মায়ের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন তারেক রহমান
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:৫৫ এএম
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার চরম অবনতি হয়েছে। তাঁর চিকিৎসায় নিয়োজিত মেডিকেল বোর্ড জানিয়েছে, তিনি বর্তমানে ‘অত্যন্ত সংকটময় অবস্থা’ পার করছেন।
রোববার সকাল ৬টার দিকে বিএনপির মিডিয়া সেল থেকে জানানো হয়, খালেদা জিয়াকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে। এ অবস্থায় দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশবাসীর কাছে তাঁর মায়ের জন্য দোয়া চেয়েছেন।
এর আগে শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে এক জরুরি সংবাদ ব্রিফিংয়ে খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক পরিস্থিতি তুলে ধরেন মেডিকেল টিমের সদস্য ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, ২৩ নভেম্বর বেগম জিয়া হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। বর্তমানে তাঁকে সিসিইউ থেকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়েছে। তাঁর অবস্থা অত্যন্ত জটিল। এই সংকট কাটিয়ে উঠতে পারলে তবেই ভালো কিছুর আশা করা যাবে।
শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সস্ত্রীক হাসপাতালে যান। ডা. জুবাইদা রহমানসহ তাঁরা প্রায় দুই ঘণ্টা হাসপাতালে অবস্থান করে চিকিৎসকদের কাছ থেকে সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজখবর নেন। লন্ডন থেকে গত বৃহস্পতিবার ঢাকা ফেরার পর এটি ছিল তাঁর দ্বিতীয়বার হাসপাতাল পরিদর্শন।
অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে দেশি ও বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত একটি মেডিকেল বোর্ড খালেদা জিয়ার চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। অধ্যাপক জাহিদ হোসেন জানান, চিকিৎসকেরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এবং ডা. জুবাইদা রহমান সার্বক্ষণিকভাবে দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের সঙ্গে সমন্বয় করছেন।
এর আগে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছিলেন, খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার লক্ষ্যে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ও ভিসাসহ সব প্রস্তুতি সম্পন্ন রয়েছে। তবে বর্তমানে তিনি ভ্রমণের উপযোগী শারীরিক অবস্থায় নেই। চিকিৎসকেরা অনুমতি দিলেই তাঁকে দেশের বাইরে নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, ৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ কিডনি, ফুসফুস ও চোখের নানা জটিল রোগে ভুগছেন। গত ২৯ নভেম্বর জানানো হয়, তিনি নতুন করে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং তাঁর ফুসফুস ও হৃদ্যন্ত্রে গুরুতর সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। এর আগে ২০২৪ সালের জুনে তাঁর হৃদ্যন্ত্রে পেসমেকার স্থাপন করা হয় এবং বিদেশি বিশেষজ্ঞ এনে লিভারের চিকিৎসা দেওয়া হয়।
২০১৮ সালে কারাবন্দি হওয়ার পর দীর্ঘদিন অসুস্থ অবস্থায় থাকা খালেদা জিয়াকে গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পরদিন ৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতির নির্বাহী আদেশে সব দণ্ড থেকে সম্পূর্ণ মুক্তি দেওয়া হয়।



