গাজায় ত্রাণপ্রত্যাশীদের ওপর ইসরায়েলি হামলায় নিহত অন্তত ১১৫
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২১ জুলাই ২০২৫, ১১:৩৬ এএম
ছবি : সংগৃহীত
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় একদিনেই অন্তত ১১৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের বেশিরভাগই ছিলেন ত্রাণের জন্য অপেক্ষারত ক্ষুধার্ত মানুষ। এটি চলতি বছরের মে মাসের পর ত্রাণপ্রত্যাশীদের ওপর ইসরায়েলের অন্যতম প্রাণঘাতী হামলা বলে উল্লেখ করেছে আল জাজিরা।
রোববার (২১ জুলাই) গাজার উত্তরাঞ্চলীয় জিকিম ক্রসিংয়ে অন্তত ৬৭ জন এবং দক্ষিণাঞ্চলে ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে আরও ৬ জন নিহত হন। এর আগের দিন একইভাবে প্রাণ হারিয়েছিলেন ৩৬ জন। মে মাস থেকে এ পর্যন্ত ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে নিহত হয়েছেন ৯০০ জনের বেশি।
আহতদের একজন আহমেদ হাসুনা বলেন, “গ্যাস নিক্ষেপ শুরু হলে আমরা কোনোমতে পালিয়ে এসে প্রাণে বাঁচি।” বাসিন্দা রিজেক বেতার বলেন, “এখানে জীবন নেই, খাবার নেই, অ্যাম্বুলেন্স নেই। আমরা টিকে থাকার সংগ্রামে আছি।”
জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (WFP) জানায়, গাজায় তাদের ২৫ ট্রাকের ত্রাণবহর প্রবেশ করার কিছুক্ষণের মধ্যেই গুলি চালানো হয়। সংস্থাটি এক বিবৃতিতে বলে, “ত্রাণের জন্য অপেক্ষারত মানুষের ওপর হামলা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য।”
ইসরায়েলি বাহিনী দাবি করেছে, তারা তাৎক্ষণিক হুমকির জবাবে সতর্কতামূলক গুলি ছুড়েছিল। তবে মানবিক সংস্থাগুলোর মতে, গাজায় পরিস্থিতি ভয়াবহ ও বিপর্যয়কর। জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সংস্থা ওসিএইচএ জানায়, “মানুষ জীবন বাজি রেখে খাবারের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে, যা সম্পূর্ণ অমানবিক।”
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক Councils on American-Islamic Relations বলেছে, ক্ষুধার্ত নারী, শিশু ও সাধারণ মানুষের ওপর ক্রমাগত হামলা নিছক মানবিক বিপর্যয় নয়—এটি গণহত্যা।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ জানায়, গাজার সীমান্তে তিন মাসের খাদ্য মজুদ থাকলেও ইসরায়েল ২ মার্চ থেকে তা আটকে রেখেছে। সংস্থার প্রধান ফিলিপ লাজারিনি বলেন, “মানবসৃষ্ট সংকটের দায় কেউ নিচ্ছে না।”
গাজার মেডিকেল রিলিফ সোসাইটির পরিচালক ড. আবু আফাশ বলেন, বহু নারী ও শিশু খাদ্যের অভাবে রাস্তায় অজ্ঞান হয়ে পড়ছেন। “শিশুদের অপুষ্টির হার বিপজ্জনক মাত্রায় পৌঁছেছে”—বলেন তিনি।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ৭১টি শিশু অপুষ্টিতে মারা গেছে এবং আরও ৬০ হাজার শিশু গুরুতর ঝুঁকিতে রয়েছে। শুধু রোববারেই ক্ষুধাজনিত কারণে মৃত্যু হয়েছে ১৮ জনের।



