ইন্টেলে ৫০০ কোটি ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা এনভিডিয়ার
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:৫৫ এএম
যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম পুরোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রযুক্তি কোম্পানি ইন্টেলে ৫০০ কোটি ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে এনভিডিয়া। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, কাস্টম ডেটা সেন্টার ও পার্সোনাল কম্পিউটারের (পিসি) জন্য নতুন চিপ তৈরিতে তারা ইন্টেলের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করবে।
এই ঘোষণার এক মাস আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন নিশ্চিত করেছিল, যুক্তরাষ্ট্র সরকার ইন্টেলের ১০ শতাংশ শেয়ার কিনে নিয়েছে। এটিকে করপোরেট আমেরিকায় হোয়াইট হাউসের এক বিরল হস্তক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এনভিডিয়া জানায়, তারা শেয়ারপ্রতি ২৩ দশমিক ২৮ ডলার দামে ইন্টেলের সাধারণ শেয়ার কিনবে, তবে এই বিনিয়োগ বাস্তবায়ন নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদনের ওপর নির্ভর করছে।
এনভিডিয়ার প্রধান নির্বাহী জেনসেন হুয়াং এক বিবৃতিতে বলেন, এই অংশীদারত্ব এনভিডিয়ার এআই ও অ্যাক্সিলারেটেড কম্পিউটিং সক্ষমতা এবং ইন্টেলের সিপিইউ ও বৃহৎ ‘এক্স৮৬’ ইকোসিস্টেমকে একত্রে নিয়ে আসবে। আমরা একসঙ্গে কম্পিউটিংয়ের নতুন যুগের ভিত্তি গড়ে তুলব।
উভয় প্রতিষ্ঠান জানায়, তারা তাদের প্রযুক্তি সীমাহীনভাবে একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত করবে। ইন্টেল তৈরি করবে কাস্টম চিপ, যা এনভিডিয়ার এআই অবকাঠামো (ডেটা সেন্টার) প্ল্যাটফর্মে ব্যবহৃত হবে। পাশাপাশি পিসির জন্যও ইন্টেল এনভিডিয়ার প্রযুক্তি একীভূত করে নতুন চিপ বাজারে আনবে।
ঘোষণার পর মার্কেট ক্লোজ হওয়ার পর ইন্টেলের শেয়ার প্রায় ২৩ শতাংশ বেড়ে যায়—১৯৮৭ সালের পর যা কোম্পানিটির সবচেয়ে বড় এক দিনের মূল্যবৃদ্ধি। এনভিডিয়ার শেয়ারও ৩ শতাংশের বেশি বাড়ে এবং এর বাজারমূল্য দাঁড়ায় ৪ ট্রিলিয়ন ডলার।
১৯৮০ ও ৯০-এর দশকে পার্সোনাল কম্পিউটারে আধিপত্য ধরে রাখলেও ২০০৭ সালে আইফোন আসার পর মোবাইল যুগে ইন্টেল পিছিয়ে পড়ে। এআই বিপ্লবেও তারা প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে তাল মেলাতে পারেনি। কেবল গত বছরেই ইন্টেল ১৯ বিলিয়ন ডলার লোকসান করেছে এবং ২০২৫ সালের মধ্যে কর্মী সংখ্যা এক-চতুর্থাংশ কমানোর পরিকল্পনা করেছে।
ইন্টেলে বিনিয়োগ করেছে জাপানের সফটব্যাংকও। গত আগস্টে তারা ২০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করে কোম্পানিটির ২ শতাংশ মালিকানা অর্জন করেছে। এর আগে থেকেই বাজারে জোরালো গুঞ্জন ছিল, যুক্তরাষ্ট্র সরকার ইন্টেলের শেয়ার কিনবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সেমিকন্ডাক্টর শিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে চিপ আমদানিতে উচ্চ শুল্কের হুমকি এবং এনভিডিয়া ও এএমডির সঙ্গে রপ্তানি চুক্তি, যেখানে শর্ত ছিল চীনে কম ক্ষমতাসম্পন্ন এআই চিপ বিক্রি থেকে ১৫ শতাংশ মুনাফা সরকার পাবে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, এনভিডিয়ার এই বিনিয়োগ কেবল তাদের আধিপত্য আরও দৃঢ় করবে না, বরং ইন্টেলের জন্যও হতে পারে নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর এক সুবর্ণ সুযোগ। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান



