গাজায় ইসরায়েলি হামলা আরও তীব্র, শহর ছাড়তে হুঁশিয়ারি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৩ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৫৬ এএম
ছবি : সংগৃহীত
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলা আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোর থেকে একদিনে অন্তত ৫৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। একইসঙ্গে গাজা সিটিতে অবস্থানরত লাখো মানুষকে শহর ছাড়ার ‘শেষ সুযোগ’ দিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইসরায়েল। তাদের দাবি, যারা শহরে থেকে যাবে, তাদের “সন্ত্রাসী বা সন্ত্রাসীদের সমর্থক” হিসেবে বিবেচনা করা হবে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল ক্যাটজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছেন, গাজা সিটিতে অবস্থানরত সবাইকে সন্ত্রাসী হিসেবে গণ্য করা হবে। আল জাজিরা জানিয়েছে, বিমান ও স্থল হামলায় গাজা সিটি কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ নিহত হচ্ছেন, ধ্বংস হচ্ছে আবাসিক ভবন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। হাজারো মানুষ দক্ষিণে পালিয়ে যাচ্ছেন, কিন্তু পালানোর পথেও হামলার শিকার হচ্ছেন তারা।
আল জাজিরার সাংবাদিক হানি মাহমুদ জানিয়েছেন, ইসরায়েলি সেনারা আল-রাশিদ সড়ক দিয়ে মানুষকে শহর ছাড়তে বাধ্য করছে, আবার উপকূল ধরে দক্ষিণমুখী পথেও হেলিকপ্টার, ড্রোন ও ট্যাংক দিয়ে হামলা চালানো হচ্ছে। এতে গাজা জুড়ে চরম আতঙ্ক ও বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়েছে।
চিকিৎসা সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার গাজা সিটিতে অন্তত ১০ জন এবং দক্ষিণ গাজায় ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে আরও ১৩ জন নিহত হয়েছেন। চলমান দুর্ভিক্ষে খাদ্য সংগ্রহের সময় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ২,৬০০ জনে, আহত হয়েছেন অন্তত ১৯,০০০ জন।
আল জাজিরার তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজায় মোট প্রাণহানি ৬৬,২২৫ জনে পৌঁছেছে, আহত হয়েছেন ১,৬৮,৯৩৮ জন। মার্চে যুদ্ধবিরতি ভঙ্গের পর থেকে নিহত হয়েছেন ১৩,৩৫৭ জন।
জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ-এর প্রধান ফিলিপ লাজারিনি বলেছেন, গাজা সিটিতে অবস্থানরত মানুষকে সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যা দেওয়া পরিকল্পিত গণহত্যার ইঙ্গিত। এতে নারী, শিশু, বৃদ্ধ ও শারীরিকভাবে অক্ষম ব্যক্তিদের গণহারে হত্যা করা হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।



