
প্রিন্ট: ২৩ জুলাই ২০২৫, ০৮:১৪ এএম
মুসিয়ালার ভয়ঙ্কর চোটে তোপের মুখে দোন্নারুমা, মাঠের বাইরে কতদিন

যুগের চিন্তা ডিজিটাল রিপোর্ট :
প্রকাশ: ০৬ জুলাই ২০২৫, ০৫:৫২ পিএম

এপ্রিলের পর প্রথমবারের মতো গতকাল (শনিবার) ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে বায়ার্ন মিউনিখের শুরুর একাদশে নেমেছিলেন জার্মান মিডফিল্ডার জামাল মুসিয়ালা। কিন্তু এই ম্যাচটিতেই তিনি সম্ভবত ক্যারিয়ারের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর চোটে পড়েছেন। পিএসজির বিপক্ষে তার দল হারলেও সব ছাপিয়ে গেছে মুসিয়ালার চোট। যা তাকে লম্বা সময়ের জন্য ছিটকে দিতে যাচ্ছে। এই ঘটনায় অনেকেই দায় দেখছেন পিএসজি গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি দোন্নারুমার।
ইনজুরির কারণে সদ্য সমাপ্ত মৌসুমে বায়ার্নের হয়ে ১১টি ম্যাচ মিস করেছেন জামাল মুসিয়ালা। তবে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৪৪ ম্যাচে তিনি ২৯ গোলে (২১ গোল ও আট অ্যাসিস্ট) অবদান রেখেছেন। নিঃসন্দেহে বাভারিয়ানদের সবচেয়ে কার্যকরী তারকাদের একজন এই জার্মান তারকা। তার চোট নতুন মৌসুমের আগে বায়ার্নের জন্য বড় ধাক্কা। এখন আলোচনা হচ্ছে কত সময়ের জন্য মাঠের বাইরে ছিটকে গেলেন মুসিয়ালা।
জার্মানির নিউজ আউটলেট ‘বিল্ড’ জানিয়েছে, ‘মুসিয়ালার পায়ের বেশ কয়েকটি লিগামেন্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তিনি চার–পাঁচ মাস মাঠের বাইরে থাকতে পারেন।’ আজই মিউনিখে ফেরার পর পায়ে সার্জারি হতে পারে জামালের। বায়ার্নের স্পোর্টিং ডিরেক্টর ক্রিস্টফ ফ্রেউন্ড তার চোট নিয়ে বলছেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত এটি মোটেও ভালো কিছু মনে হচ্ছে না।’ ক্লাবটির কোচ ভিনসেন্ট কোম্পানির মতে– ‘যদি আমি শুধু তার ওই সময়ের ছবি দেখি, এটি অ্যাঙ্কলের চোট মনে হয়। তবে আমি এখনই মূল সমস্যাটা বলতে পারব না।’
পিএসজি-বায়ার্ন ম্যাচের প্রথমার্ধ শেষের আগমুহূর্তে দোন্নারুমার সঙ্গে ভয়াবহ ওই সংঘর্ষ হয় জামাল মুসিয়ালার। প্যারিসিয়ানদের বক্সে সতীর্থের বাড়ানো বল দ্রুতগতিতে নিতে যাচ্ছিলেন তিনি, এই সময় একপাশ থেকে স্লাইড দিয়ে এসে বলের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েন পিএসজি গোলরক্ষক। তার গায়ে পা আটকে ছিটকে পড়েন জামাল, পরমুহূর্তেই দেখা যায় তার বাঁ পায়ের অ্যাঙ্কল ভয়াবহভাবে বাঁকা হয়ে গেছে। সেই দৃশ্য সহ্য হয়নি বায়ার্ন ও পিএসজি ফুটবলারদেরও। ব্যথায় কাতরানো এই তারকার পাশে দাঁড়িয়ে কেউ জার্সিতে মুখ ঢাকছেন, কেউবা শোকার্ত মুখ নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেখান।
প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে জামালের পায়ের মারাত্মক অবস্থা দেখে তাকে স্ট্রেচারে করে তুলে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে আটলান্টার নিকটবর্তী এক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় বায়ার্ন তারকাকে। ওই সংঘর্ষে চোট পান দোন্নারুমাও। তবে পরে আবারও তাকে মাঠে নামতে দেখা যায়। জামাল মুসিয়ালার ভয়াবহ এই চোটের কারণে দোন্নারুমার বড় দায় দেখছেন বায়ার্নের কোচ–খেলোয়াড়রা। তার ওপর ক্ষোভ দেখিয়ে গোলরক্ষক ম্যানুয়েল নয়্যার বলেন, ‘যে পরিস্থিতি ছিল (দোন্নারুমা) ওভাবে চ্যালেঞ্জ না করলেও পারত। এটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ, সে প্রতিপক্ষের একজনকে ইনজুরিতে ফেলার ঝুঁকি নিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি তার (দোন্নারুমা) কাছে গিয়ে বলেছি “তোমার আমাদের প্লেয়ারের কাছে যেতে ইচ্ছে হয়নি?” সেখানে গিয়ে তার সুস্থতা কামনা করা উচিৎ। যদিও পরে সে সেটা করেছে। খেলায় এসব আচরণ গুরুত্বপূর্ণ…আমিও হয়তো অন্যভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারতাম।’ দোন্নারুমাও পরবর্তীতে মুসিয়ালার একটি ছবি নিজের ইন্সটাগ্রাম স্টোরিতে দিয়ে লিখেছেন, ‘তোমার জন্য আমার পুরো প্রার্থনা ও শুভকামনা।’
ক্ষোভ জানিয়েছেন বায়ার্ন কোচ কোম্পানিও– ‘আমি এখানে বসে থাকাবস্থায়ও আমার রক্ত ফুটছিল, এখনও যেন টগবগ করছে। এটি ফলাফলের কারণে নয়। আমি বুঝতে পারছি ফুটবলে এমনটা হতেই পারে, কিন্তু এটি এমন একজনের সঙ্গে হয়েছে যে ফুটবল খেলাটা অনেক বেশি উপভোগ করে। কিন্তু সে আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ একজন। আশা করি সে এটা কাটিয়ে উঠবে।’ বুন্দেসলিগা চ্যাম্পিয়নরা ম্যাচটি পিএসজির কাছে ২-০ গোলে হেরেছে।