
প্রিন্ট: ২৪ জুন ২০২৫, ০৪:২৫ এএম
ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ এর উপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার সুপারিশ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২৭ মার্চ ২০২৫, ০১:০৭ এএম

ছবি : সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকারের স্বাধীন সংস্থা ইউএস কমিশন অন ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম (ইউএসসিআইআরএফ) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ভারতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ক্রমাগত নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। মঙ্গলবার প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং (র)-এর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের সুপারিশ করা হয়েছে, বিশেষ করে শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের হত্যাচেষ্টায় জড়িত থাকার অভিযোগে।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, ভিয়েতনাম ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ বাড়িয়েছে এবং দেশটিকে "বিশেষ উদ্বেগের দেশ" হিসেবে তালিকাভুক্ত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র চীনের বিরুদ্ধে ভারসাম্য তৈরি করতে ভিয়েতনামের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে চাইছে, যা ভারতের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। ফলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও নয়াদিল্লিকে যুক্তরাষ্ট্র কৌশলগত কারণে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে।
২০২৩ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডা অভিযোগ করে আসছে যে ভারত তাদের দেশে অবস্থানরত শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের টার্গেট করছে। এমন অভিযোগের জেরে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের সম্পর্কে টানাপোড়েন তৈরি হয়েছে। সম্প্রতি, র-এর সাবেক কর্মকর্তা বিকাশ যাদবের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী এক নেতাকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনেছে মার্কিন প্রশাসন। তবে ভারত সরকার বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে এবং শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচনা করছে।
ইউএসসিআইআরএফ-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ভারতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ এবং বৈষম্যের মাত্রা বেড়েছে, যা দেশটির ধর্মীয় স্বাধীনতার পরিস্থিতিকে আরও অবনতির দিকে ঠেলে দিয়েছে। এতে বলা হয়, নির্বাচনী প্রচারের সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তার দল বিজেপি মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য এবং বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করেছে। এমনকি, গত বছরের এপ্রিল মাসে মোদি দাবি করেন, মুসলমানরা "অনুপ্রবেশকারী" এবং তাদের উচ্চ জন্মহার দেশের জন্য হুমকি।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মানবাধিকার ও ধর্মীয় স্বাধীনতা সংক্রান্ত প্রতিবেদনে ভারতীয় সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়নের কথা বারবার উল্লেখ করা হলেও নয়াদিল্লি এসব রিপোর্টকে "পক্ষপাতদুষ্ট" বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।
নরেন্দ্র মোদি ২০১৪ সাল থেকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতি বৈষম্যের অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেছেন যে, তার সরকারের বিদ্যুৎ ও ভর্তুকিসহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প সব সম্প্রদায়ের জন্যই সমানভাবে প্রযোজ্য।
ইউএসসিআইআরএফ সুপারিশ করেছে যে, ভারতকে "বিশেষ উদ্বেগের দেশ" হিসেবে চিহ্নিত করা উচিত এবং র-এর পাশাপাশি বিকাশ যাদবের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা উচিত। তবে এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত ভারতীয় দূতাবাসের পক্ষ থেকে কোনো তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
সূত্র: রয়টার্স