পোকরোভস্কে রুশ হামলা তীব্র, কঠিন পরিস্থিতিতে ইউক্রেনীয় সেনারা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০২ নভেম্বর ২০২৫, ১২:৫৫ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ শহর পোকরোভস্কে রুশ বাহিনী বড় ধরনের আক্রমণ চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির শীর্ষ সামরিক কমান্ডার জেনারেল ওলেক্সান্দর সিরস্কি। তিনি জানান, হাজার হাজার রুশ সেনার উপস্থিতিতে ইউক্রেনীয় বাহিনী সেখানে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি এবং অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছে।
পোকরোভস্ক শহরটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবহণ ও সরবরাহ কেন্দ্র, যা বর্তমানে ‘গ্রে জোন’ হিসেবে বিবেচিত—অর্থাৎ কোনো পক্ষের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেই। শহরটি দখল করতে পারলে রাশিয়া দোনেৎস্ক অঞ্চলে উল্লেখযোগ্য কৌশলগত সুবিধা পাবে।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, তারা পোকরোভস্কের উত্তর-পশ্চিমে ইউক্রেনীয় বিশেষ বাহিনীর হেলিকপ্টার অবতরণ ব্যর্থ করেছে এবং ১১ সেনাকে হত্যা করেছে। তবে কিয়েভ এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে।
জেনারেল সিরস্কি জানিয়েছেন, তিনি পূর্বাঞ্চলের দোনেৎস্ক অঞ্চলে ফ্রন্টলাইনে ফিরে গিয়ে সরাসরি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। রুশ বাহিনী সরবরাহ লাইনে হামলা চালাচ্ছে, যার প্রতিরোধে বিশেষ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
এক ভিডিওতে দেখা যায়, সিরস্কি ইউক্রেনীয় গোয়েন্দা প্রধান কিরিলো বুদানভসহ অন্যান্য কমান্ডারদের সঙ্গে যুদ্ধক্ষেত্রের মানচিত্র পর্যালোচনা করছেন। যদিও ভিডিওটির স্থান ও সময় নিশ্চিত করা যায়নি।
ইউক্রেনের ৭ম র্যাপিড রেসপন্স কর্পস জানিয়েছে, পোকরোভস্কে তাদের কৌশলগত অবস্থান কিছুটা উন্নত হয়েছে, তবে পরিস্থিতি এখনো জটিল ও পরিবর্তনশীল। প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি শহরটির প্রতিরক্ষাকে ‘অগ্রাধিকারমূলক’ বলে ঘোষণা করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ার (ISW) জানিয়েছে, ইউক্রেনীয় বাহিনী শহরের উত্তরে সামান্য অগ্রগতি করেছে, তবে পোকরোভস্ক এখনো বিতর্কিত ‘ধূসর এলাকা’ হিসেবেই রয়ে গেছে।
রাশিয়া চাইছে দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলকে শান্তিচুক্তির অংশ হিসেবে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনতে, এমনকি যেসব এলাকা এখনো তাদের দখলে নেই সেগুলোও।
কিয়েভের ধারণা, পোকরোভস্ক দখলের মাধ্যমে রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রকে বোঝাতে চায় যে তাদের অভিযান সফল, যাতে পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার দাবিকে সমর্থন করে।
এদিকে শান্তি আলোচনায় অগ্রগতি না হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ক্ষুব্ধ। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার দুটি বড় তেল কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন এবং পুতিনের সঙ্গে নির্ধারিত বৈঠক বাতিল করেছেন।
জেলেনস্কি ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সম্মতি দিলেও পুতিন তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি এখনো এমন দাবিতে অনড়, যা কিয়েভ ও তার পশ্চিমা মিত্রদের কাছে আত্মসমর্পণের শামিল বলে মনে হচ্ছে।



