ছবি- সংগৃহীত
মহাকাশ গবেষণার ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় রচনা করতে চলেছে ভারত। দীর্ঘ ৪০ বছর পর আবারও মহাকাশে পা রাখছেন এক ভারতীয় নভোচারী। আজ নাসার কেনেডি স্পেস সেন্টার, ফ্লোরিডা থেকে ‘ড্রাগন’ মহাকাশযানে চড়ে মহাকাশের উদ্দেশে রওনা হবেন ভারতীয় বায়ুসেনার গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্লা।
অ্যাক্সিয়ম স্পেস, নাসা এবং স্পেসএক্সের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত এই Axiom Mission 4 (Ax-4) মিশনে পাইলট হিসেবে রয়েছেন শুভাংশু, যিনি মহাকাশযানটির নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকবেন। তার সঙ্গে রয়েছেন তিন আন্তর্জাতিক নভোচারী— মিশনের কমান্ডার পেগি হুইটসন (যুক্তরাষ্ট্র), স্লায়োস উজনানস্কি (পোল্যান্ড) ও টিবর কাপু (হাঙ্গেরি)।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি শুধু ভারতের জন্য নয়, গোটা দক্ষিণ এশিয়ার মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রেও এক গর্বের মুহূর্ত। ১৯৮৪ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের ‘সোয়ুজ টি-১১’ অভিযানে প্রথম ভারতীয় নভোচারী হিসেবে মহাকাশে পাড়ি দিয়েছিলেন উইং কমান্ডার রাকেশ শর্মা। তার চার দশক পর আজ শুভাংশুর যাত্রা সেই ঐতিহাসিক মুহূর্তের পুনরাবৃত্তি।
মূলত আবহাওয়া ও কারিগরি জটিলতার কারণে নির্ধারিত ২৯ মে থেকে মিশনটি সাতবার স্থগিত হয়। অবশেষে সব প্রতিকূলতা পেরিয়ে আজ ফ্যালকন ৯ রকেটে চড়ে লঞ্চ প্যাড ৩৯এ থেকে মহাকাশে যাত্রা করবে ‘ড্রাগন’। অভিযানের লক্ষ্য: আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (ISS) পৌঁছে বৈজ্ঞানিক গবেষণা সম্পাদন।
উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা শুভাংশুর রয়েছে ভারতীয় যুদ্ধবিমানের দীর্ঘদিনের উড্ডয়ন অভিজ্ঞতা—এএন-৩২, হক, মিগ-২১, জাগুয়ার এবং সু-৩০-এর মতো নানা বিমানে ওড়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। তবে মহাকাশযাত্রা তার জন্য একেবারে নতুন চ্যালেঞ্জ। ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে স্পেসএক্স ও অ্যাক্সিয়ম স্পেসের অধীনে দীর্ঘ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন তিনি।
এই অভিযানের জন্য ইসরো থেকে প্রাথমিকভাবে দুজন নভোচারীকে মনোনীত করা হয়—শুভাংশু শুক্লা ও প্রশান্ত বালাকৃষ্ণন নায়ার। শুভাংশুকে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত করা হলে প্রশান্ত থাকেন তার বিকল্প হিসেবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই মিশনের সফলতা ভবিষ্যতে ভারতের নিজস্ব গ্যাগানযান মিশন ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার পথ আরও প্রশস্ত করবে।



