ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক ব্যর্থ হলে ভারতের ওপর বাড়বে শুল্ক: হুঁশিয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৫ আগস্ট ২০২৫, ০৩:৩৩ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
ছয় বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা অঙ্গরাজ্যের অ্যাঙ্কোরেজ শহরে শুক্রবার অনুষ্ঠিত হবে এই বহুল প্রতীক্ষিত বৈঠক। বৈঠকে ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ও শান্তিচুক্তি নিয়ে আলোচনা হবে।
তবে এই আলোচনা ব্যর্থ হলে ভারতের ওপর আরও শুল্ক আরোপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট। বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
বেসেন্ট বলেন, রুশ তেল কেনার কারণে ভারতের ওপর ইতোমধ্যে সেকেন্ডারি শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। আলোচনার ফল ভালো না হলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে শুল্ক আরও বাড়তে পারে। এর আগে চলতি মাসের শুরুতে ট্রাম্প ভারতের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন, যা বিদ্যমান ২৫ শতাংশের সঙ্গে যুক্ত হয়ে মোট ৫০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
বিবিসি জানায়, ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর ভারত রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল আমদানি ব্যাপকভাবে বাড়িয়েছে। ২০২১ সালে যেখানে রুশ তেলের অংশ ছিল মাত্র ৩ শতাংশ, ২০২৪ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশে। এই পরিস্থিতি দিল্লি-ওয়াশিংটনের সম্পর্ককে টানাপোড়েনে ফেলেছে এবং চলমান বাণিজ্য আলোচনাও বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
বেসেন্ট ইউরোপীয় দেশগুলোকেও যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা ও সেকেন্ডারি শুল্কে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ইউরোপীয়রা বাইরে থেকে পরামর্শ দিচ্ছে, কিন্তু তাদের উচিত নিষেধাজ্ঞায় সক্রিয়ভাবে যুক্ত হওয়া।
ট্রাম্পের দাবি, তার শুল্কনীতি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি চাঙা করা এবং বৈশ্বিক বাণিজ্যে ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠার অংশ। তিনি বহুবার ভারতকে “শুল্ক অপব্যবহারকারী” বলে অভিহিত করেছেন এবং দুই দেশের ৪৫ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
আগামী ২৫ আগস্ট দিল্লিতে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে নতুন করে বাণিজ্য আলোচনা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। তবে কৃষি ও দুগ্ধপণ্যের ওপর শুল্ক কমাতে ভারতের অনীহা আলোচনায় বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
ট্রাম্প ঘোষিত নতুন ৫০ শতাংশ শুল্ক আগামী ২৭ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই শুল্কভার কার্যত নিষেধাজ্ঞার সমান এবং ভারতের রপ্তানিমুখী শিল্প, বিশেষ করে টেক্সটাইল ও গয়না খাতে বড় ধাক্কা দিতে পারে। এতে ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্ধ শতাংশ পর্যন্ত কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।



