গাজায় ইসরায়েলি হামলায় একই পরিবারের ১১ জন নিহত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ১০:৫৭ এএম
অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় একই পরিবারের ১১ সদস্য নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে সাত শিশু ও তিনজন নারী রয়েছেন। যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার মাত্র আট দিন পরই এ হামলায় ভয়াবহভাবে লঙ্ঘন হলো চুক্তি।
রোববার (১৯ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।
গাজার সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষ জানায়, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় গাজা সিটির জায়তুন এলাকায় আবু শাহবান পরিবারের একটি বেসামরিক গাড়িতে ইসরায়েলি ট্যাংক থেকে গোলা নিক্ষেপ করা হয়। ওই পরিবারটি গাড়ি করে নিজেদের বাড়ির অবস্থা দেখতে যাচ্ছিল।
সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল জানান, নিহতদের মধ্যে সাত শিশু ও তিনজন নারী আছেন। তিনি বলেন, তাদের সতর্ক করা যেত বা অন্যভাবে ব্যবস্থা নেওয়া যেত। কিন্তু যা ঘটেছে, তা প্রমাণ করে দখলদার বাহিনী এখনো রক্তপিপাসু এবং নিরীহ বেসামরিকদের বিরুদ্ধে অপরাধ চালিয়ে যাচ্ছে।
সংস্থাটি এক পৃথক বিবৃতিতে জানিয়েছে, জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক কার্যালয়ের (ওসিএইচএ) সহায়তায় তারা এখন পর্যন্ত নয়জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে। তবে দুটি শিশুর মরদেহ এখনো নিখোঁজ, কারণ বিস্ফোরণের তীব্রতায় তাদের দেহাবশেষ ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে।
হামাস এই ঘটনাকে গণহত্যা বলে আখ্যা দিয়েছে। সংগঠনটি দাবি করেছে, কোনো ধরনের সামরিক কারণ ছাড়াই ওই পরিবারের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, যেন ইসরায়েলকে যুদ্ধবিরতি মেনে চলতে বাধ্য করা হয়।
এদিকে চলমান বন্দি বিনিময় চুক্তির মধ্যেই ইসরায়েল অন্তত ৩৮ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছে গাজার মিডিয়া অফিস। এছাড়া খাদ্য ও চিকিৎসাসহ জরুরি সহায়তা প্রবাহও কঠোরভাবে সীমিত রাখা হয়েছে।
জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, গাজায় ত্রাণ কনভয়গুলো দুর্ভিক্ষকবলিত এলাকায় পৌঁছাতে মারাত্মকভাবে বাধার মুখে পড়ছে। বর্তমানে গাজার প্রায় ৪৯ শতাংশ মানুষ দৈনিক ছয় লিটারেরও কম পানযোগ্য পানি পাচ্ছেন—যা ন্যূনতম মানবিক মানের চেয়ে অনেক কম।
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি শুরুর পর থেকে তারা গড়ে প্রতিদিন ৫৬০ টন খাদ্য গাজায় পাঠাতে পেরেছে, যা ভয়াবহ অপুষ্টি ও দুর্ভিক্ষ রোধে প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।



