
প্রিন্ট: ০৩ জুলাই ২০২৫, ০৮:৩১ এএম
জবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে উপদেষ্টা মাহফুজের ওপর বোতল নিক্ষেপ

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৫, ১২:৫৮ এএম

ছবি : সংগৃহীত
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের মুখে পড়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি নিয়ে সংলাপে আসা উপদেষ্টার মাথায় হঠাৎ পানির বোতল নিক্ষেপের ঘটনায় আলোচনার পরিবেশ ভেঙে যায় এবং তিনি সংলাপ অসমাপ্ত রেখেই ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
বুধবার (১৪ মে) রাত ১০টার দিকে কাকরাইল মসজিদের পাশের পুলিশি ব্যারিকেডের সামনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলছিলেন উপদেষ্টা। তখনই শিক্ষার্থীদের ভিড় থেকে আকস্মিকভাবে একটি পানির বোতল তার মাথায় গিয়ে লাগে। কে বা কারা বোতলটি ছুঁড়ে মেরেছে, তা স্পষ্টভাবে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
মাহফুজ আলম বক্তব্য শুরু করেন শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে। তিনি বলেন, “আপনাদের তিনটি দাবি রয়েছে। এগুলো নিয়ে আগামীকাল শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করা হবে।”
কিন্তু তিনি যখন পুলিশের ভূমিকায় কিছু নেতিবাচক মন্তব্য তুলে ধরতে যান, তখন শিক্ষার্থীদের ভিড় থেকে “ভুয়া ভুয়া” স্লোগান ওঠে। ঠিক সেই সময়ই পানির বোতল তার মাথায় আঘাত হানে। উপদেষ্টা সঙ্গে সঙ্গে বলেন, “আমি আর কিছু বলব না,” এবং পুলিশি নিরাপত্তায় দ্রুত সেখান থেকে চলে যান।
পরে যমুনা ভবনের সামনে সাংবাদিকদের উদ্দেশে ব্রিফিংয়ে মাহফুজ আলম বলেন, “শিক্ষার্থীদের তিনটি দাবি নিয়ে সরকার ইতিবাচক অবস্থানে রয়েছে। আবাসন সংকট, বাজেট সংক্রান্ত দাবি ও দ্বিতীয় ক্যাম্পাস উন্নয়নের বিষয়গুলো গুরুত্বসহকারে দেখা হবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা আশা করি শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মধ্যে দ্রুত সংলাপ হবে। কিন্তু আজকের ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। যারা সত্যিকারের শিক্ষার্থী, তারা এভাবে আচরণ করতে পারেন না। এটি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে।”
মাহফুজ আলম বলেন, “যারা আন্দোলনের নামে নাশকতা করার চেষ্টা করছেন, তারা নিজেদের শিক্ষার্থী পরিচয় দিয়ে আসলে পরিস্থিতি ঘোলা করছেন। শিক্ষার্থীদের উচিত, এমন উস্কানিদাতাদের চিহ্নিত করে আলাদা করে ফেলা।”
তিনি স্পষ্ট করে দেন, “আজ থেকে আমরা আর বসে থাকব না। যমুনা ঘেরাও কিংবা রাজনৈতিক মিছিলের নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা হলে, সরকার কঠোর অবস্থান নেবে।”
তিনি শিক্ষক সমাজ নিয়েও হতাশা প্রকাশ করেন। বলেন, “শিক্ষকরা আজ শিক্ষার্থীদের কাছে পরাজিত। তাদের নৈতিক কর্তৃত্ব বলে কিছুই নেই। শিক্ষকদের উচিত ছিল এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে তা সুশৃঙ্খল রাখা। কিন্তু সেটা হয়নি।”
মাহফুজ আলম আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকেও অনুরোধ করেন, “ছাত্র বা শিক্ষকরা যদি আন্দোলনে নামে, প্রথমেই যেন বলপ্রয়োগ না করা হয়। সংলাপের মাধ্যমে সমাধানে চেষ্টা করতে হবে।”