
প্রিন্ট: ২৫ জুন ২০২৫, ১২:৫০ এএম
দেশের স্বার্থে মোদিকে ড. ইউনূসের সঙ্গে চুক্তির পরামর্শ মমতার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১২:২৭ এএম

ছবি : সংগৃহীত
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে অনুরোধ করেছেন, দেশের মঙ্গলার্থে প্রয়োজনে বাংলাদেশের নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে গোপনে বৈঠক ও চুক্তি করুন।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের ভেতরের পরিস্থিতি আপনি জানেন না। পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের সীমান্ত রয়েছে। তাই দেশের কল্যাণে যদি প্রয়োজন হয়, ইউনূস সাহেবের সঙ্গে চুপিচুপি মিটিং করে চুক্তি করুন, আমরা খুশি হব।”
বুধবার (১৬ এপ্রিল) কলকাতার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে আয়োজিত এক সম্মেলনে এসব কথা বলেন মমতা। সেখানে লোকসভায় পাশ হওয়া বিতর্কিত ওয়াকফ সংশোধনী আইন বাতিলের দাবিতে সমবেত হয়েছিলেন ইমাম ও মুয়াজ্জিনরা।
ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার ও এবিপি আনন্দ জানায়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওয়াকফ আইন ঘিরে পশ্চিমবঙ্গে সাম্প্রতিক সহিংসতাকে ‘পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র’ হিসেবে আখ্যা দেন। তিনি অভিযোগ করেন, ভুয়া খবর ছড়ানো, প্রযুক্তি অপব্যবহার এবং বিএসএফ-এর (ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী) ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এসবের দায় তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ওপর দেন।
মমতা প্রধানমন্ত্রী মোদিকে লক্ষ্য করে বলেন, “আপনি আমার অধিকার কেড়ে নিচ্ছেন, রাম-রহিম সবার অধিকার কেড়ে নিচ্ছেন। এটা কি আপনার অধিকারভুক্ত কাজ? না। আপনারা পরিকল্পনা করেছেন কি? কোনো সংস্থার মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে লোক এনে দাঙ্গা বাঁধানো?”
তিনি আরও বলেন, “আমি এএনআইয়ের একটা টুইট দেখেছি, যেখানে বলা হচ্ছে বাংলাদেশের ‘হাত’ রয়েছে এ ঘটনায়। যদি সত্যিই থাকে, তাহলে এর দায় তো কেন্দ্রীয় সরকারের। সীমান্ত তো আপনারাই নিয়ন্ত্রণ করেন। বিএসএফের আওতায় পড়ে এই নিরাপত্তা। তাহলে কিভাবে সীমান্ত অতিক্রম হলো? আপনাদের জবাবদিহি করতে হবে। ধর্মের নামে হিন্দু-মুসলিম বিভাজনের চেষ্টা চলছে।”
মমতা আরও দাবি করেন, ওয়াকফ সংশোধনী আইন ভারতের সংবিধান লঙ্ঘন করছে। তিনি বলেন, “ধারা ১৮ ও ৩৫ অনুযায়ী সম্পত্তির উপর রাজ্যের অধিকার রয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার সেই অধিকার কেড়ে নিয়েছে। এটি ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী।”
তিনি দাবি করেন, তৃণমূল কংগ্রেস সহিংসতা করলে নিজ দলের এমএলএদের বাড়ি ও পার্টি অফিসে হামলা হতো না। এই সহিংসতা মূলত বিরোধীদের উসকানির ফসল। “যেখানে সহিংসতা ঘটেছে, তা তৃণমূলের আসন নয়, বরং কংগ্রেসের মালদহ আসন। এ থেকে প্রমাণ হয়, প্ররোচনার পেছনে অন্য দল রয়েছে,” বলেন মমতা।
ওয়াকফ সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গের নানা প্রান্তে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ এবং প্রাণহানির মতো ঘটনার পর কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নামানো হয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী।