
প্রিন্ট: ২৪ জুন ২০২৫, ০৫:২৭ এএম
টিকটকে লাইভ চলাকালে তরুণীকে গুলি করে হত্যা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৫, ০১:৫২ পিএম

ভ্যালেরিয়া মার্কেজ। ছবি: সংগৃহীত
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে টিকটক লাইভস্ট্রিম চলাকালে গুলিতে নিহত হয়েছেন মেক্সিকান ইনফ্লুয়েন্সার ভ্যালেরিয়া মার্কেজ। মর্মান্তিক এই হত্যাকাণ্ড ঘটে মেক্সিকোর জালিস্কো রাজ্যের গুয়াদালাজারা শহরে, নিজের পরিচালিত বিউটি সেলুনে লাইভ করছিলেন ২৩ বছর বয়সী এই তরুণী।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি ও মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক পোস্টসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ঘটনাটি ঘটে যখন এক ব্যক্তি উপহার দেওয়ার অজুহাতে ভ্যালেরিয়ার সেলুনে প্রবেশ করে এবং তাঁকে খুব কাছ থেকে গুলি করে হত্যা করে।
ভ্যালেরিয়া ‘ব্লসম দ্য বিউটি লাউঞ্জ’ নামের সেলুন থেকে লাইভস্ট্রিম করছিলেন। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, তিনি অনুসারীদের সঙ্গে আলাপ করছিলেন এবং একটি নরম খেলনা হাতে নিয়ে বসেছিলেন। লাইভের শেষ মুহূর্তে তাঁকে বলতে শোনা যায়, “ওরা আসছে।” ঠিক তারপরেই একটি পুরুষ কণ্ঠ বলে, “এই, ভ্যালে?” — তিনি জবাব দেন, “হ্যাঁ।” এরপরই লাইভের শব্দ বন্ধ হয়ে যায় এবং পেছন থেকে গুলির শব্দ শোনা যায়। গুলিবিদ্ধ হয়ে ভ্যালেরিয়া পাঁজরে হাত দিয়ে চেপে ধরেন এবং টেবিলের ওপর লুটিয়ে পড়েন।
ঘটনার কিছুক্ষণ পর এক ব্যক্তি লাইভ চলাকালে তাঁর ফোনটি হাতে তুলে নেয় এবং ভিডিওটি সেখানেই শেষ হয়। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, হামলাকারী মোটরসাইকেলে করে এসেছিল এবং ‘উপহার’ দেওয়ার ভান করে হত্যাকাণ্ড চালায়।
স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, ভ্যালেরিয়া লাইভে বলেছিলেন, তিনি সেলুনে অনুপস্থিত থাকাকালে কেউ একজন তাঁর জন্য একটি দামি উপহার রেখে গিয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে তিনি স্পষ্টতই উদ্বিগ্ন ছিলেন এবং বলেছিলেন, তিনি সেই ব্যক্তির ফিরে আসার অপেক্ষায় থাকবেন না।
পুলিশ জানিয়েছে, ভ্যালেরিয়ার মাথা ও বুকে গুলি লাগে এবং ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। তিনি বিউটি ও লাইফস্টাইল কনটেন্টের জন্য জনপ্রিয় ছিলেন এবং ইনস্টাগ্রাম ও টিকটকে তাঁর অনুসারীর সংখ্যা ছিল প্রায় ২ লাখ।
হত্যাকাণ্ডটি নারীহত্যা বা 'ফেমিসাইড' হিসেবে তদন্ত করা হচ্ছে। জালিস্কো রাজ্য কৌঁসুলির কার্যালয় জানিয়েছে, হত্যায় নারী-বিদ্বেষ, যৌন সহিংসতা বা হত্যাকারীর সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্কের সম্ভাবনা থাকায় এই প্রটোকল অনুসরণ করা হচ্ছে। এখনো পর্যন্ত কোনো সন্দেহভাজনের নাম প্রকাশ করা হয়নি।
জাতিসংঘের লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, নারীহত্যার হারে মেক্সিকো বর্তমানে এই অঞ্চলে চতুর্থ স্থানে রয়েছে, প্যারাগুয়ে, উরুগুয়ে এবং বলিভিয়ার সঙ্গে সমান অবস্থানে।
ভ্যালেরিয়ার নির্মম মৃত্যু কেবল তাঁর অনুসারীদের নয়, গোটা সমাজকেও স্তম্ভিত করেছে—বিশেষত তখন, যখন নারীদের নিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে এমন এক বাস্তবতায়।