
প্রিন্ট: ২৭ জুন ২০২৫, ০৮:০২ পিএম
বাংলাদেশের কৃষি ও গবেষণায় সহায়তার আশ্বাস চীনের

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৫, ১২:৩৪ এএম

ছবি : সংগৃহীত
বাংলাদেশের কৃষি, পাট, সামুদ্রিক মৎস্য এবং গবেষণা খাতে সহযোগিতা বাড়াতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে চীন। এ লক্ষ্যেই চীনা ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল নিয়ে বাংলাদেশ সফরে এসেছেন চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও।
রোববার (১ জুন) তিনি রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। বৈঠকে উভয়পক্ষ বাংলাদেশ-চীন বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ওয়েনতাও বলেন, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ উন্নয়নের রূপরেখা এবং সামগ্রিক দিকনির্দেশনা চীনা বিনিয়োগকারীদের জন্য অনুপ্রেরণাদায়ক। তার সঙ্গে থাকা চীনা কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে বিনিয়োগ নিয়ে অত্যন্ত আশাবাদী বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান ভোক্তা প্রবণতার প্রশংসা করে চীনা বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, “রাত ১০টার পরও শপিং মলে মানুষের ভিড় দেখে আমি বিস্মিত। বিভিন্ন পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের নবম বৃহত্তম ভোক্তা বাজারে পরিণত হবে।”
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেন, “কৃষি, গ্রামীণ অর্থনীতি এবং সামুদ্রিক সম্পদের যথাযথ ব্যবহার এখনো অনেক সম্ভাবনা বয়ে আনে। চীনের সহায়তায় আমরা বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামকে একটি উৎপাদন ইউনিটে পরিণত করতে পারি।”
ওয়েনতাও জানান, কৃষি খাতে ভূমি উন্নয়ন, পানি সংরক্ষণ এবং আধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োগে চীন বাংলাদেশকে পূর্ণ সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত। তার ভাষায়, “কৃষি শুধু একটি শিল্প নয়, বরং এটি একটি সামাজিক সংগঠনও বটে।”
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যদি সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দেওয়া হয়, তবে চীন সামুদ্রিক অর্থনীতি ও মৎস্য খাতে অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতে আগ্রহী। তিনি উল্লেখ করেন, গভীর সমুদ্রের মৎস্যচাষে চীন বর্তমানে বিশ্ব নেতৃত্ব দিচ্ছে।
পাট খাত নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টিভঙ্গিকে গুরুত্ব দিয়ে চীনা মন্ত্রী জানান, প্রতিবছর চীন বাংলাদেশ থেকে প্রায় ১০ কোটি ডলারের পাট আমদানি করে, যা মোট রপ্তানির প্রায় ১০ শতাংশ। তবে যৌথ গবেষণা ও পণ্য উদ্ভাবনের মাধ্যমে এই পরিমাণ আরও বাড়ানো সম্ভব।
ওয়েনতাও বলেন, “আমাদের সম্পর্ক কেবল বাণিজ্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা উচিত নয়। গবেষণাতেও একসঙ্গে কাজ করা উচিত। এতে পাট আমাদের জন্য অত্যন্ত কার্যকর একটি সম্পদ হয়ে উঠতে পারে।”
প্রধান উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশের তরুণ পাট ডিজাইনারদের চীনের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করার সুযোগ সৃষ্টি করা যেতে পারে। তিনি চীনা প্রতিনিধিদের আন্তরিকতা ও বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাবের প্রশংসা করেন।
বৈঠকের শেষদিকে ড. ইউনূস তার সাম্প্রতিক চীন সফরের কথা স্মরণ করেন, যেখানে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক বিভিন্ন বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে বলে জানান। তিনি বলেন, “চীনা বিনিয়োগকারীদের আগমন এবং তাদের আগ্রহ বাংলাদেশের জন্য একটি ইতিবাচক বার্তা—যা গোটা জাতি দেখছে এবং প্রত্যাশা করছে।”