
প্রিন্ট: ২৫ জুন ২০২৫, ০২:১৬ এএম
সৌদিতে চার মাসে শতাধিক মৃত্যুদণ্ড কার্যকর, মানবাধিকার সংগঠনের উদ্বেগ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৪ মে ২০২৫, ১২:৩২ এএম

ছবি : সংগৃহীত
চলতি বছরের প্রথম চার মাসে সৌদি আরবে কমপক্ষে ১০০ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ফরাসি সংবাদমাধ্যম এএফপি। শনিবার (২৭ এপ্রিল) দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, সর্বশেষ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার দায়ে দুই সৌদি নাগরিকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, উক্ত দুই ব্যক্তি বিদেশে বিস্ফোরক তৈরির প্রশিক্ষণ নেওয়াসহ সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়ার পর তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হলে আদালত মৃত্যুদণ্ডের রায় দেয় এবং তা কার্যকর করা হয়।
এএফপির তথ্যানুযায়ী, ২০২৪ সালের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত দেশটিতে ১০০ জনের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে, যাদের মধ্যে ৫৯ জন মাদক সংশ্লিষ্ট অপরাধে দণ্ডিত ছিলেন এবং ৪৩ জনই বিদেশি নাগরিক।
হত্যা, সন্ত্রাসবাদ, মাদক পাচারসহ নানা অপরাধে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের কারণে সৌদি আরব নিয়মিতভাবে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর সমালোচনার মুখে পড়ে। মানবাধিকার সংগঠন রিপ্রিভ-এর প্রধান জিদ বাসিউনি বলেন, “সৌদি আরব একটি ইতিবাচক বৈশ্বিক ভাবমূর্তি গড়ার চেষ্টা করলেও, মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়গুলো আন্তর্জাতিক অংশীদারদের কাছ থেকে উপেক্ষিত হচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “শুধু চলতি বছরেই শতাধিক মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে, যার অধিকাংশই প্রাণঘাতী নয় এমন অপরাধে। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ৩৪৫ জন।”
সৌদি আরব ২০২২ সালের শেষ দিকে প্রায় তিন বছরের বিরতির পর আবারও মাদক সংশ্লিষ্ট অপরাধে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর শুরু করে। ২০২৩ সালে দেশটিতে ১৭০ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়, যেখানে ২০২২ সালে এই সংখ্যা ছিল ১৯৬ এবং ২০২1 সালে ৬৯।
মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সম্প্রতি সৌদির মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের প্রবণতা নিয়ে “গভীর উদ্বেগ” প্রকাশ করেছে, বিশেষত মাদক সংক্রান্ত অপরাধে মৃত্যুদণ্ডের পুনর্ব্যবহার নিয়ে।
একই সময়ে সৌদি সরকার নিজেদের তেলনির্ভরতা কমিয়ে পর্যটন ও খেলাধুলায় বৈশ্বিক বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে। ২০৩৪ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজনের পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছে দেশটি। তবে মানবাধিকার কর্মীদের মতে, ‘উদার ও সহনশীল সৌদি’ গঠনের যে প্রতিশ্রুতি ভিশন-২০৩০-এর মাধ্যমে দেওয়া হয়েছে, মৃত্যুদণ্ডের ক্রমবর্ধমান হার সেই অগ্রগতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
সৌদি কর্তৃপক্ষ বলছে, দেশজ শৃঙ্খলা বজায় রাখতে মৃত্যুদণ্ড একটি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা এবং এটি শুধুমাত্র সর্বোচ্চ আপিল প্রক্রিয়া শেষে কার্যকর করা হয়।
সূত্র: এএফপি