Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

ব্রিটিশ দুর্নীতিবিরোধী পদ থেকে টিউলিপকে কি অপসারণ করা হয়েছে?

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০১:১৮ এএম

ব্রিটিশ দুর্নীতিবিরোধী পদ থেকে টিউলিপকে কি অপসারণ করা হয়েছে?

যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক

সম্প্রতি ব্রিটিশ দুর্নীতিবিরোধী পদ থেকে যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির মন্ত্রী ও বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিককে অপসারণ করা হয়েছে শীর্ষক দাবি কতিপয় গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

বেশ কিছু ফেসবুক পোস্টে দাবি করা হচ্ছে, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিককে ব্রিটিশ দুর্নীতিবিরোধী কার্যালয়ের পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে। দাবিটি প্রচারিত হয়েছে কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম ও গ্রাফিক কার্ডেও। কিন্তু যাচাইয়ে দেখা গেছে দাবিটি সঠিক নয়। ব্রিটিশ গণমাধ্যমের প্রতিবেদন বলছে বিরোধী দলের এমপিরা লেবার পার্টির এই এমপিকে অপসারণের দাবি তুলেছেন। তবে এখন পর্যন্ত টিউলিপকে অপসারণের কোনো খবর গণমাধ্যমে আসেনি।

এ বিষয়ে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা গেছে, টিউলিপ সিদ্দিককে ব্রিটিশ দুর্নীতিবিরোধী পদ থেকে অপসারণ করা হয়নি বরং, কনজারভেটিভ পার্টির স্বরাষ্ট্র বিষয়ক মুখপাত্র ম্যাট ভিকার্স কর্তৃক টিউলিপকে দুর্নীতিবিরোধী কার্যালয়ের দায়িত্ব থেকে অপসরণের জোর দাবি জানানোর খবরকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবি সম্বলিত গণমাধ্যমের প্রতিবেদনগুলো যাচাই করে দেখা যায়, এ সংক্রান্ত সংবাদগুলোর শিরোনাম এবং ফেসবুকে শেয়ার করা ফটোকার্ডে টিউলিপ সিদ্দিককে ব্রিটিশ দুর্নীতিবিরোধী পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে বলে দাবি করা হলেও এসব সংবাদের মূল অংশে ভিন্ন তথ্য দেয়া হয়েছে. যেমন: একুশে টিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রবিবার (২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪) লেবার পার্টির অভ্যন্তরীণ আইন পরিস্থিতি বিষয়ক মুখপাত্র ম্যাট ভিকার্স ব্রিটেনের সংবাদমাধ্যম দ্য ডেইলি মেইলকে এ প্রসঙ্গে বলেন, “যেহেতু টিউলিপের ব্যক্তিগত লেনদেন সম্পর্কিত কোনো প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাচ্ছে না, প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারকে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে টিউলিপকে অবিলম্বে সমস্ত নিষেধাজ্ঞা এবং দুর্নীতিবিরোধী নীতিগত সিদ্ধান্ত থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।”

ডেইলি মেইলের বরাতে একই তথ্য দিয়েছে ইনকিলাব এবং প্রবাস টাইম।

তবে বাংলাদেশের অন্যান্য গণমাধ্যমে একই বিষয়ে প্রকাশিত সংবাদগুলোতে শিরোনামের সঙ্গে বিস্তারিত প্রতিবেদনে একই তথ্য পাওয়া যাচ্ছে. প্রতিবেদনগুলোতে ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনের বরাতে বলা হয়েছে, ফাইন্যান্সিয়াল স্যাংকশন ইমপ্লিমেন্টেশনের (আর্থিক নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন কার্যালয়) দায়িত্বে রয়েছেন টিউলিপ সিদ্দিক। ইউক্রেনে হামলার সঙ্গে রোসাটোমের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে এর সঙ্গে যুক্ত ৪৫টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ব্রিটেনের এই সরকারি দপ্তর। এক্ষেত্রে তাকে রোসাটোমের সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ে নিয়মিত পর্যালোচনা করতে হচ্ছে। তবে দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত হওয়ার দায়ে টিউলিপকে দুর্নীতিবিরোধী কার্যালয়ের পদ থেকে অপসারণের জোর দাবি জানিয়েছেন বিরোধী দলীয় হোম অ্যাফেয়ার্সের মুখপাত্র ম্যাট ভিকার্স।

এই তথ্যের সূত্রে ডেইলি মেইলে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনটি খুঁজে বের করে রিউমর স্ক্যানার। গত ২৯ ডিসেম্বর (২০২৪) প্রকাশিত এই প্রতিবেদনেও একই তথ্য দেয়া হয়েছে। তবে প্রতিবেদনের কোনো অংশেই ব্রিটিশ দুর্নীতিবিরোধী পদ থেকে টিউলিপকে অপসারণ করা হয়েছে শীর্ষক কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরবর্তী অনুসন্ধানে অন্যান্য ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমগুলো পর্যবেক্ষণ করেও টিউলিপকে অপসারণ করা বিষয়ক কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি।

একুশে টিভি, ইনকিলাব, প্রবাস টাইমসহ আরো কিছু গণমাধ্যমের সংবাদে দাবি করা হয়েছে যে, ম্যাট ভিকার্স নামে ব্যক্তি এই আহ্বান জানিয়েছেন তিনি লেবার পার্টির অভ্যন্তরীণ আইন পরিস্থিতি বিষয়ক মুখপাত্র। এমন দাবি সম্বলিত সংবাদ প্রকাশ করেছে ঢাকা পোস্ট, দৈনিক করতোয়া, আমাদের সময়, দেশ টিভি, চ্যানেল আই, জুম বাংলা।

তবে রিউমর স্ক্যানার যাচাই করে দেখেছে, ম্যাট ভিকার্স লেবার পার্টির নেতা নন। তিনি কনজারভেটিভ পার্টির স্বরাষ্ট্র বিষয়ক মুখপাত্র। তার ওয়েবসাইট সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।

সুতরাং ব্রিটিশ দুর্নীতিবিরোধী পদ থেকে টিউলিপ সিদ্দিককে অপসারণের আহ্বান জানানোর ঘটনাকে টিউলিপকে অপসারণ করা হয়েছে শীর্ষক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

Swapno

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
Email: [email protected]

অনুসরণ করুন