বিএনপির প্রার্থী তালিকা নিয়ে ক্ষোভ, বাদ পড়েছেন একাধিক হেভিওয়েট নেতা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ১২:২২ পিএম
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ঘোষিত ২৩৭ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় নাম নেই বিএনপির বহু প্রভাবশালী নেতার। মনোনয়নবঞ্চিত এসব নেতারা প্রকাশ্যে কোনো প্রতিক্রিয়া না দেখালেও তাঁদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে। বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভও হয়েছে।
দলীয় সূত্র জানায়, মনোনয়নবঞ্চিতদের সমর্থকদের এই ক্ষোভে বিএনপি কিছুটা চাপে পড়েছে। এরই মধ্যে মঙ্গলবার মাদারীপুর-১ আসনের প্রার্থীর নাম স্থগিত করেছে দল। বিএনপির নীতিনির্ধারকরা বলছেন, ঘোষিত তালিকাটি সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে তৈরি, প্রয়োজনে পরিবর্তন আনা হতে পারে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরই প্রার্থিতা চূড়ান্ত করা হবে।
গত সোমবার বিকেলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংবাদ সম্মেলনে ৩০০ আসনের মধ্যে ২৩৭ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেন। এই তালিকায় বাদ পড়েছেন ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, আসাদুজ্জামান রিপন, আসলাম চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, সাবেক সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা, মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাসসহ বেশ কয়েকজন হেভিওয়েট নেতা।
মনোনয়নবঞ্চিতদের কেউ কেউ ঘনিষ্ঠজনদের কাছে হতাশার কথা জানালেও প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেননি। তাঁদের সমর্থকেরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন এবং বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন।
প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ পড়া রুমিন ফারহানা বলেন, প্রকাশিত তালিকাটি প্রাথমিক পর্যায়ের। সময়ের সঙ্গে এতে পরিবর্তন আসতে পারে—কেউ বাদ পড়বেন, কেউ নতুনভাবে যুক্তও হতে পারেন। তাই এটিকে চূড়ান্ত তালিকা হিসেবে দেখা উচিত নয়।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, তালিকাটি সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম নিয়ে তৈরি। প্রয়োজনে স্থায়ী কমিটি অদলবদল করতে পারে। চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর।
দলীয় সূত্র অনুযায়ী, ৩০০ আসনের মধ্যে এখনো ৬৪টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি। এর মধ্যে প্রায় ৪০টি শরিকদের জন্য রাখা হতে পারে। বাকিগুলোতে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্য থেকে যোগ্য প্রার্থী বাছাই করা হবে।
এদিকে, ঘোষিত প্রার্থী তালিকায় বিএনপির প্রয়াত ও প্রবীণ নেতাদের সন্তানদেরও দেখা গেছে। এদের মধ্যে আছেন মোহাম্মদ নওশাদ জমির (পঞ্চগড়-১), ফারজানা শারমিন পুতুল (নাটোর-১), রাগীব রউফ চৌধুরী (কুষ্টিয়া-২), অনিন্দ্য ইসলাম অমিত (যশোর-৩), তানভীর আহমেদ রবিন (ঢাকা-৪), ইশরাক হোসেন (ঢাকা-৬), শ্যামা ওবায়েদ (ফরিদপুর-২), নাসের রহমান (মৌলভীবাজার-৩), হুম্মাম কাদের চৌধুরী (চট্টগ্রাম-৭), মিশকাতুল ইসলাম চৌধুরী (চট্টগ্রাম-১৪), শাহ রিয়াজুল হান্নান (গাজীপুর-৪), মঈনুল ইসলাম খাঁন (মানিকগঞ্জ-২), ইয়াসের খান চৌধুরী (ময়মনসিংহ-৯), মাহমুদুল হক রুবেল (শেরপুর-৩), সানসিলা জেবরিন প্রিয়াঙ্কা (শেরপুর-১), মেহেদী হাসান (ঝিনাইদহ-৩), মঞ্জুরুল করিম রনি (গাজীপুর-২) এবং আহমেদ সোহেল মঞ্জু সুমন (পিরোজপুর-২)।
বিএনপির নীতিনির্ধারকরা বলছেন, সম্ভাব্য প্রার্থীদের আচরণ ও কর্মতৎপরতার ওপর নজর রাখা হচ্ছে। কেউ দলীয় শৃঙ্খলার বাইরে গেলে তাঁর মনোনয়ন পরিবর্তন হতে পারে। আবার প্রাথমিকভাবে বাদ পড়া কারও ভাগ্যও খুলে যেতে পারে।



