
প্রিন্ট: ২৪ জুন ২০২৫, ০৮:১৪ এএম

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৩২ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় চলমান যুদ্ধের কারণে ভয়াবহ খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে। জীবন রক্ষার তাগিদে অনেক স্থানীয় বাসিন্দা এখন সামুদ্রিক কচ্ছপের মাংস খেতে বাধ্য হচ্ছেন।
গত ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি ভেঙে ইসরায়েলের স্থল ও বিমান হামলা শুরুর পর থেকে গাজায় ত্রাণ প্রবেশ কার্যত বন্ধ হয়ে যায়, ফলে এক ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন স্থানীয়রা।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, খাবার সংকটের কারণে অনেক পরিবার এখন সামুদ্রিক কচ্ছপ রান্না করে খাচ্ছেন। কেউ কেউ আগে কখনো কচ্ছপ দেখেননি, এমনকি ভয় পেতেন—তবুও ক্ষুধার কাছে হার মানতে বাধ্য হয়েছেন তারা।
গাজার এক বাসিন্দা মাজিদা কানান বলেন, তার সন্তানরা কচ্ছপ দেখে ভয় পেত। তাই তিনি তাদের বলেছিলেন, এটি বাছুরের মাংসের মতোই সুস্বাদু। কেউ খেয়েছে, কেউ খায়নি।
৬১ বছর বয়সী মাজিদা জানান, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এটাই তৃতীয়বার তিনি কচ্ছপ রান্না করছেন, কারণ বাজারে খাবারের সংকট তীব্রতর হয়েছে।
সাধারণত কচ্ছপের খোলস ছাড়িয়ে, মাংস সেদ্ধ করে বিভিন্ন মসলা দিয়ে রান্না করা হয়। যদিও এই প্রাণী আন্তর্জাতিকভাবে সংরক্ষিত এবং বিপন্ন হিসেবে পরিচিত, তবুও বর্তমান পরিস্থিতিতে গাজার উপকূলে ধরা পড়া কচ্ছপ খাবার হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে।
স্থানীয় এক জেলে আবদেল হালিম কানান জানান, তারা কখনো কচ্ছপ খাওয়ার কথা ভাবেননি। কিন্তু যুদ্ধের কারণে খাদ্য সংকট এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, ইসলামিক নিয়ম মেনে কচ্ছপ জবাই করে খেতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।
জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা সতর্ক করে দিয়েছে, গাজার পরিস্থিতি দুর্ভিক্ষের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ত্রাণ প্রবেশ বন্ধ, বাজারে প্রয়োজনীয় পণ্য নেই, দাম আকাশচুম্বী—ফলে সাধারণ মানুষ খাদ্য সংকটের কবলে পড়ছেন।
ক্ষুধার তীব্রতায় অনেকেই পশুখাদ্য, ঘাস এমনকি অস্বাস্থ্যকর পানি পান করতেও বাধ্য হচ্ছেন। এই অবস্থায় কচ্ছপের মতো একটি সংরক্ষিত প্রজাতি গাজাবাসীর প্রোটিনের শেষ আশ্রয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। জীবনধারণের জন্য মানুষের এই সংগ্রাম গাজার প্রতিটি কোণে ছড়িয়ে পড়ছে।