ছবি-যুগের চিন্তা
গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী রাজনৈতিক অস্থিরতা ও জনগণের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে ‘জাতীয় নাগরিক জোট’ আত্মপ্রকাশ করেছে। রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ, পেশাজীবী, সাংবাদিক ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত এ জোট দেশের গণতন্ত্র, সার্বভৌমত্ব ও নাগরিক অধিকার রক্ষার অঙ্গীকার জানিয়েছে।
মঙ্গলবার ৭ অক্টোবর জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মেয়ে হলে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জোটটি আত্মপ্রকাশ করে।
সংবাদ সম্মেলনে জোটের নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী ১৪ মাসে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেনি। মানবিক ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার যে প্রত্যাশা ছিল, তা ব্যাহত হয়েছে।
তাদের অভিযোগ, “কিছু রাজনৈতিক দল ও অন্তর্বর্তী সরকারের অংশবিশেষ বিদেশি স্বার্থে নতজানু আচরণ করছে, যা দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি।”
এই পরিস্থিতিতে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, সামাজিক ব্যক্তিত্ব ও বিভিন্ন সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে ‘জাতীয় নাগরিক জোট’।
জোটের লক্ষ্য ও কর্মসূচি:
জাতীয় নাগরিক জোট বলেছে, আসন্ন ফেব্রুয়ারির নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষভাবে আয়োজন নিশ্চিত করতে গণচাপ গড়ে তুলবে তারা। জনগণের নির্বাচিত সরকার গঠনের লক্ষ্যে নির্দিষ্ট সময়সূচি ঘোষণা ও সকল প্রার্থীর জন্য সমান সুযোগ (লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড) নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়েছে।
জোট মনে করে, আইনশৃঙ্খলা, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নির্বাচন কমিশন ও দুর্নীতি দমন কমিশনে সংস্কার প্রয়োজন।
তারা জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়তে বাস্তবসম্মত ও জনবান্ধব সংস্কার কার্যকর করার আহ্বান জানিয়েছে।
নাগরিক স্বাধীনতা রক্ষায় সাইবার নিরাপত্তা অধ্যাদেশ ২০২৪, দণ্ডবিধির ৭৭ ধারা, অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট, এবং ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারা সংস্কার বা বাতিলের দাবি জানিয়েছে জোট।
তাদের মতে, এসব আইন মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও স্বচ্ছতা সীমিত করছে।
জোট প্রস্তাব করেছে—অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না।তাদের সম্পদ বিবরণী প্রকাশ, দায়িত্বের জবাবদিহিতা ও নিরপেক্ষ আচরণের নীতিমালা ঘোষণা করতে হবে।
‘জাতীয় নাগরিক জোট’-এর প্রতিনিধিদের মধ্যে রয়েছেন—
মোঃ তারেক রহমান, সাধারণ সম্পাদক, আমজনতা দল।
কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন, সভাপতি, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলন।
কুলসুম সাধনা মহল, সিনিয়র সহসভাপতি, আমজনতা দল।
মোঃ আতিকুর রহমান (রাজা), সভাপতি, বাংলাদেশ বেকার মুক্তি পরিষদ।
মাহবুব আলম, সমন্বয়ক, বাংলাদেশ মাল্টিমিডিয়া জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন।
সোনিয়া চৌধুরী, সদস্য সচিব, স্নিগ্ধ বাংলাদেশ।
আল আমিন রাজু, আহ্বায়ক, জাতীয় মুক্তিফ্রন্ট।
আনোয়ার হোসেন রানা, সভাপতি, জাতীয় সমাজ পার্টি।
তরিকুল ইসলাম ভূঁইয়া, জনতার অধিকার পার্টি (পি.আর.পি.)।
রাজু আহম্মদ খান, চেয়ারম্যান, গ্রীন পার্টি।
অধ্যাপক মাহবুব হোসাইন, অধ্যাপক মায়কোবায়োলজি বিভাগ, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়।
প্রফেসর শাহ আলম, চেয়ারম্যান, আগামীর বাংলাদেশ।
গিয়াস উদ্দিন খোকন বাংলাদেশ সমাজ কল্যাণ পরিষদ।
ড. কবির জুয়েল
শাহ আলম জুলাই যোদ্ধা, চেয়ারম্যান আগামীর বাংলাদেশ।
মিম আক্তার, শহীদ পরিবার প্রতিনিধি।
ইসরাত জাহান রেইলি, ডিএসএ ভিক্টিম নেটওয়ার্ক,আব্দুর রউফ, শহীদ পরিবার জুলাই গণ অভ্যুত্থান প্রতিনিধি,মহিউদ্দিন আহমেদ, সংগঠক, মুঠোফোন গ্রাহক আন্দোলন।
জোট নেতারা বলেছেন, “দেশের বর্তমান রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার প্রেক্ষাপটে নাগরিক সমাজের ঐক্য সময়ের দাবি।
আমরা বিশ্বাস করি, জনগণের অধিকার ও রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নাগরিকদের ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামই গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ পুনর্গঠনের পথ খুলে দেবে।”



