Logo
Logo
×

রাজনীতি

পুশইন করতে হলে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের করুন : নাহিদ

Icon

শেরপুর প্রতিনিধি :

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৫, ১০:২৩ পিএম

পুশইন করতে হলে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের করুন : নাহিদ

ছবি-সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, কোটা আন্দোলন থেকে গণঅভ্যুত্থান যার মাধ্যমে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা দেশ থেকে দিল্লিতে পালিয়েছে। সেই দিল্লিতে বসে রয়েছে শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের হাজারো সন্ত্রাসীকে দিল্লি আশ্রয় দিয়েছে। আর এই সীমান্ত দিয়ে প্রতিনিয়ত পুশইন হচ্ছে, জনগণকে ধোঁকা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা এই পুশইনের বিরোধিতা করেছি।

তিনি বলেন, সীমান্তে কোনো হত্যাকাণ্ড ও পুশইন মেনে নেওয়া হবে না। পুশইন করতে হলে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের পুশইন করুন, শেখ হাসিনাকে পুশইন করুন। আমরা বিচারের মাধ্যমে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাব।

রবিবার (২৭ জুলাই) বিকালে দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা কর্মসূচির অংশ হিসেবে শেরপুর শহরের থানার মোড়ে দলটির পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

নাহিদ বলেন, আওয়ামী লীগের দোসররা বিভিন্ন জায়গায় রয়ে গিয়েছে। প্রশাসনে ঘাপটি মেরে রয়েছে। আমরা গোপালগঞ্জে দেখেছি কীভাবে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা আক্রমণ করেছিল। আমরা পরিষ্কারভাবে বলেছি, গোপালগঞ্জসহ সারা বাংলাদেশে মুজিববাদকে আমরা দাঁড়াতে দিব না।

শেরপুর জেলার সমস্যার কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, শেরপুরে হাসপাতাল থাকলেও চিকিৎসাসেবা নাই, শিক্ষাব্যবস্থা পর্যাপ্ত নাই, কর্মসংস্থান নাই। শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে বিগত আমলে শাসন করলেও শেরপুরে উন্নয়ন নাই। উন্নয়ন পেয়েছে শুধু আওয়ামী লীগের দোসররা, সন্ত্রাসীরা। যারা দেশের টাকা লুট করে বিদেশে পলাতক অবস্থায় আছে।

নেত্রকোনা প্রতিনিধি জানান : রবিবার দুপুরে নেত্রকোণা জেলা শহরের পুরাতন কালেক্টরেট মাঠে জুলাই পদযাত্রা শেষে এক সমাবেশে বক্তব্য দেয় এনসিপির নেতারা। পথসভায় দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, নতুন একটা সংবিধানের জন্য আমরা মাঠে নেমেছি। এই নতুন সংবিধানের জন্য একটা গণপরিষদ নির্বাচন লাগবে। যে গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ, বাংলাদেশের অভ্যুত্থানকারী জনতা, বাংলাদেশের আগামীর নতুন সংবিধান নির্ধারণ করবে।

পথসভায় উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, বিগত সময়ে বাংলাদেশের প্রতিটা সিস্টেম কিছু ধান্দাবাজ, বাটপার, ব্যক্তিস্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছিল। যার কারণে কলুষিত হয়েছিল। অভ্যুত্থান-পরবর্তী অনেক সময় গিয়েছে সেই লোকদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। অতঃপর কালপ্রিটরা আবারও সেই সিস্টেমগুলোতে নতুন করে জেঁকে বসেছে।

দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে আমরা স্লোগান দেইনা ‘নেতা তোমার ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’। একটা বিপদ আসলে বোঝা যায় কয়জন রাজপথে থাকে। ভালো সময় থাকলে কর্মীর অভাব হয় না। কিন্তু সংকটের সময় যারা রাজপথে থাকে তারা প্রকৃত কর্মী। আমার হাজার হাজার লাখো লাখো কর্মীর দরকার নাই। যারা সংকটকে মোকাবিলা করবে এই কর্মীগুলো আমার প্রয়োজন। আর এই কর্মীগুলোকে নিয়েই আমরা রাজনীতি করতে এসেছি।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমীন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারাসহ জেলা-উপজেলার নেতাকর্মীরা। পথসভার আগে, শহরের শহীদ মাহবুব চত্বর থেকে জুলাই পদযাত্রা শুরু হয়। এতে যোগ দেন এনসিপির নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। এর আগে নেত্রকোণায় পথসভা করে দলটি।

এ পথসভায় দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরকে ইঙ্গিত করে বলেন, বাংলাদেশে অসংখ্য ঘটনা ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় একটি ঘটনা হলো ১০ ট্রাক অস্ত্রের চালান। যদি অস্ত্র হ্যান্ডেলই করতে না পারেন তাহলে নিয়ে আসলেন কেন আপনি? আমাদের দক্ষিণ এশিয়াতে এই অস্ত্র কাহিনীর কারণে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়েছে। অসংখ্য মানুষের জীবন বিপন্ন হয়েছে। পার্শ্ববর্তী আঞ্চলিক সংঘাত বিরাজ করছে। আমরা দেখতে পেয়েছি, বিচারের নামে প্রহসন হয়েছে। ভবিষ্যৎ বাংলাদেশে যারা সরকারি প্রশাসনে রয়েছেন, রাজনৈতিক চেয়ারে আসবেন, তাদেরকে বলতে চাই ভবিষ্যৎ বাংলাদেশে সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত আসে এমন কোনো অযাচিত সিদ্ধান্ত আপনারা আর নেবেন না

তিনি আরও বলেন, আমি বাবর ভাইকে সম্মান করি। কারা নির্যাতিত নেতা। কিন্তু আপনার এ রকম কাজ আমি সমর্থন করি না, করি না, করি না। আপনার এই কাজের কারণে বিএনপি ক্ষমতায় আসতে পারে নাই। শেখ হাসিনার মতো একজন খুনি ফ্যাসিস্ট ক্ষমতায় এসেছিল। গত ১৫ বছর বিএনপির যারা নির্যাতিত হয়েছিল, আমার ভাইদের ওপর গুলি চালিয়েছিলÑ এজন্য ইতিহাসের কাঠগড়ায় আপনিও দায়ী থাকবেন।

নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারীর বক্তব্যের পরপরই প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। এদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে জেলা শহরের কোর্ট স্টেশন এলাকা থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এ সময় মিছিলকারীরা এনসিপি নেতা নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারীর বক্তব্যের প্রতিবাদে বিভিন্ন স্লোগান দেন। মিছিলে জেলা যুবদল নেতা আব্দুল্লাহ আল মামুন খান রনিসহ জেলা বিএনপির নেতাকর্মী, জেলার মদন, মোহনগঞ্জ ও খালিয়াজুরী উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা অংশ নেন।

এর আগে বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে বাবরের নিজ উপজেলা মদনে বিএনপিসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা তাৎক্ষণিক এক প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশ করেন।

মদন পৌরসভার জাহাঙ্গীরপুর সেন্টার এলাকায় বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে এসে জড়ো হন। পরে সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে পৌর সদরের প্রধান সড়কগুলো ঘুরে উপজেলা পরিষদ এলাকায় পাবলিক হলের সামনে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে সমাবেশে বক্তব্য দেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি নূরুল আলম তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম আকন্দ, পৌর বিএনপির সভাপতি কামরুজ্জামান চন্দন, সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির, উপজেলা যুবদলের সভাপতি গোলাম রাসেল, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন কবির, পৌর যুবদলের সভাপতি শফিকুল ইসলাম শফিক, পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান প্রমুখ।

Swapno

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher

Major(Rtd)Humayan Kabir Ripon

Managing Editor

Email: [email protected]

অনুসরণ করুন