
প্রিন্ট: ০৪ জুলাই ২০২৫, ০৪:৪৪ পিএম
নারী পাচারচেষ্টায় দুই চীনা নাগরিকসহ তিনজন গ্রেপ্তার, ভুয়া বিয়ে-ভিসার ফাঁদে তরুণী

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৮ মে ২০২৫, ০১:০৩ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
নারী পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুই চীনা নাগরিক ও এক বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন চীনা নাগরিক হুন জুনজুন (৩০), ঝ্যাং লেইজি (৫৪) এবং বাংলাদেশি মো. নয়ন আলী (৩০)।
এপিবিএনের অভিযানে গত সোমবার (২৬ মে) দিবাগত রাতে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকা থেকে দুই চীনা নাগরিক এবং মঙ্গলবার (২৭ মে) বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে বাংলাদেশি নাগরিক নয়ন আলীকে আটক করা হয়।
বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার রাতে ভুক্তভোগী নারীর মা বাদী হয়ে বিমানবন্দর থানায় মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলা করেন। বুধবার (২৮ মে) সকালে সংবাদমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করে এপিবিএন।
এপিবিএনের তথ্যমতে, গাইবান্ধার ১৯ বছরের এক তরুণী অভিযোগ করেন—দুই চীনা নাগরিক তাকে চীনে পাচার করার চেষ্টা করছেন। এপিবিএনের সহকারী পুলিশ সুপার ফাউজুল কবীর মঈনের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে চীনা নাগরিকদের আটক করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যে বসুন্ধরার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে বাংলাদেশি নয়ন আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযানের সময় পাচার চক্রের অন্য সদস্যরা পালিয়ে যায়। বাসাটি থেকে পাচারের গুরুত্বপূর্ণ আলামত উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, গ্রেফতারকৃতরা একটি আন্তর্জাতিক মানব পাচার চক্রের সদস্য এবং এক বছর ধরে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। তারা দরিদ্র ও অশিক্ষিত তরুণীদের প্রলোভন দেখিয়ে বিয়ের ফাঁদে ফেলে। ওই তরুণীর নামে ভুয়া ঠিকানায় পাসপোর্ট ও অন্যান্য কাগজপত্র তৈরি করে, ১০ লাখ টাকা দেনমোহরে হুন জুনজুনের সঙ্গে বিয়েও রেজিস্ট্রি করান। এই কাজে সহায়তা করেন ঝ্যাং লেইজি ও নয়ন আলী। তরুণীকে না জানিয়ে চীনে পাঠানোর জন্য বিমানের টিকিট কেটে তাকে বিমানবন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়।
এপিবিএনের পুলিশ সুপার (অপারেশনস) মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক বলেন, এই ঘটনায় মানব পাচার দমন আইনে মামলা হয়েছে। এটি সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের হাতে দ্বিতীয় চীনা নাগরিক গ্রেপ্তারের ঘটনা। পাচারকারীরা মূলত দরিদ্র পরিবারের সহজ-সরল তরুণীদের টার্গেট করছে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, এই ঘটনার কয়েকদিন আগেই বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা দূতাবাস এক সতর্কবার্তায় জানিয়েছিল, তাদের নাগরিকদের ‘বিদেশি বউ কেনা’–জাতীয় অনলাইন স্ক্যাম থেকে সতর্ক থাকতে হবে এবং এ ধরনের অবৈধ কার্যক্রম থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানিয়েছিল।