আসন্ন নির্বাচনে আসন সমঝোতায় তৎপর ছয় ইসলামি দল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ১২:০৯ পিএম
গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে ইসলামি দলগুলো নিজেদের মধ্যে দূরত্ব কমিয়ে ঐক্যের পথে হাঁটছে। আলোচিত ছয়টি ইসলামি দল আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং জুলাই সনদের আইনি স্বীকৃতিসহ পাঁচ দফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলন করছে। একই সঙ্গে তারা একক ভোটব্যাংক গঠনের লক্ষ্যে আসন সমঝোতার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করেছে।
ইসলামি দলগুলোর জ্যেষ্ঠ নেতারা জানান, আসন ভাগাভাগি হবে আলোচনার ভিত্তিতে। প্রতিটি দলের সাংগঠনিক শক্তি, জনসমর্থন এবং স্থানীয় অবস্থান বিবেচনা করেই প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে। তবে সমঝোতা মানে কোনো দল আসন ছাড় দেবে এমন নয়- প্রত্যেক দল ন্যায্য হিস্যা নিশ্চিত করতে চায়।
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার খুলনায় এক অনুষ্ঠানে বলেন, সমমনা দলগুলোর সঙ্গে ঐক্য হলে জামায়াত সর্বোচ্চ ১০০ আসন ছাড় দিতে পারে। যেখানে আমাদের জয়ের সম্ভাবনা কম, সেসব আসন আমরা ছাড়তে পারি। তবে অন্তত ২০০ আসনে আমরা প্রার্থী দেব।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের একজন মহানগর নেতা বলেন, ইসলামি দলগুলো প্রথমবারের মতো একক ভোটব্যাংক তৈরির চেষ্টা করছে। বরিশালে ইসলামী আন্দোলনের অবস্থান ভালো, সেখানে জামায়াত প্রার্থী দেবে না। আবার কক্সবাজার, পাবনা বা সাতক্ষীরায় জামায়াত শক্তিশালী- সেখানে অন্যান্য দল প্রার্থী রাখবে না।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা ইউনুস আহমাদ বলেন, যে দলের প্রার্থীর মান, সাংগঠনিক শক্তি ও জনসমর্থন ভালো, তাকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। সব দলের ত্যাগের মানসিকতা থাকতে হবে। আমরা চাই তফসিল ঘোষণার আগেই সব সমঝোতা চূড়ান্ত হোক।
মাওলানা মামুনুল হকের দল বিএনপির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হচ্ছে কি না, জানতে চাইলে ইউনুস আহমাদ বলেন, মামুনুল হক সরাসরি বিএনপির সঙ্গে জোটের কথা বলেননি। আমরা যে লিয়াজোঁ কমিটি করেছি, সেখানে তার দলের প্রতিনিধি আছেন। সবাই একসঙ্গে আন্দোলন করছে।
জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনা চলছে। সবাই তাদের অগ্রাধিকার এলাকায় প্রার্থিতা নিশ্চিত করবে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পর।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব জালালউদ্দীন আহমদ জানান, ছোট দলের কেন্দ্রীয় নেতা বা আমিরদের প্রার্থিতা বিশেষ বিবেচনায় আসবে। কারণ এসব দলের স্থানীয় সমর্থন কম হলেও নেতাদের পরিচিতি বেশি।
বর্তমানে আসন সমঝোতা ও ঐক্য প্রক্রিয়ায় সক্রিয় ছয়টি ইসলামি দল হলো—বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস, নেজামে ইসলাম পার্টি ও বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন।
সূত্র বলছে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি-মার্চ থেকেই ইসলামি দলগুলো একক ভোটব্যাংক গঠনে কাজ করছে। অন্যদিকে, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ বিএনপির সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচনে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
বিএনপির সঙ্গে সম্ভাব্য সমঝোতা নিয়ে গুঞ্জনের বিষয়ে খেলাফত মজলিসের মহাসচিব জালালউদ্দীন আহমদ বলেন, বিএনপির সঙ্গে জোটের খবর বানোয়াট। ২৫ অক্টোবর আমাদের মজলিসে শুরা ও সাধারণ পরিষদ বৈঠকে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।



