নেপালে নতুন রাজনৈতিক সংকট: পার্লামেন্ট পুনর্বহালের দাবি প্রধান দলগুলোর
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৫৫ এএম
দুর্নীতিবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল নেপালে দেখা দিয়েছে নতুন রাজনৈতিক সংকট। সহিংস বিক্ষোভ-অরাজকতার মধ্যে ভেঙে দেওয়া পার্লামেন্ট পুনর্বহালের দাবি তুলেছে দেশটির প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো। প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পাউডেলের সিদ্ধান্তকে তারা অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়েছেন। শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাতে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।
সম্প্রতি দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনের চাপের মুখে নবনিযুক্ত অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী ও সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কির পরামর্শে পার্লামেন্ট ভেঙে দেন প্রেসিডেন্ট পাউডেল। যদিও এটি ছিল বিক্ষোভকারীদের অন্যতম দাবি, নেপালি কংগ্রেস, সিপিএন-ইউএমএল, মাওবাদী কেন্দ্রসহ আটটি দল এক যৌথ বিবৃতিতে এ পদক্ষেপকে অসাংবিধানিক বলে অভিহিত করেছে। তাদের মতে, সমস্যার সমাধান জনগণের ভোটে নির্বাচিত সংসদের মাধ্যমেই হওয়া উচিত।
গত সপ্তাহে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে (হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুকসহ ২৬টি প্ল্যাটফর্মে) নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে দেশজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ৫০ জন নিহত হন। ক্ষুব্ধ জনতা কাঠমান্ডুর পার্লামেন্ট ভবন ও সরকারি দপ্তরে আগুন ধরিয়ে দিলে বাধ্য হয়ে পদত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি।
এরপরই অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন সুশীলা কার্কি। নেপালের ইতিহাসে তিনিই প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী। দুর্নীতিমুক্ত ভাবমূর্তির অধিকারী হিসেবে কার্কির নেতৃত্বকে বিক্ষোভের অগ্রভাগে থাকা ‘জেন জি আন্দোলন’-এর নেতারাও সমর্থন জানিয়েছে।
প্রেসিডেন্ট পাউডেল শনিবার সব পক্ষকে সংযম দেখানোর আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “সংবিধান, সংসদীয় ব্যবস্থা ও ফেডারেল গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র অটুট আছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে গণতন্ত্র আরও শক্তিশালী হবে।” ইতোমধ্যে আগামী ৫ মার্চ নতুন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে।
নতুন সরকারকে এখন আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা, ভাঙচুর হওয়া পার্লামেন্ট ভবন পুনর্নির্মাণ, তরুণদের আস্থা ফিরিয়ে আনা এবং সহিংসতার দায়ীদের বিচারের মুখোমুখি করার মতো একাধিক কঠিন দায়িত্ব নিতে হবে।
বিবিসির মতে, গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অস্থিরতার পর নেপাল ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরছে। কার্কির শপথ গ্রহণের পর সেনারা কাঠমান্ডুর রাস্তায় টহল শেষ করে ব্যারাকে ফিরে গেছে।



