Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

বিশ্বজুড়ে সংঘাতে রেকর্ড মুনাফা: ২০২৪ সালে অস্ত্রশিল্পের আয় ৬৭৮ বিলিয়ন ডলার

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:২৭ এএম

বিশ্বজুড়ে সংঘাতে রেকর্ড মুনাফা: ২০২৪ সালে অস্ত্রশিল্পের আয় ৬৭৮ বিলিয়ন ডলার

বহু অঞ্চলে যুদ্ধ ও উত্তেজনার বিস্তার বৈশ্বিক অস্ত্রশিল্পকে ইতিহাসের অন্যতম সর্বোচ্চ মুনাফায় পৌঁছে দিয়েছে। স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এসআইপিআরআই)-এর সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের শীর্ষ ১০০ অস্ত্র ও সামরিক সেবা কোম্পানি ২০২৪ সালে মোট ৬৭৮ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে—২০২৩ সালের তুলনায় ৫.৯ শতাংশ বেশি। আল-জাজিরা প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।

এসআইপিআরআই জানায়, গাজা যুদ্ধ, ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন এবং বিভিন্ন প্রান্তে ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা সামরিক ব্যয়কে ত্বরান্বিত করেছে। এর ফলেই পশ্চিমা কোম্পানিগুলো বিশেষভাবে লাভবান হয়েছে, পাশাপাশি এশিয়া–ওশেনিয়া অঞ্চলের বেশ কয়েকটি কোম্পানির রাজস্বও বৃদ্ধি পেয়েছে।

লকহিড মার্টিন, নরথ্রপ গ্রুম্যান ও জেনারেল ডায়নামিক্স যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব অর্জনকারী কোম্পানি। শীর্ষ ১০০ তালিকায় থাকা ৩৯টি মার্কিন কোম্পানির সম্মিলিত আয় ৩৩৪ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ৩.৮ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে ৩০টি কোম্পানিরই আয় বেড়েছে। যদিও এফ-৩৫, কলাম্বিয়া-ক্লাস সাবমেরিন ও সেন্টিনেল আইসিবিএম–এর মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে ব্যয়বৃদ্ধি ও বিলম্বের কথাও উল্লেখ করেছে এসআইপিআরআই।

প্রথমবারের মতো স্পেসএক্স তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে—২০২৩ সালের তুলনায় অস্ত্রসম্পর্কিত রাজস্ব দ্বিগুণের বেশি বেড়ে ১.৮ বিলিয়ন ডলার হওয়ায়।

ইউরোপেও অস্ত্র বিক্রি লাফিয়ে বেড়েছে। রাশিয়াকে বাদ দিয়ে মহাদেশটির ২৬টি প্রতিষ্ঠান তালিকায় রয়েছে, যার ২৩টি আয় বাড়িয়েছে। সম্মিলিতভাবে তাদের অস্ত্ররাজস্ব ১৩ শতাংশ বেড়ে পৌঁছেছে ১৫১ বিলিয়ন ডলারে। ইউক্রেনের জন্য গোলাবারুদ উৎপাদনে রেকর্ড বৃদ্ধির ফলে চেকোস্লোভাক গ্রুপ ১৯৩ শতাংশ রাজস্ব বৃদ্ধি করে শীর্ষ শতাংশ বৃদ্ধির রেকর্ড গড়েছে।

পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও দুটি রুশ কোম্পানি—রোস্টেক এবং ইউনাইটেড শিপবিল্ডিং করপোরেশন—২৩ শতাংশ রাজস্ব বৃদ্ধি করে ৩১.২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।

এশিয়া–ওশেনিয়া অঞ্চলে মোট রাজস্ব ১৩০ বিলিয়ন ডলার। যদিও সেখানে সামগ্রিক প্রবৃদ্ধি কমেছে ১.২ শতাংশ, মূলত চীনের আটটি কোম্পানির সম্মিলিত ১০ শতাংশ রাজস্বহ্রাসের কারণে। নোরিনকোর রাজস্ব কমেছে ৩১ শতাংশ।

অন্যদিকে তাইওয়ান ও উত্তর কোরিয়া নিয়ে উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার কোম্পানিগুলোর বিক্রি বেড়েছে যথাক্রমে ৪০ ও ৩১ শতাংশ। দক্ষিণ কোরিয়ার হানহা গ্রুপ একাই ৪২ শতাংশ রাজস্ব বাড়িয়েছে।

প্রথমবারের মতো মধ্যপ্রাচ্যের ৯টি কোম্পানি শীর্ষ ১০০ তালিকায় উঠেছে। তাদের সম্মিলিত রাজস্ব ৩১ বিলিয়ন ডলার—১৪ শতাংশ বেশি। সুদানের যুদ্ধকে অস্ত্র জোগানোর অভিযোগ থাকলেও আমিরাতভিত্তিক এজ গ্রুপের তথ্য পুরোপুরি অন্তর্ভুক্ত হয়নি।

গাজায় ধ্বংসযজ্ঞের মধ্যেও ইসরায়েলের তিন প্রতিষ্ঠান—এলবিট সিস্টেমস, ইসরায়েল অ্যারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজ এবং রাফায়েল—১৬ শতাংশ রাজস্ব বৃদ্ধির মাধ্যমে মোট ১৬.২ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে। আন্তর্জাতিকভাবে ইসরায়েলি ড্রোন ও অ্যান্টি-ড্রোন প্রযুক্তির চাহিদা আরও বেড়েছে বলে জানিয়েছে এসআইপিআরআই।

তুরস্কের রেকর্ড পাঁচ কোম্পানি তালিকায় রয়েছে, যাদের সম্মিলিত আয় ১০.১ বিলিয়ন ডলার—১১ শতাংশ বেশি। ড্রোন নির্মাতা বায়কারের রাজস্বের ৯৫ শতাংশই এসেছে রপ্তানি থেকে।

প্রতিবেদনটিতে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, ভারত, তাইওয়ান, নরওয়ে, কানাডা, স্পেন, পোল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়ার সামরিক কোম্পানিগুলোর অবস্থানও উল্লেখ করা হয়েছে।

এসআইপিআরআই সতর্ক করেছে—অস্ত্র উৎপাদন বাড়লেও কাঁচামালের সংকট, বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ খনিজের ওপর নির্ভরশীলতা ভবিষ্যতে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে।

Swapno

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher

Major(Rtd)Humayan Kabir Ripon

Managing Editor

Email: [email protected]

অনুসরণ করুন