বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৫ ১৪৩১

মুক্তিযুদ্ধ পক্ষের শক্তি একত্রিত হয়ে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে : শমীম ওসমান

প্রকাশিত: ২৮ মার্চ ২০১৭   আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৭

যুগের চিন্তা ২৪ ডট কম : নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান বলেছেন, আমরা হয়তো সারা বাংলাদেশকে জঙ্গি মুক্ত করতে পারবো না, কিন্তু আমরা তো অন্তত নারায়ণগঞ্জকে জঙ্গিমুক্ত করতে পারবো। তাই আপনারা সকলে মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিন। জঙ্গি হামলায় এদেশে যারা নিহত হয় তারা কি মুসলমান না। শুধু পুলিশ বা র‌্যাব জঙ্গিদের প্রতিহত করতে পারবে না। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল শক্তিকে একত্রিত হয়ে তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। সিলেটের আতিয়া মহলে জঙ্গি বিরোধী অভিযানে দুই পুলিশ সদস্যসহ নিহত ৬ জনের রুহের মাগফেরাত কামনা ও বোমা হামলায় আহত কর্নেল আজাদসহ অন্যান্যদের আশু অরোগ্য কামনায় দোয়ার মাহফিল ও সমাবেশে ওই কথা বলেন তিনি। গতকাল বিকালে চাষাড়া শহীদ মিনারে এর আয়োজন করেন সাংসদ শামীম ওসমান নিজেই। উক্ত দোয়া মাহফিল ও সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা, নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, জেলা প্রশাসক রাব্বী মিয়া, পুলিশ সুপার মঈনুল হক, র‌্যাব-১১ এর পরিচালক কামরুল হাসান, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাসমিন জেবিন বিনতে শেখ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ মো. বাদল, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. খোকন সাহা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ নিজাম, বিকেএমইএ’র সহ-সভাপতি (অর্থ) জিএম ফারুক ও নারায়ণগঞ্জ আইনজীবি সমিতির সভাপতি আনিসুর রহমান দিপু। শামীম ওসমান আরো বলেন, বিভিন্ন সময়ে দেশকে দুটি ভাগে বিভক্ত করা হচ্ছে। একটি অংশ খুব নগন্য অথচ তারা বেশ সংগঠিত। ওরা মাত্র ৩ থেকে ৪ভাগ। অপর অংশটি স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি। ৭৫ এ বঙ্গবন্ধুর হত্যার মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার স্বপ্নকে ভুলণ্ঠিত করার চেষ্টা করা হয়েছে। ২০১৪ থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৩০ জন পুলিশ অফিসার জীবন দিয়েছেন ওই জঙ্গী ও আগুন সন্ত্রাসীদের কারণে। পুলিশ মারা যাচ্ছে সাধারণ মানুষ মারা যাচ্ছে র‌্যাব আহত হচ্ছে আর বিরোধী দল বলছে এটা সন্দেহ জনক কর্মকান্ড। যারা ইসলামের নাম দিয়ে মানুষ মারে তারা ইবলিশের সন্তান। আমি গত ১৭ বছর যাবৎ তাহাজ্জুদের নামায পড়ি। দুই বেলা কুরআন পড়ি। কই কোথাও তো দেখলাম না ইসলাম জঙ্গীবাদ সমর্থন করে। তিনি বলেন,  ড. ইউনুস হিলারী ও বিশ্ব ব্যাংক ষড়যন্ত্র করে পদ্মা সেতুর কাজ বন্ধ করতে চেয়েছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধু কণ্যা শেখ হাসিনা নিজেদের অর্থেই পদ্মা সেতু করছে। জঙ্গীরা এত বড় মুসলমান কই ইজরাইলে তো হামলা হয় না। উল্টো বাংলাদেশের মতো ধর্মভীরু দেশগুলোতে হামলা করা হয়। সাবেক সরাষ্ট্রমন্ত্রী আমার দলের শ্রদ্ধেয় মাতৃতুল্য  সাহারা খাতুন বলেছিলেন এ দেশে জঙ্গীবাদ নেই। আমি বলেছিলাম আছে। ওরা কাপুরুষ। ওরা জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসতে পারবে না। ওরা মরণ কামড় দিবে। এ সময় তিনি উপস্থিত সকলের কাছে মতামত চেয়ে বলেন, যারা শহীদ হয়েছেন তাদের নামে রাস্তা করতে চাই। সামনে আরো হামলা হবে। দলবাজি না করে সাবধান থাকতে হবে। ওরা যেন বাংলাদেশকে আফগানিস্তান ইরাক বা লিভিয়া বানাতে না পারে। শামীম ওসমান বলেন, রাজাকারের ছেলে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবে থাকার কারণে অনেক যোগত্যা সম্পন্ন জাতীয় দৈনিকের সাংবাদিকও এখানকার সদস্য হতে পারছেন না বলে দাবি করেছেন নারায়ণগঞ্জ (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ)-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান। শামীম ওসমান তার বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ খেলাঘরের সভাপতি জহিরুল ইসলাম জহিরকে রাজাকারের ছেলে দাবি করে বলেন, ১৬ জুন পাকিস্তানিদের দোসর জামাত-শিবির বোমা মেরে আমাকে মেরে ফেলতে চেয়েছিল। সেই তারাই এখন জঙ্গিবাদের সাথে জড়িত। তারা শান্তির ধর্ম ইসলামকে ব্যবহার করে মানুষকে বিভ্রান্তি করছে। পরিশেষে আইন শৃংখলা বাহিনীকে উদ্দেশ্য করে সংসদ সদস্য আরো বলেন, একাত্তরে পরাজিত শক্তি এখন কাজ করছে ‘হিট অ্যান্ড রান’ পদ্ধতিতে। এক জায়গায় অবস্থান করে ঘটনা ঘটিয়ে দ্রুত সেখান থেকে চলে যাবে। নারায়ণগঞ্জেও ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের আশেপাশে এ ধরনের ঘাঁটি আছে সে ব্যাপারে খোঁজ খবর নিতে হবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে। এ ছাড়াও অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক রাব্বি মিয়া তার বক্তব্যে বলেন, রাজনৈতিক নেতা  কর্মী মারা গেলে মিছিল হয়, সমাবেশ হয় কিন্তু দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ মারা গেলে কোন প্রতিবাদ হয়না। নারায়ণগঞ্জের ইতিহাস নতুন কিছু সৃষ্টি করার ইতিহাস। এরই ধারাবাহিকতায় শামিম ওসমান আজ ইতিহাস সৃষ্টি করলেন। পুলিশ সুপার মাইনুল হক বলেন,  ৭১ এ পুলিশ বাহিনী দেশ স্বাধীন করার জন্য প্রথম  জীবন দিয়েছিল, তেমনি আজও  দেশ প্রেম এ উদ্ভুদ্ধ হয়ে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব  রক্ষার জন্য অঙ্গ প্রতঙ্গ  দিচ্ছে, রক্ত দিচ্ছে, জীবন দিচ্ছে। বঙ্গবন্ধু তার ৭ মার্চের ভাষণে হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে দূর্গ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছিলেন। আসুন সেই আহ্বান কে স্মরণে রেখে নারায়ণগঞ্জের প্রতিটি ঘরে ঘরে সন্ত্রাস, ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে দূর্গ গড়ে তুলি। সেই দূর্গ থেকেই প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।  প্রতিটি ঘর থেকে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলে এ দেশ থেকে জঙ্গি নির্মূল হবেই হবে। নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য লিকয়াত হোসেন খোকা বলেন, আমি শামীম ওসমানের সাথে একই কন্ঠে বলতে চাই, যারা সিলেটে জঙ্গি হামলায় নিহত হয়েছেন তাদের নামে আমিও সোনারগাঁয়ে রাস্তার নাম করন করবো। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ঘাতক দালাল নিমূল কমিটির জেলা সভাপতি চন্দন শীল, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি গোপিনাথ দাস, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমান, ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইফুল্লাহ বাদল, নায়াণগঞ্জ বিএমএ’র সভাপতি ডা. শাহ্ নেওয়াজ, যুবলীগ নেতা হেলাল, মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন সাজনু, মহানগর সেচ্ছা সেবক লীগের সভাপতি নাজমুল আলম সজল, জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক আবু জাহের, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাফায়াত আলম সানি ও মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক হাবিবুর রাহমান রিয়াদ প্রমূখ।
এই বিভাগের আরো খবর