দিল্লি আসছেন পুতিন, ঘনিষ্ঠ হচ্ছে ভারত-রাশিয়া
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৭ আগস্ট ২০২৫, ০৮:৫৫ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
মস্কোতে অনুষ্ঠিত দ্বিপাক্ষিক নিরাপত্তা সংলাপে ‘‘কৌশলগত অংশীদারিত্ব’’ জোরালোভাবে পুনর্ব্যক্ত করেছে ভারত ও রাশিয়া। বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) এই সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল এবং রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের সেক্রেটারি সের্গেই শোইগু অংশ নেন।
রুশ বার্তা সংস্থা ইন্টারফ্যাক্স জানিয়েছে, চলতি বছরের শেষ নাগাদ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নয়াদিল্লি সফরের অপেক্ষায় রয়েছে ভারত। বৈঠকে দুই পক্ষই পারস্পরিক সম্পর্কের গভীরতা ও কৌশলগত গুরুত্বের ওপর জোর দেন।
এই সংলাপ এমন সময় অনুষ্ঠিত হলো, যখন রাশিয়ার কাছ থেকে অপরিশোধিত তেল কেনার কারণে ভারতীয় পণ্যে অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নতুন এই শুল্ক ২৮ আগস্ট থেকে কার্যকর হলে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় পণ্যের মোট শুল্ক বেড়ে ৫০ শতাংশে পৌঁছাবে।
টেলিভিশনে দেওয়া বক্তব্যে শোইগু বলেন, “আমরা একটি ন্যায্য ও টেকসই বিশ্বব্যবস্থা গঠনে আন্তর্জাতিক আইনের শ্রেষ্ঠত্ব রক্ষায় এবং আধুনিক হুমকি মোকাবিলায় যৌথভাবে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।” জবাবে দোভাল বলেন, “ভারত-রাশিয়ার সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এবং আমাদের মধ্যে কৌশলগত অংশীদারিত্ব রয়েছে।”
২০২২ সালে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর ভারত ও চীন রুশ তেলের শীর্ষ ক্রেতা হয়ে ওঠে। পশ্চিমা দেশগুলো তখন থেকেই রাশিয়ার অর্থনীতিকে চাপে ফেলতে নানা পদক্ষেপ নেয়। এরই মধ্যে রুশ তেল কেনায় ভারতের ওপর অবৈধ বাণিজ্যিক চাপ সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ করেছে ক্রেমলিন।
ভারতের তেল শিল্প সূত্র জানিয়েছে, মার্কিন হুমকি ও রুশ ছাড় কমে যাওয়ায় রাষ্ট্রীয় পরিশোধনাগারগুলো রুশ তেল কেনা বন্ধ করেছে। তবে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ ও নায়ারা এখনও রুশ তেলের শীর্ষ ক্রেতা হিসেবে রয়েছে।
দোভালের সফরে রুশ তেল কেনা এবং প্রতিরক্ষা সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানিয়েছেন ভারতের এক সরকারি কর্মকর্তা। উল্লেখযোগ্যভাবে, ২০১৮ সালে ভারত রাশিয়ার সঙ্গে ৫.৫ বিলিয়ন ডলারের চুক্তিতে পাঁচটি এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা কেনার সিদ্ধান্ত নেয়। চীনের হুমকি মোকাবিলায় এই ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ হলেও সরবরাহে বিলম্ব ঘটেছে। শেষ দুটি এস-৪০০ সরবরাহ ২০২৬ ও ২০২৭ সালে হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অস্ত্র আমদানিতে ঐতিহ্যগতভাবে রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীল ভারত সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পশ্চিমা দেশগুলোর দিকে ঝুঁকছে, তবে রাশিয়ার সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক এখনও দৃঢ় রয়েছে।



