারে না, তখন সেই ক্ষোভ গোপনে চরমপন্থায় রূপ নেয়। মুক্ত চিন্তা ও সুস্থ সমালোচনার পথ বন্ধ করে দিলে দেশটা মেধাহীন চাটুকারে ভরে যায়, যারা শেষ পর্যন্ত শাসককেও বিপদে ফেলে। মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো আজ দয়ার দান হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

জাতীয় ঐক্যের অভাব ও বিভাজনের রাজনীতি: 

শকুনের নজর ইতিহাস সাক্ষী, যে জাতি নিজেরা বিভক্ত থাকে, বাইরের শক্তি তাদের ওপর আধিপত্য বিস্তার করে। আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ন্যূনতম সৌজন্যবোধ বা জাতীয় ইস্যুতে একমত হওয়ার মানসিকতা নেই। ভারত যখন পানি দেয় না, বা মিয়ানমার যখন সীমান্তে উসকানি দেয়, তখনও আমাদের দলগুলো একে অপরকে দোষারোপে ব্যস্ত থাকে। এই বিভাজনই বিদেশি শক্তিগুলোকে আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর লাইসেন্স দিয়ে দিয়েছে। আমরা আজ লাল বনাম সবুজ, না হয় ডান বনাম বাম এমন নানা মেরুতে বিভক্ত। এই অনৈক্যের সুযোগ নিয়ে বাইরের দেশগুলো বাংলাদেশকে তাদের স্বার্থে ব্যবহার করছে। যতক্ষণ আমরা ‘বাংলাদেশি’ হিসেবে এক হতে না পারব, ততক্ষণ বিশ্বশক্তির এই টানাটানি চলতেই থাকবে।

শেষের শুরু না কি নতুন উত্থান?:

একটি অনিশ্চিত গন্তব্য

মানুষ আজ ক্লান্ত হয়ে প্রশ্ন করছে, এই অন্ধকারের শেষ কোথায়? দেশটা কি আসলেই পতিতার মতো ব্যবহৃত হবে না কি তার হারানো গৌরব ফিরে পাবে? আসলে পতনের শেষ প্রান্তে এসেই উত্থানের শুরু হয়। তবে সেই উত্থানের জন্য প্রয়োজন এক নতুন সামাজিক চুক্তি। বর্তমানের এই পচা-গলা রাজনৈতিক ব্যবস্থা দিয়ে নতুন কোনো ভোরের দেখা পাওয়া সম্ভব নয়। যদি তরুণ সমাজ জেগে না ওঠে এবং তারা যদি লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতির বাইরে এসে দেশপ্রেমকে গুরুত্ব না দেয়, তবে আমাদের কপালে আরও ঘোর দুর্দিন আছে। দেশটা কোনো ব্যক্তি বা দলের সম্পত্তি নয়; এটা সাধারণ মানুষের। যেদিন সাধারণ মানুষ তাদের অধিকার আদায়ে ঐক্যবদ্ধ হবে, সেদিনই বিদেশি প্রভুরা আর দেশের ভেতরের শোষকরা পিছু হটতে বাধ্য হবে। আমাদের শেষটা ধ্বংস নয়, বরং এক নতুন সংগ্রামের সূচনালগ্ন হওয়া উচিত।

​উপসংহার: কেবল মুক্তি মিলবে জনগণের জাগরণে। ​বাংলাদেশ আজ এক অদ্ভুত আঁধারে নিমজ্জিত। একদিকে বিদেশি শক্তির লোলুপ দৃষ্টি, অন্যদিকে অভ্যন্তরীণ স্বার্থের লড়াই দেশটাকে খণ্ড-বিখণ্ড করে দিচ্ছে। শান্তি আগেও অধরা ছিল, কিন্তু বর্তমানের অস্থিরতা অস্তিত্বের মূলে আঘাত করছে। তবে নিরাশ হওয়ার কিছু নেই; এই মাটির মানুষের লড়াই করার ইতিহাস দীর্ঘ। রাজনৈতিক দলগুলোকে বুঝতে হবে, ক্ষমতায় চিরকাল কেউ থাকে না, কিন্তু ইতিহাস সবার বিচার করে। দেশটাকে নিয়ে এই ‘টানা-হেঁচড়া’ বন্ধ করতে হলে সবার আগে প্রয়োজন একটি স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক ব্যবস্থা, যেখানে মানুষের ভোটের দাম থাকবে। বিদেশি শক্তির কাছে মাথা নত না করে আত্মসম্মানবোধের রাজনীতিই পারে আমাদের এই সংকট থেকে উদ্ধার করতে। নতুবা আমাদের উত্তরসূরিরা এক পরাধীন এবং জরাজীর্ণ ভূখণ্ড উপহার পাবে, যা কারোরই কাম্য নয়।

​মীর আব্দুল আলীম 

সাংবাদিক, কলামিস্ট

মহাসচিব- কলামিস্ট ফোরাম  অব বাংলাদেশ।

Swapno

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher

Major(Rtd)Humayan Kabir Ripon

Managing Editor

Email: [email protected]

অনুসরণ করুন