
প্রিন্ট: ০৬ জুলাই ২০২৫, ০২:২০ পিএম
জবির সংকট সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপের আশ্বাস দিলেন উপদেষ্টা মাহফুজ

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৫, ০১:০৬ এএম

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম আশ্বস্ত করেছেন যে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) চলমান সংকটের দ্রুত সমাধানে সরকার সক্রিয়ভাবে কাজ করবে এবং শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
বুধবার (১৪ মে) রাত ১০টার দিকে কাকরাইল মসজিদের পাশে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি এ কথা বলেন। তবে বক্তব্য চলাকালে শিক্ষার্থীদের ভিড় থেকে হঠাৎ করে তার মাথায় একটি পানির বোতল ছুঁড়ে মারা হয়, যার ফলে তিনি সংলাপ অসমাপ্ত রেখে সেখান থেকে চলে যেতে বাধ্য হন। নিক্ষেপকারীর পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে উপদেষ্টা মাহফুজ বলেন, "আপনারা যৌক্তিক দাবিতে মাঠে নেমেছেন, আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছি। আগামীকাল শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের পথে এগোনো হবে।"
কিন্তু পুলিশের ভূমিকা নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়েই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তিনি বলছিলেন, "কিছু পুলিশ সদস্য হয়তো উসকানি দিয়েছেন..."—এই কথা বলার সঙ্গে সঙ্গেই শিক্ষার্থীরা ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগানে প্রতিবাদ জানান। এরপর আচমকা একটি বস্তু তার মাথায় পড়ে। ঘটনার পর তিনি বলেন, "আমি আর কিছু বলব না," এবং পুলিশি নিরাপত্তায় কাকরাইল ছেড়ে যমুনা ভবনের দিকে চলে যান।
যমুনা ভবনের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মাহফুজ আলম। সেখানে তিনি বলেন, "জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন সংকট, বাজেট বৃদ্ধি ও দ্বিতীয় ক্যাম্পাস সংক্রান্ত দাবিগুলো যৌক্তিক কিনা, তা শিক্ষা মন্ত্রণালয় মূল্যায়ন করবে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে।"
তিনি জানান, আগামী বাজেটে শিক্ষার্থীদের আবাসন ভাতার হার বাড়ানোর দাবি নিয়ে আলোচনা করা হবে। দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে উদ্যোগ নেওয়া হবে এবং বাজেট বরাদ্দ যাতে কমে না যায়, সে বিষয়েও গুরুত্ব দেওয়া হবে।
নাশকতার অভিযোগ ও হুঁশিয়ারি
উপদেষ্টা অভিযোগ করেন, "যারা প্রকৃত শিক্ষার্থী, তারা কখনো এভাবে সহিংস হয়ে উঠতে পারেন না। যারা আন্দোলনের আড়ালে নাশকতার চেষ্টা করছেন, তাদের আলাদা করা জরুরি। শিক্ষার্থীদের উচিত এমন উসকানিদাতাদের চিহ্নিত করা।"
তিনি বলেন, "যে রাজনীতি এখন হচ্ছে, যেটা যমুনা ঘেরাওয়ের নামে হচ্ছে—তা আমরা আর মেনে নেব না। সরকার এবার কঠোর অবস্থানে যাবে। যথেষ্ট হয়েছে।"
শিক্ষকদের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, "দুঃখজনকভাবে আজ শিক্ষকদের অবস্থান অনেকটা শিক্ষার্থীদের কাছে পরাজয়ের মতো। তাদের নৈতিক কর্তৃত্ব বলে কিছু অবশিষ্ট নেই। তারা শিক্ষার্থীদের সামনে মর্যাদা ধরে রাখতে পারেননি।"
মাহফুজ আলম আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্দেশে বলেন, "শিক্ষক বা ছাত্ররা যখন আন্দোলনে নামে, তখন প্রথমে সংলাপের পথ বেছে নিতে হবে। শক্তি প্রয়োগ হবে সর্বশেষ উপায়।"
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলন একটি ক্রান্তিকালে উপনীত হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বাস মিললেও আন্দোলনকারীদের মধ্যে আস্থার ঘাটতি ও মাঠপর্যায়ে উত্তেজনার কারণে সংলাপের পথ বারবার বিঘ্নিত হচ্ছে। তবে উপদেষ্টার ভাষ্যমতে, সরকার পরিস্থিতি শান্ত করতে এবং যৌক্তিক দাবিগুলোর দ্রুত সমাধান আনতে প্রস্তুত।