গাজায় ইসরায়েলি হামলায় একদিনে ৭৩ ফিলিস্তিনি নিহত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:১৭ এএম
ছবি : সংগৃহীত
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলের লাগাতার বোমা হামলায় একদিনেই প্রাণ হারিয়েছেন আরও ৭৩ জন ফিলিস্তিনি, যার মধ্যে ৪৩ জন নিহত হয়েছেন শুধু গাজা সিটিতে। বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়।
হামাস এই পরিস্থিতিকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি অবিলম্বে হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার ইসরায়েলি বাহিনীর তীব্র বোমাবর্ষণে গাজা সিটি ও আশপাশের এলাকায় ব্যাপক প্রাণহানি ঘটে। আশ্রয়কেন্দ্র ও তাঁবুতে থাকা পরিবারগুলোকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি সাবরিন আল-মাবহুহ আল জাজিরাকে বলেন, “আমার ভাইকে তার ঘরেই হত্যা করা হয়েছে। স্ত্রী-সন্তানসহ কেউই বেঁচে নেই।”
গাজার মিডিয়া অফিস জানায়, গত তিন সপ্তাহে গাজা সিটিতে অন্তত ১০০ রোবট বিস্ফোরণের মাধ্যমে আবাসিক এলাকা ধ্বংস করা হয়েছে। ১৩ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া অভিযানে শুধু গাজা সিটিতেই প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ১,১০০ জন ফিলিস্তিনি।
উত্তর গাজা সিটিতে আল-জারিসি পরিবারের বাড়িতে হামলায় ১০ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় হামাস এটিকে ‘ভয়াবহ যুদ্ধাপরাধ’ বলে অভিহিত করেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, অবরোধের কারণে খাদ্য ও সহায়তা প্রবেশে বাধা থাকায় গত ২৪ ঘণ্টায় অপুষ্টি ও অনাহারে আরও ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে একজন শিশু। অবরোধ চলাকালে ক্ষুধাজনিত কারণে মারা গেছেন ৩৬৭ জন, এর মধ্যে ১৩১ জন শিশু।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, গাজা সিটি দখল অভিযান প্রায় ১০ লাখ ফিলিস্তিনিকে বাস্তুচ্যুত করতে পারে। শুধু ১৪ থেকে ৩১ আগস্টের মধ্যে জোরপূর্বক ৮২ হাজার মানুষকে স্থানান্তর করা হয়েছে, যার মধ্যে ৩০ হাজারকে উত্তর থেকে দক্ষিণে সরতে বাধ্য করা হয়েছে।
ইউনিসেফ সতর্ক করেছে, ২০২৬ সালের মাঝামাঝি নাগাদ পাঁচ বছরের নিচের ১ লাখ ৩২ হাজার শিশু তীব্র অপুষ্টিতে মৃত্যুর ঝুঁকিতে পড়বে। বর্তমানে ৩ লাখ ২০ হাজার শিশু ভয়াবহ ক্ষুধার মুখে রয়েছে। সংস্থাটি বলছে, “দুর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়ছে—শিশুদের এখনই জরুরি মানবিক সহায়তা ও পুষ্টি পণ্য প্রয়োজন।”



