ভোটার তালিকা জালিয়াতির অভিযোগে দিল্লিতে বিক্ষোভ, রাহুল গান্ধী ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধী আটক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১১ আগস্ট ২০২৫, ০৩:২৬ পিএম
ছবি : রাহুল গান্ধী ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধী আটক
ভারতের রাজধানী দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ভোটার তালিকা জালিয়াতির অভিযোগে আয়োজিত বিক্ষোভে অংশ নিয়ে আটক হয়েছেন বিরোধীদলীয় নেতা ও কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি রাহুল গান্ধী এবং তার বোন, লোকসভার সদস্য প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভদ্রা। সোমবার (১১ আগস্ট) সকালে সংসদ ভবনের বাইরে থেকে মধ্য দিল্লির রাস্তায় ছড়িয়ে পড়া আন্দোলন থেকে তাদের আটক করে পুলিশ।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ‘ইন্ডিয়া’ জোটের কর্মসূচির অংশ হিসেবে নির্বাচন কমিশনের দপ্তরের দিকে মিছিলের পরিকল্পনা ছিল বিরোধীদের। তবে পুলিশ আগেই সংসদ ভবনের চারপাশে ব্যারিকেড বসিয়ে নিরাপত্তা জোরদার করে। আন্দোলনকারীদের ঘেরাও করে রাখার পর সংসদের উভয় কক্ষ দুপুর ২টা পর্যন্ত মুলতবি করা হয়।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া নেতাদের মধ্যে ছিলেন শিবসেনা (উদ্ধব ঠাকরে গোষ্ঠী) নেতা সঞ্জয় রাউতসহ একাধিক সংসদ সদস্য। প্রতিবাদস্থলের ফুটেজে দেখা যায়, সংসদ ভবনের বাইরে বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী প্ল্যাকার্ড হাতে স্লোগান দিচ্ছেন, পুলিশের ব্যারিকেডে ধাক্কা দিচ্ছেন এবং কেউ কেউ তা টপকানোর চেষ্টা করছেন। এসময় তৃণমূল সংসদ সদস্য মিতালি বাগ অজ্ঞান হয়ে পড়লে রাহুল গান্ধী তাকে সহায়তা করেন।
বিরোধীরা অভিযোগ করেছে, বিজেপি ও নির্বাচন কমিশনের আঁতাতে ভোটার তালিকা বদলে নির্বাচনে কারচুপির চেষ্টা চলছে। মহারাষ্ট্র ও কর্নাটকের নির্বাচনে অস্বাভাবিক হারে নতুন ভোটার যুক্ত হওয়ার অভিযোগ তুলে তারা বলছে, এসব পরিবর্তন বিজেপির জয় নিশ্চিত করতে পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে।
গত সপ্তাহে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের বৈঠকে রাহুল গান্ধী তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করে বলেন, দেশে ব্যাপক ভোটার জালিয়াতি হচ্ছে। তিনি নির্বাচন কমিশনের কাছে ভোটার তালিকার খসড়া অনলাইনে সার্চযোগ্য আকারে প্রকাশের দাবি জানান, যাতে ভুলত্রুটি যাচাই করা যায়।
বিহারের ভোটার তালিকা নিয়ে কমিশনের ঘোষিত ‘বিশেষ নিবিড় সংশোধনী’ প্রক্রিয়াও বিরোধীদের ক্ষোভ বাড়িয়েছে। সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করা এই প্রক্রিয়া নিয়ে আবেদনকারীরা বলছেন, এটি বেআইনি এবং কমিশনের এখতিয়ার বহির্ভূত। সময়সীমা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে, কারণ এতে বাদ পড়া ভোটারদের আপিলের সুযোগ সীমিত হতে পারে।
এছাড়া ভোটার যাচাইয়ে আধার বা নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব পরিচয়পত্র গ্রহণ না করার বিষয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিরোধীরা। যদিও সুপ্রিম কোর্ট সংশোধনী প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে, তবে শর্ত দিয়েছে— প্রকৃত ভোটার যেন বাদ না পড়েন এবং ইতোমধ্যে বাদ পড়া প্রায় ৬৫ লাখ ভোটারকে আপিলের সুযোগ দিতে হবে।
সব অভিযোগের জবাবে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, তাদের প্রক্রিয়া স্বচ্ছ এবং স্বাধীন ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই এসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কমিশন রাহুল গান্ধীকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেছে, তিনি যেন স্বাক্ষরিত হলফনামায় অভিযোগের প্রমাণ পেশ করেন।



