
প্রিন্ট: ০৬ জুলাই ২০২৫, ১০:১০ পিএম
২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে : প্রধান উপদেষ্টা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৬ জুন ২০২৫, ০৮:৩৭ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
বাংলাদেশের ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধের যেকোনো দিনে অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
শুক্রবার (৬ জুন) সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এই ঘোষণা দেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচনের সময় নির্ধারণ নিয়ে রাজনৈতিক দল ও সাধারণ জনগণের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। তিনি পুনরায় নিশ্চিত করেন যে, নির্বাচন ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে বলে আগেও বলেছেন। এই সময়ের মধ্যে নির্বাচন উপযোগী পরিবেশ তৈরির জন্য সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর থেকে নানা সংকটে পড়ার মূল কারণ ছিল ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচন। অসদুপায়ে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার প্রবণতা একটি দলকে স্বৈরাচারী শাসনে পরিণত করেছিল। ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনকারীরা জাতির কাছে অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত হয়, এবং এমন নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা দলও জনগণের কাছে অগ্রহণযোগ্য হয়ে পড়ে।
ড. ইউনূস আরও বলেন, সরকারের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব হলো একটি সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন করা, যাতে দেশ ভবিষ্যতে রাজনৈতিক সংকটে না পড়ে। এজন্য প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার অত্যন্ত জরুরি। নির্বাচনের সঙ্গে সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে সুশাসন নিশ্চিত করা না গেলে জনগণের সংগ্রাম ব্যর্থ হয়ে যাবে।
তিনি জানান, সরকার সংস্কার, বিচার এবং নির্বাচন—এই তিনটি বিষয়কে প্রধান দায়িত্ব হিসেবে গ্রহণ করেছে। আশা করা হচ্ছে, আগামী রোজার ঈদের মধ্যে বিচার ও সংস্কারের ক্ষেত্রে দৃশ্যমান অগ্রগতি অর্জন সম্ভব হবে। বিশেষ করে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার—যা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের প্রতি সম্মিলিত দায় হিসেবে দেখা হচ্ছে—তাতে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনসংক্রান্ত সংস্কার কার্যক্রম পর্যালোচনা শেষে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে আগামী জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশন উপযুক্ত সময়ে নির্বাচনের বিস্তারিত রোডম্যাপ প্রকাশ করবে।
তিনি আরও বলেন, সরকার এমন একটি নির্বাচন আয়োজন করতে চায় যা দেখে গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের আত্মা শান্তি পাবে। পাশাপাশি, এবারের নির্বাচনে সর্বোচ্চ সংখ্যক ভোটার, দল এবং প্রার্থী অংশগ্রহণ করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
দেড়যুগ পর দেশে একটি সত্যিকারের জনপ্রতিনিধিত্বশীল সংসদ গঠিত হবে বলে উল্লেখ করেন প্রধান উপদেষ্টা। বিপুল সংখ্যক তরুণ ভোটার এবার প্রথমবারের মতো ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবে। জাতিকে সুসংগঠিত ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে সরকার প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিতে অঙ্গীকারবদ্ধ বলে জানান তিনি।