রাষ্ট্রীয় বাজেট কাটছাঁটকে কেন্দ্র করে ফ্রান্সজুড়ে বিক্ষোভে নেমেছেন লাখ লাখ মানুষ। ট্রেড ইউনিয়ন ও বামপন্থি দলগুলোর আহ্বানে বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানী প্যারিসসহ বিভিন্ন শহরে রাজপথে নেমে আসেন বিক্ষোভকারীরা।
ট্রেড ইউনিয়নগুলোর দাবি, তাদের কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন অন্তত ১০ লাখ মানুষ। তবে ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীর সংখ্যা সর্বোচ্চ ৫ লাখ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে রাজধানীসহ দেশজুড়ে মোতায়েন করা হয়েছে প্রায় ৮০ হাজার পুলিশ।
প্যারিস, লিওন ও নানতেসে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি ও সংঘর্ষ হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারগ্যাস, লাঠি ও শিল্ড ব্যবহার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ ঘটনায় প্যারিসসহ বিভিন্ন শহর থেকে অন্তত ৩০০ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
বিক্ষোভের প্রভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ফ্রান্সের জনজীবন। রাজধানী প্যারিসে অধিকাংশ মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ, সারা দেশে বহু সড়কে অবরোধ চলছে। বন্ধ রয়েছে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও ফার্মেসি। স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, ওষুধের দোকানের ৯৮ শতাংশই এদিন বন্ধ ছিল।
বিক্ষোভের সূত্রপাত জাতীয় বাজেটে বড় ধরনের কাটছাঁট থেকে। ঋণের চাপে জর্জরিত ফ্রান্স সরকারকে স্বস্তি দিতে সদ্য বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বায়রো কল্যাণমূলকসহ বিভিন্ন খাত থেকে ৪ হাজার ৪০০ কোটি ডলার কমান। এ নিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে আস্থা ভোটে হেরে পদত্যাগ করেন তিনি। নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন সেবাস্টিয়ান লেকর্নিও, তবে এখনও মন্ত্রিসভা গঠন করেননি তিনি। বায়রোর আমলের বাজেট কাটছাঁটও বহাল রেখেছেন নতুন সরকার।
প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর নীতি ও বাজেট সংস্কারের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষও ক্ষুব্ধ। প্যারিসের এক বিক্ষোভকারী সিরিয়েল বিবিসিকে বলেন, আমি চাই কল্যাণ, সংস্কৃতি ও গণপরিষেবা খাতে বরাদ্দ বাড়ানো হোক। ধনীদের ওপর আরও বেশি কর আরোপ করা উচিত।
ট্রেড ইউনিয়ন কনফেডারেশন সিজিটির জ্যেষ্ঠ নেত্রী সোফি বিনেট বলেন, আমাদের আন্দোলন থামবে না, বরং আরও তীব্র হবে। সরকারকে ধনীদের তুষ্ট করার নীতি পরিত্যাগ করতে হবে।
তবে বিদায়ী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রেশিলিও সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, বাজেটে কোনো পরিবর্তন আসবে না। বিক্ষোভকারীরা ঘরে না ফিরলে গ্রেপ্তার বাড়বে। অন্যদিকে বামপন্থি দলগুলোর জোট ফ্রান্স আনবৌওড হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, সরকার কঠোর হলে এর পরিণতি হবে ভয়াবহ।
সূত্র : বিবিসি



