ট্রাম্পবিরোধী ‘নো কিংস’ আন্দোলনে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে লাখো মানুষের বিক্ষোভ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ১১:১৯ এএম
যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতি ও কর্তৃত্ববাদী শাসনের অভিযোগে ব্যাপক বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ‘নো কিংস’ নামের এই আন্দোলনে নিউইয়র্ক থেকে লস অ্যাঞ্জেলেস পর্যন্ত লাখো মানুষ রাস্তায় নেমে আসেন। সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে দেশটিতে এটিই সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক প্রতিবাদ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
রোববার (১৯ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক, ওয়াশিংটন ডিসি, শিকাগো, মায়ামি ও লস অ্যাঞ্জেলেসসহ বিভিন্ন শহরে ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেন লাখো মানুষ। স্থানীয় সময় শনিবার সকাল থেকেই শুরু হওয়া ‘নো কিংস’ আন্দোলন দ্রুতই বিশাল জনসমুদ্রে রূপ নেয়।
নিউইয়র্কের বিখ্যাত টাইমস স্কোয়ারে সকাল থেকেই হাজারো মানুষের সমাগম ঘটে। রাস্তাঘাট ও সাবওয়ে স্টেশনগুলোও ছিল উপচে পড়া ভিড়ে পরিপূর্ণ। অনেকেই হাতে প্ল্যাকার্ড ধরে রেখেছিলেন—যার মধ্যে ছিল ‘গণতন্ত্র, রাজতন্ত্র নয়’ ও ‘সংবিধান কোনো ঐচ্ছিক বিষয় নয়’—এমন স্লোগান।
বিক্ষোভ শুরুর আগে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মহল অভিযোগ তোলে যে, এ আন্দোলনে বামপন্থি সংগঠন ‘অ্যান্টিফা’ যুক্ত এবং এটি আসলে হেইট আমেরিকা র্যালি। তবে আয়োজক ও অংশগ্রহণকারীরা জানান, তাদের কর্মসূচি ছিল সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ। তাদের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ‘নো কিংস’ আন্দোলনের মূল নীতি হলো অহিংসা ও সংঘাত এড়িয়ে গণতন্ত্র রক্ষায় জনগণের অবস্থান স্পষ্ট করা।
নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্ট (এনওয়াইপিডি) জানিয়েছে, শহরে এক লাখেরও বেশি মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন এবং কাউকেই গ্রেপ্তার করা হয়নি। টাইমস স্কোয়ারের এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, অন্তত ২০ হাজার মানুষ সেভেন্থ অ্যাভিনিউতে মিছিল করেছে।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া লেখক ও সম্পাদক বেথ জাসলফ বলেন, ট্রাম্প প্রশাসনের স্বৈরাচারী প্রবণতা আমাকে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন করেছে। আমি নিউইয়র্ককে ভালোবাসি, আর আজ এত মানুষের সঙ্গে একত্রে দাঁড়াতে পারা অনুপ্রেরণার।
বিবিসি আরও জানায়, ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে ফেরার পর থেকেই নির্বাহী ক্ষমতা ব্যবহার করে একাধিক বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। তিনি কংগ্রেস অনুমোদিত তহবিল আটকে দিয়েছেন, ফেডারেল প্রশাসনের বিভিন্ন বিভাগ ভেঙে দিয়েছেন, বিদেশি পণ্যে ব্যাপক শুল্ক আরোপ করেছেন এবং গভর্নরদের আপত্তি সত্ত্বেও কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করেছেন।
ট্রাম্প দাবি করেছেন, এসব পদক্ষেপ দেশের পুনর্গঠনের জন্য অপরিহার্য। তবে সমালোচকদের মতে, তার এই পদক্ষেপগুলো সংবিধানবিরোধী এবং যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের জন্য সরাসরি হুমকি সৃষ্টি করছে।



