পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে পাকিস্তান দিবসের সামরিক কুচকাওয়াজে শাহীন-৩ সারফেস-টু-সার্ফেস ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পাশে দাঁড়িয়ে আছেন দেশটির সামরিক বাহিনীর সদস্যরা। ছবিটি ২০১৯ সালের ২৩ মার্চ তোলা
কাশ্মিরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলার জেরে ভারত একতরফাভাবে ১৯৬০ সালের সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে। এই সিদ্ধান্তের জবাবে পাকিস্তান হুঁশিয়ারি দিয়েছে, পানির প্রবাহ বন্ধ বা সরিয়ে দেওয়ার যেকোনো চেষ্টা তারা যুদ্ধ ঘোষণা হিসেবে বিবেচনা করবে, এবং এর জবাব দেবে পূর্ণ সামরিক শক্তি দিয়ে—যার মধ্যে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের সম্ভাবনাও অন্তর্ভুক্ত।
শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ভারতের ক্যাবিনেট কমিটি অন সিকিউরিটি (সিসিএস) চুক্তি স্থগিত করার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারতের মতে, এটি পাকিস্তানের ওপর চাপ বাড়ানোর কৌশলের অংশ। তবে পাকিস্তান বলছে, এই চুক্তি একতরফাভাবে বাতিলযোগ্য নয়, কারণ এটি বিশ্বব্যাংকের তত্ত্বাবধানে সম্পাদিত একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি।
পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ (NSC) থেকে স্পষ্ট বার্তা এসেছে—পানি দেশের জীবনরেখা, এবং এর প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হলে তারা সব ধরনের প্রচলিত ও অপ্রচলিত শক্তি প্রয়োগে পিছপা হবে না।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারতের পক্ষ থেকে যদি পাকিস্তানমুখী নদীগুলোর ওপর বাঁধ বা জলাধার নির্মাণ করে পানির প্রবাহ রোধ করা হয়, তাহলে পাকিস্তান তার জবাবে সেই স্থাপনা সামরিক হামলা করে ধ্বংস করতে পারে, এমনকি পরমাণু হামলার কথাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় ১৯৬০ সালে স্বাক্ষরিত এই চুক্তি দুই দেশের মধ্যে বিরল সহযোগিতার একটি নিদর্শন ছিল। পাকিস্তানের কৃষি ব্যবস্থা প্রায় ৯০% এই পানির ওপর নির্ভরশীল, তাই এর প্রবাহ রোধ তাদের জন্য অস্তিত্বের সংকট তৈরি করতে পারে।
পাকিস্তানের সাবেক সিন্ধু পানি কমিশনার জামাত আলী শাহ মনে করেন, ভারতের সিদ্ধান্ত আসলে একটি রাজনৈতিক কৌশল, যা জনমত ঠাণ্ডা করতে নেওয়া হয়েছে। তাঁর মতে, একতরফাভাবে এই চুক্তি বাতিল বা স্থগিত করা সম্ভব নয়।
এখন প্রশ্ন হলো—এই পানি সংকট কি দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে যুদ্ধের প্রেক্ষাপট তৈরি করছে? বিশ্লেষকরা বলছেন, উত্তেজনা যত বাড়ছে, ততই বাড়ছে অনিশ্চয়তা।



