
প্রিন্ট: ০৩ জুলাই ২০২৫, ০২:৫৭ পিএম
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে দুইভাগ করার প্রক্রিয়া ঠিক হয়নি: ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৯ মে ২০২৫, ০২:৪০ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিভক্ত করার প্রক্রিয়া সঠিক হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেছেন, আলোচনা ছাড়াই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা পেশাজীবীদের জায়গা সংকুচিত করেছে এবং অন্যান্য অংশীজনকে নিয়ন্ত্রণে রেখেছে।
সোমবার (১৯ মে) এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম আয়োজিত ‘বাংলাদেশ অর্থনীতি ২০২৫-২৬ : নীতি সংস্কার ও জাতীয় বাজেট’ শীর্ষক সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, এনবিআরকে দুই ভাগ করাটা আমাদের শ্বেতপত্রে সুপারিশ হিসেবে ছিল, তবে যেভাবে এটি বাস্তবায়িত হয়েছে, তা ঠিক হয়নি। এই প্রক্রিয়াকে এখন সংশোধন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি তুলে ধরে দেবপ্রিয় জানান, তৃতীয় প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি কমেছে, ঋণপ্রবাহ উল্লেখযোগ্য নয়, মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানি ও পুঁজিবাজারের সব সূচক নিম্নমুখী। ফলে কর্মসংস্থানের সুযোগ হ্রাস পাচ্ছে, বেকারত্ব বেড়ে ৪ শতাংশের বেশি হয়েছে। মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির কারণে শ্রমিকদের প্রকৃত মজুরি কমছে, যা অর্থনীতির পুনরুদ্ধার নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি করছে।
বাজেট বিশ্লেষণে তিনি উল্লেখ করেন, রাজস্ব ব্যয়ের দুটি প্রধান খাত হলো সুদ পরিশোধ এবং ভর্তুকি। সরকারের অর্থনৈতিক নীতি এডহক ভিত্তিতে পরিচালিত হচ্ছে, যা নির্দিষ্ট নীতিমালার অভাব নির্দেশ করে।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তিনি বলেন, সরকারের নেওয়া বেশকিছু উদ্যোগ নজরে এলেও তা যথেষ্ট নয়। টাস্কফোর্সের সুপারিশ অনুযায়ী দ্বিবার্ষিক পরিকল্পনার প্রয়োজন রয়েছে, তবে সেই কাঠামোতে পরিবর্তনের গতি প্রত্যাশিত নয়। বহুপাক্ষিক ব্যবস্থাপনা সংকটাপন্ন অবস্থায় রয়েছে, যা আগামী বাজেট প্রক্রিয়াকেও প্রভাবিত করছে।
এদিকে, দেশের আমলাতন্ত্র আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছে উল্লেখ করে দেবপ্রিয় বলেন, অতীতে চোরতন্ত্রের মধ্যে আমলা, ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদদের প্রভাব ছিল। বর্তমানে রাজনীতিবিদরা সরে গেলেও আমলারা পুরো শক্তি নিয়ে পুনরুজ্জীবিত হয়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অনিসুজ্জামান চৌধুরী সেমিনারে বলেন, ‘বাস্কেট কেস’ ধারণা থেকে বেরিয়ে এসে দেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতা নিয়ে আত্মবিশ্বাসী হওয়া প্রয়োজন। পাশাপাশি, উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য ন্যায্য আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক কাঠামোর অনুপস্থিতি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।