বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) শুরু হওয়ার আগেই যেখানে বেশিরভাগ সময় আলোচনা ঘোরে অনিশ্চয়তা, আর্থিক জটিলতা কিংবা শেষ মুহূর্তের নাটক নিয়ে—সেখানে একেবারে ভিন্ন বার্তা দিল রাজশাহী ওয়ারিয়র্স। মাঠে নামার আগেই দায়িত্বশীল ব্যবস্থাপনা আর সময়মতো আর্থিক পরিশোধের মাধ্যমে ১২তম বিপিএলের সবচেয়ে গোছানো ফ্র্যাঞ্চাইজি হিসেবে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করে দিয়েছে দলটি।
আগামী ২৬ ডিসেম্বর সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গড়াবে বিপিএলের নতুন আসর। উদ্বোধনী দিনে বিকেল ৩টায় সিলেট টাইটান্সের বিপক্ষে মাঠে নামবে রাজশাহী ওয়ারিয়র্স। মাঠের লড়াই শুরুর আগেই তারা যে বার্তা দিয়েছে, তা নিঃসন্দেহে টুর্নামেন্টের জন্য ইতিবাচক ইঙ্গিত।
জানা গেছে, রাজশাহী ওয়ারিয়র্স ইতোমধ্যে ক্রিকেটার, কোচিং স্টাফ ও সাপোর্ট স্টাফদের সম্মানীর প্রথম কিস্তি পরিশোধ করেছে। বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী এই অর্থ পরিশোধ করায় অন্য ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর জন্যও একটি মানদণ্ড স্থাপন করেছে তারা।
দলটির কোচ হান্নান সরকার এ বিষয়ে বলেন, “আমাদের ফ্র্যাঞ্চাইজি শুরু থেকেই সুনামের সঙ্গে কাজ করছে। বিসিবি যে পেমেন্ট স্লট নির্ধারণ করে দিয়েছে, সেই অনুযায়ী আমরা প্রথম কিস্তির অর্থ পেয়েছি। খেলোয়াড় থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট সবাইকেই পরিশোধ করা হয়েছে। আশা করছি, বাকি অর্থও সময়মতো দেওয়া হবে।”
রাজশাহীর এই উদ্যোগের পরপরই বাকি ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর প্রতি নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। লিগ শুরুর আগে মোট সম্মানীর অন্তত ২৫ শতাংশ পরিশোধ বাধ্যতামূলক করে একটি স্মারক জারি করা হয়েছে। লিগ পর্ব শেষ হওয়ার আগেই দিতে হবে মোট অর্থের ৫০ শতাংশ, আর টুর্নামেন্ট শেষের এক মাসের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে বাকি ২৫ শতাংশ।
পূর্ববর্তী আসরগুলোর বিতর্ক এড়াতে এবার আরও কঠোর অবস্থানে বিসিবি। নিলামের আগেই প্রতিটি ফ্র্যাঞ্চাইজির কাছ থেকে ২ কোটি টাকা ফি ছাড়াও ১০ কোটি টাকা ব্যাংক গ্যারান্টি হিসেবে নেওয়া হয়েছে। ক্রিকেটারদের পাওনা পরিশোধ সম্পন্ন হলেই কেবল এই জামানত ফেরত দেওয়া হবে। এমনকি বিপিএলের লভ্যাংশের ভাগ পেতেও শর্ত হিসেবে যুক্ত করা হয়েছে খেলোয়াড়দের সময়মতো অর্থ পরিশোধের বিষয়টি।
রাজশাহী ওয়ারিয়র্সের এই উদ্যোগের জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল। সদস্য সচিব ইফতেখার রহমান মিঠু বলেন, ‘এটি নিঃসন্দেহে খুবই ইতিবাচক খবর। রাজশাহীর খেলোয়াড়, কোচিং স্টাফ, কর্মকর্তা ও সাপোর্ট স্টাফরা সবাই তাদের পাওনা পেয়েছেন। আশা করছি, বাকি ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোও মাঠে খেলা শুরুর আগেই নির্ধারিত ২৫ শতাংশ অর্থ পরিশোধ করবে।’
মাঠের ফলাফল ভবিষ্যতের বিষয়, তবে মাঠের বাইরের প্রস্তুতিতে রাজশাহী ওয়ারিয়র্স ইতোমধ্যেই দেখিয়ে দিয়েছে—পেশাদারিত্ব আর স্বচ্ছ ব্যবস্থাপনা দিয়েও বিপিএলে আলাদা করে নজর কাড়া যায়।



