
প্রিন্ট: ৩০ জুন ২০২৫, ০৩:০২ এএম
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন এখনই সম্ভব নয়: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

প্রকাশ: ০৪ মে ২০২৫, ০৩:০২ পিএম

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। ফাইল ছবি
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে এখনো কার্যকর কোনো অগ্রগতি হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেছেন, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরে যেতে হবে, তবে তা হবে নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকার নিশ্চিত হওয়ার পরই। বর্তমানে মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধ, অভ্যন্তরীণ বিভক্তি এবং বাস্তুচ্যুত জনগণের নিরাপত্তাহীনতা—সবকিছু মিলে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া এখনো অনেক দূরের বিষয়।
রোববার (৪ মে) বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসে (বিইউপি) “বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন : আঞ্চলিক নিরাপত্তার উপর প্রভাব এবং ভবিষ্যৎ” শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
তৌহিদ হোসেন বলেন, “এই সংকটের এখনও কার্যকর সমাধান খুঁজে পাইনি। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে দুটি দিক গুরুত্বপূর্ণ—অধিকার ও নিরাপত্তা। এই শর্তগুলো পূরণ না হলে তারা স্বেচ্ছায় ফিরবে না। আমরা কোনো অযৌক্তিক প্রত্যাশাও করছি না। যেই নির্যাতন থেকে তারা পালিয়ে এসেছিল, আমরা কি তাদের সেই জায়গায় ফেরত পাঠাব?”
তিনি দ্বিপক্ষীয় আলোচনার বাস্তবতা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেন। বলেন, “মিয়ানমারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা এই সংকট সমাধানে কার্যকর নয়। আমরা বছরের পর বছর চেষ্টা করেও একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরত পাঠাতে পারিনি। দ্বিপাক্ষিক কূটনীতিতে আমাদের প্রাথমিক নির্ভরতা ব্যর্থ হয়েছে।”
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাস্তবিক পরিবর্তনের ওপর গুরুত্বারোপ করে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “মিয়ানমারে অবশ্যই বাস্তব পরিবর্তন আনতে হবে, যা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হতে হবে। যদিও এটা দীর্ঘমেয়াদি ও কঠিন প্রক্রিয়া, তবু আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে একসাথে থেকে এই ইস্যুতে মনোযোগ ধরে রাখতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “মিয়ানমারে কখনোই প্রকৃত গণতন্ত্র ছিল না। অং সান সু চির অধীনেও দেশটি আধা-সামরিক শাসনে ছিল। এখন সেখানে চলছে পূর্ণাঙ্গ গৃহযুদ্ধ। যে কোনো টেকসই সমাধানে তিনটি পক্ষ—সামরিক জান্তা, আরাকান আর্মি এবং জাতীয় ঐক্য সরকার (এনইউজি)-কে যুক্ত করতে হবে। বিশেষ করে আরাকান আর্মি, যারা বর্তমানে রাখাইনের বড় একটি অংশ নিয়ন্ত্রণ করছে।”
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ থাকা জরুরি এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ এই ইস্যুতে ধরে রাখতে কৌশলগতভাবে কাজ করতে হবে।