
প্রিন্ট: ২৮ জুন ২০২৫, ১২:১৩ পিএম
সিগারেট কর অপরিবর্তিত থাকায় ২০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব হারানোর শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০১:০৬ এএম

ছবি : সংগৃহীত
২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সব ধরনের সিগারেটের মূল্য ও করহার অপরিবর্তিত রাখার ফলে সরকার প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হতে পারে বলে সতর্ক করেছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এবং অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্স (আত্মা)।
সোমবার বাজেট প্রস্তাবের পরপরই প্রকাশিত তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তারা জানিয়েছে, সিগারেটের বর্তমান মূল্য কাঠামো তরুণদের মাঝে এর ব্যবহার আরও উৎসাহিত করবে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ।
দুই সংস্থার মতে, সিগারেট বাজারে নিম্ন ও মধ্যম স্তরের সিগারেটের অংশ প্রায় ৮০ শতাংশ। যদি এই দুই স্তর একীভূত করে সর্বনিম্ন খুচরা মূল্য ৯০ টাকা নির্ধারণ করা হতো এবং অন্যান্য স্তরের দামও বৃদ্ধি পেত, তাহলে একদিকে রাজস্ব আয় বাড়ত, অন্যদিকে ধূমপান নিরুৎসাহিত করা যেত।
তারা আরও বলেছে, এই বাজেটে ষষ্ঠবারের মতো বিড়ির মূল্য এবং দশমবারের মতো সম্পূরক শুল্ক অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে, যা অত্যন্ত হতাশাজনক। একইভাবে ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্য— যেমন জর্দা ও গুলের দামেও কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। এই পণ্যগুলোর ব্যবহারকারীর একটি বড় অংশ দরিদ্র ও নারী, যারা ইতোমধ্যে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে। মূল্যস্ফীতির প্রেক্ষাপটে এসব পণ্য আরও সস্তা হয়ে পড়বে, যা তাদের ব্যবহারের হার বাড়াবে।
তবে বাজেটে কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপও রয়েছে। যেমন, সিগারেট প্রস্তুতকারকের নিট বিক্রয়মূল্যের ওপর অগ্রিম কর ৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে এবং সিগারেট পেপার আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক ১৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩০০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। যদিও এসব পদক্ষেপকে স্বাগত জানানো হলেও, প্রজ্ঞা ও আত্মার মতে, এগুলো যথেষ্ট নয় তামাকপণ্যের ব্যবহার কমাতে।
প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের বলেন, “তামাকজনিত কারণে প্রতিদিন দেশে ৪৪২ জন মানুষ মারা যান। কর নীতিতে কার্যকর পরিবর্তন আনলে তামাকের ব্যবহার কমানো এবং রাজস্ব বাড়ানো— উভয়ই সম্ভব।”
তাদের দাবি, জনস্বাস্থ্য রক্ষা এবং রাজস্ব আয় বৃদ্ধি— দুটি লক্ষ্যই অর্জনযোগ্য হতো যদি তামাকপণ্যে কার্যকর কর বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হতো।