চিকিৎসকের ছদ্মবেশে পশ্চিমতীর গিয়ে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল

পশ্চিমতীরে ফিলিস্তিনি শরণার্থী শিবিরে চিকিৎসকের ছদ্মবেশে প্রবেশ করে নিরীহ বাসিন্দাদের ওপর নৃশংস হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি সৈন্যরা। এই ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজ সম্প্রতি সামাজিকমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

ভিডিওতে দেখা গেছে, দুই সপ্তাহ আগে উত্তর পশ্চিমতীরের বালাতা ক্যাম্পে একটি অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে প্যারামেডিকের ছদ্মবেশে প্রবেশ করে ইসরায়েলি বাহিনী। এরপর শিবিরে অবস্থানরত শরণার্থীদের ওপর বর্বর হামলা চালায় তারা।

গত ১৯ ডিসেম্বর নাবলুস শহরের পূর্বে অবস্থিত বালাতা ক্যাম্পে ওই হামলার ফলে নারীসহ দুই ফিলিস্তিনি নিহত এবং চারজন আহত হয়েছেন। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ৮০ বছর বয়সী হালিমেহ সালেহ আওয়াইল নামের একজন বৃদ্ধা বুকে এবং পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। ২৫ বছর বয়সী কাসি হামিদ সরৌজি নামের একজন যুবকও মাথায় গুরুতর আঘাতের কারণে মারা গেছেন।

ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (পিআরসিএস) জানিয়েছে, ৬৫ বছর বয়সী একজন ব্যক্তি এবং আরও দুই যুবকও ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে আহত হয়েছেন। সন্ত্রাসী হামলায় ইসরায়েলি সৈন্যরা নিজেদের অ্যাম্বুলেন্সে করে আসলেও ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি করার পর ঘটনাস্থলে আসা ফিলিস্তিনি অ্যাম্বুলেন্স ও উদ্ধারকর্মীদের প্রবেশে বাধা দেয়।

পিআরসিএস জানিয়েছে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর ছোড়া বুলেট থেকে মুখে আঘাত পেয়েছেন আরও এক যুবক। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের নজিরবিহীন হামলার পর থেকে গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল।

ইসরায়েলের নির্বিচার হামলা থেকে বাদ যায়নি ২৩ লাখ বাসিন্দার এই উপত্যকার মসজিদ, বিদ্যালয়, হাসপাতাল, আবাসিক ভবন এবং শরণার্থী শিবির।

ইসরায়েলি আগ্রাসনে ২০ লাখের বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। ইসরায়েলি নির্বিচার হামলা গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে।

জাতিসংঘের তথ্য মতে, ইসরায়েলের আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও ওষুধের তীব্র সংকটে গাজাবাসী চরম মানবেতর জীবনযাপন করছে।

ইসরায়েলের নিরলস হামলায় এখন পর্যন্ত ৪৫ হাজার ৮০৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন এক লাখ নয় হাজার ৬৪ জন।

গাজায় ক্রমবর্ধমান মৃতের সংখ্যা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা উপেক্ষা করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন অফিস ছাড়ার মাত্র দুই সপ্তাহ আগে ইসরায়েলের কাছে আট বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির প্রস্তাব করেছেন।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ নিশ্চিত করেছেন, গাজায় জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার জন্য কাতারে হামাসের সঙ্গে পরোক্ষ আলোচনা শুরু হয়েছে।