আইপিএল শিরোপা উৎসবে প্রাণহানির ঘটনায় বেঙ্গালুরুকে দায়ী করে প্রতিবেদন
স্পোর্টস ডেস্ক :
প্রকাশ: ১৭ জুলাই ২০২৫, ০৮:৩১ পিএম
ভারতের বেঙ্গালুরু শহরে গত ৪ জুন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর আইপিএল শিরোপা উৎসবে পদদলিত হয়ে ১১ জনের মৃত্যুর ঘটনায় ফ্র্যাঞ্চাইজি কর্তৃপক্ষ, রাজ্য ক্রিকেট সংস্থা ও ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিকে দায়ী করেছে কর্ণাটক সরকার। এমনকি সরকার দায় দেখছে দলটির সবচেয়ে বড় তারকা বিরাট কোহলিরও।
আইপিএল শিরোপা উদ্যাপনে প্রাণহানির ঘটনায় চলা মামলায় কর্ণাটক সরকারের কাছে প্রতিবেদন চেয়েছিলেন আদালত। হাইকোর্টে জমা দেওয়া প্রতিবেদনে বেঙ্গালুরুর বিজয়োৎসব অনুষ্ঠানের আয়োজনে অনুমতি না নেওয়া ও অব্যবস্থাপনার কথা তুলে সরকার ফ্র্যাঞ্চাইজিকে দায়ী করেছে।
প্রমাণ হিসেবে কোহলির বার্তাসংবলিত একটি ভিডিওর কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যা বেঙ্গালুরু পরবর্তী সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে সরিয়ে নিয়েছে।
ঘটনার দিন সকালে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পেজগুলো থেকে কোহলিকে দিয়ে প্রচার চালানো হয়। ভিডিও পোস্টে কোহলি ভক্ত-সমর্থকদের উৎসবে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানান। এতে প্রত্যাশার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি জনসমাগম হয়। পরে সেই ভিডিওবার্তা বেঙ্গালুরুর পেজগুলো থেকে মুছে ফেলা হলেও প্রমাণ হিসেবে অনেকের কাছেই সেটি এখনো আছে।
১৮ বছরের আইপিএল ইতিহাসে এবারই প্রথম চ্যাম্পিয়ন হয় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। ৩ জুন আহমেদাবাদের ফাইনালে পাঞ্জাব কিংসকে ৬ রানে হারায় কোহলির দল। পরদিন দলটি ট্রফি নিয়ে বেঙ্গালুরুতে ফেরে। শহরের বিধান সৌধ থেকে ‘ভিক্টরি প্যারেড’ করতে করতে নিজেদের মাঠ এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে পৌঁছান কোহলি, রজত পাতিদার, ক্রুনাল পান্ডিয়া, ফিল সল্টরা।
কর্ণাটক রাজ্য ক্রিকেট সংস্থা ৩ জুন গভীর রাতে কাবন পার্ক থানাকে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর সম্ভাব্য ট্রফি উৎসবের বিষয়টি অবহিত করে। কিন্তু কাবন পার্ক থানা স্বল্প সময়ের নোটিশ ও পরিকল্পনার ঘাটতির কথা উল্লেখ করে রাজ্য ক্রিকেট সংস্থার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে। তবু ফ্র্যাঞ্চাইজি কর্তৃপক্ষ প্রচার চালিয়ে যায়।
৪ জুন বিকেল সোয়া ৩টার দিকে ‘ভিক্টরি প্যারেডের’ সময়সূচি জানানো হয় এবং ফ্র্যাঞ্চাইজি ওয়েবসাইটের একটি লিংক শেয়ার করা হয়। সেখানে বলা হয়, সীমিত দর্শক বিনা মূল্যে স্টেডিয়ামে ঢুকতে পারবেন। কিন্তু ততক্ষণে লাখ লাখ মানুষ অনুষ্ঠানস্থলে (স্টেডিয়াম এলাকায়) চলে আসে। এর আগে সেদিন সকালে কোহলির যে ভিডিওবার্তা পোস্ট করা হয়, সেটিও বিকেল গড়াতে ১৬ লাখ বার দেখা হয়। এ ধরনের প্রচারই ব্যাপকভাবে জনসমাগম সৃষ্টি করে।
সেদিন উৎসুক জনতাকে সামলাতে লাঠিচার্জ করতে বাধ্য হয় বেঙ্গালুরু পুলিশ।
শুনানির সময় হাইকোর্ট সব পক্ষের কাছ থেকে সেদিনের ঘটনার বিস্তারিত জানতে চাইবেন। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) ইতিমধ্যেই রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে। ফ্র্যাঞ্চাইজিটির বিপণনপ্রধান নিখিল সোসালেকে অনেক আগেই গ্রেপ্তার করেছে স্থানীয় পুলিশ।



