ছবি : সংগৃহীত
বাঙালির খাবারের সঙ্গে গুড়ের সম্পর্ক অটুট। বিশেষ করে পিঠা-পায়েসে শীতকালীন মিষ্টি হিসেবে এর গুরুত্ব অপরিসীম। শুধু স্বাদ নয়, খেজুরের গুড় স্বাস্থ্যবানও। চিনির তুলনায় এটি দেহের জন্য ভালো কারণ এতে থাকে লৌহ (Iron), ম্যাগনেসিয়াম, জিংক, সেলেনিয়াম এবং পটাশিয়াম। এই খনিজ ও ভিটামিনগুলো রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, সংক্রমণ কমায় এবং শরীরের সাধারণ স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
গুড় তৈরি প্রক্রিয়া
খেজুরের রস থেকে গুড় তৈরি করা হয়। কিছু দেশে পামের রস থেকেও গুড় তৈরি হয়। খেজুরের রস সংগ্রহের পর তা বড় পাত্রে রেখে উত্তাপে ফুটানো হয়। রস ধীরে ধীরে ঘন হয়ে গাঢ় বাদামি রঙের মিষ্টি গুড়ে পরিণত হয়। খেজুরের স্বাদ, ঘ্রাণ এবং রঙ এখানেই আসে।
ভেজাল গুড়: ঝুঁকি ও কারণ
শীতের মৌসুমে বাজারে দেখা যায় ভেজাল গুড়ের ব্যাপক প্রবণতা। অনেক ব্যবসায়ী চাহিদা সামাল দিতে এবং রঙ উজ্জ্বল করতে কৃত্রিম চিনি, ফিটকিরি বা অন্যান্য রাসায়নিক মেশান। এসব ভেজাল গুড়ের স্বাদ এবং পুষ্টিগুণ মূলত থাকে না। অতিমাত্রায় বাণিজ্যিক লোভ, দ্রুত লাভের প্রলোভন এবং বাড়তি চাহিদা ভেজাল গুড় তৈরির প্রধান কারণ।
ভেজাল গুড় চেনার উপায়
রং পরীক্ষা করুন: খাঁটি খেজুর গুড়ের রঙ গাঢ় বাদামি। যদি রঙ অতিরিক্ত হলুদ, উজ্জ্বল বা চকচকে দেখায়, বুঝবেন এতে রাসায়নিক মেশানো হয়েছে।
পাটালির বৈশিষ্ট্য দেখুন: ভেজাল পাটালি অনেক শক্ত, চকচকে এবং রসাল থাকে না। আসল খেজুর পাটালি নরম, রসাল এবং কালচে লাল রঙের হয়। উপরের অংশ কিছুটা শক্ত হতে পারে, কিন্তু ভেতরের অংশ সবসময় রসাল থাকে।
স্বাদ পরীক্ষা করুন: পুরনো বা ভেজাল গুড় নোনতা বা অতিরিক্ত তিতা হয়। আসল গুড়ের স্বাদ মিষ্টি ও স্বাভাবিক। কেনার সময় সামান্য চেখে নিলে বোঝা যায়।
ফটিক বা স্ফটিক খুঁজুন: গুড়ের মধ্যে স্ফটিকের মতো অংশ থাকলে, বোঝা যায় মিষ্টতা বাড়ানোর জন্য চিনি বা রাসায়নিক মেশানো হয়েছে।
পাটালির নরমতা ও রসাল ভাব: আসল খেজুর গুড়ের পাটালি হাত দিয়ে চাপ দিলে হালকা নরম থাকে এবং রস বের হয়। ভেজাল পাটালি সাধারণত শক্ত ও শুকনো হয়।
শীতের মৌসুমে গুড়ের চাহিদা বাড়ে, কিন্তু স্বাস্থ্য রক্ষা করতে ভেজাল থেকে দূরে থাকা জরুরি। আসল খেজুর গুড় চেনার উপায় মেনে চললে আপনি স্বাদ, পুষ্টি এবং স্বাস্থ্য সবই একসঙ্গে উপভোগ করতে পারবেন।



