ভারতের বিপক্ষে ২২ বছরের জয়ের খরা ভাঙার লড়াই আজ
স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ১১:২৪ এএম
টিম হোটেলের লিফটে দেখা হতেই ক্রিকেট দলের এক কোচ জামাল ভূঁইয়াকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘চাপ মনে হচ্ছে?’ জামালের উত্তর ছিল সোজাসাপটা—‘চাপ সামলানোই আমাদের কাজ।’ তাতে আরও স্পষ্ট হলো, আজকের ম্যাচ শুধু ফুটবলারদের নয়, বরং গোটা ক্রীড়াঙ্গনের নজরের কেন্দ্রবিন্দু। কারণ প্রতিপক্ষ ভারত—একই সঙ্গে ঘৃণারও, ভালোবাসারও।
এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের মূল পর্বে ওঠার সম্ভাবনা নেই দুই দলেরই। কিন্তু ভারত–বাংলাদেশ ম্যাচ মানেই আলাদা উত্তাপ, আলাদা আবেগ—যেখানে পয়েন্ট টেবিলের হিসাব ভুলে গিয়ে জয়ই একমাত্র লক্ষ্য। সেই জয়ের অপেক্ষা বাংলাদেশের জন্য টানা ২২ বছরের। ২০০৩ সাফ সেমিফাইনালে মতিউর মুন্নার গোল্ডেন গোলের পর আর দেখা মেলেনি ভারতের বিপক্ষে জয়ের।
আজ রাত ৮টায় জাতীয় স্টেডিয়ামে সেই আক্ষেপ ঘোচানোর লড়াইয়ে নামবে হামজা-শমিতরা। ভারত নতুন কোচ খালিদ জামিলের অধীনে পুনর্গঠনের চেষ্টা চালাচ্ছে, তবে এখনো সেভাবে ছন্দে ফিরতে পারেনি। এ কারণেই বাংলাদেশ অধিনায়ক জামালের চোখে এটিই ভারতের বিপক্ষে জয়ের সবচেয়ে বড় সুযোগ।
সংবাদ সম্মেলনে জামাল বলেন, ‘ভারত এখন তাদের সেরা অবস্থায় নেই। তাদের সুপার লিগও এখনো শুরু হয়নি। এটা আমাদের জন্য ইতিবাচক। তবে তারা পেশাদার দল, তাই ম্যাচটা কঠিনই হবে। নেপালের চেয়ে ভারতের বিপক্ষে আমরা বেশি সুযোগ পাব।’
ঘরের মাঠে নেপালের বিপক্ষে শেষ মুহূর্তের ভুলে পাওয়া হতাশা নতুন করে মনে করিয়ে দিলেও বাংলাদেশ কোচ কাবরেরা নিশ্চিত—সেই ভুল এবার আর হবে না। তিনি বলেন, ‘তিন পয়েন্ট পেতে চাইলে এমন ভুল আর করা যাবে না। এসব পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে শিখতে হবে।’
রক্ষণের ভুলগুলো নিয়ে জামালও অকপটে স্বীকারোক্তি দেন। তবে তাঁর মতে, ভারত আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে খেললে পাল্টা আক্রমণে বাংলাদেশের সুযোগ বাড়বে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘রাকিব সম্ভবত দক্ষিণ এশিয়ার দ্রুততম খেলোয়াড়। তাকে ঠিকমতো ব্যবহার করতে পারলে সন্দেশ বা রাহুল—যেই থাকুক না কেন, রাকিব তাদের ডিফেন্স ধ্বংস করে দেবে।’
ভারত ম্যাচকে ঘিরে উন্মাদনা চারদিকে। কাবরেরা আবেগের লাগাম টেনে রেখে আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে বলেন, ‘আমাদের সামর্থ্য আছে, দল আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে শক্তিশালী। ভারতের বিপক্ষে জয়ের সুযোগ এবারই। এটা ঘটবেই—শতভাগ ঘটবে। আর সেটা কালই (আজ) হবে।’
জামালও চান বছরের শেষটা হোক জয়ে, দেশের ফুটবলের জন্য একটি ইতিবাচক বার্তা দিয়ে। তিনি বলেন, ‘এ ম্যাচ আবেগের, তবে মাথা ঠাণ্ডা রেখে খেলতে হবে। অনেক ফ্রি কিক, হলুদ কার্ড, এমনকি উত্তপ্ত মুহূর্তও আসবে—আমি এটাকে স্বাভাবিক ম্যাচ হিসেবে দেখছি। তবে এ ম্যাচের তাৎপর্য আমি জানি।’
আজ তাই শুধু একটি ম্যাচ নয়—২২ বছরের অপূর্ণতা পূরণের সুযোগ, বাংলাদেশের ফুটবলের গর্ব ফিরে পাওয়ার লড়াই।



