
প্রিন্ট: ০৩ জুলাই ২০২৫, ০৫:০৮ এএম
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জন্য তিন স্তরের নিরাপত্তা

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২ মে ২০২৫, ১১:৫০ পিএম

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) চেয়ারপারসন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া
দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে আগামী সোমবার সকাল ১০টায় দেশে ফিরছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) চেয়ারপারসন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। এ উপলক্ষে গুলশানের ফিরোজা বাসভবন এবং আশপাশের এলাকায় নেয়া হয়েছে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) ইতিমধ্যেই বিশেষ নিরাপত্তা পরিকল্পনা বাস্তবায়নে মাঠে নেমেছে।
গুলশান-২ এর ৭৯ নম্বর সড়কে অবস্থিত ফিরোজা বাসভবনের উভয় প্রবেশমুখে স্থাপন করা হয়েছে চেকপোস্ট, বাড়ানো হয়েছে টহল এবং গোয়েন্দা নজরদারি। পাশাপাশি ধানমন্ডিতে তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানের আবাসস্থলেও নেওয়া হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। তিনি থাকবেন তার পিতার বাড়িতে।
ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) ফারুক আহম্মেদ জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার নিরাপত্তা নিশ্চিতে আবেদন পাওয়া গেছে এবং সে অনুযায়ী প্রটেকশন বিভাগ কাজ করছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, লন্ডন থেকে বাংলাদেশ বিমানের একটি নির্ধারিত ফ্লাইটে বিশেষ ব্যবস্থায় ঢাকায় ফিরবেন খালেদা জিয়া। তার সঙ্গে সফরসঙ্গী হিসেবে থাকবেন পুত্রবধূ ডা. জোবায়দা রহমান, কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমান সিঁথি, চিকিৎসক ডা. জাহিদ হোসেন, উপদেষ্টা ডা. আমিনুল হক, এপিএস মাসুদুর রহমান এবং দুই গৃহপরিচারিকা।
সফরসঙ্গীদের মধ্যে তারেক রহমানের স্ত্রী ধানমন্ডিতে অবস্থান করবেন, আর খালেদা জিয়া ও কোকোর স্ত্রী ফিরোজা বাসভবনে থাকবেন। এই দুই আবাসস্থলের জন্য পৃথক নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে, যা পরিচালনা করছে ডিএমপির প্রটেকশন অ্যান্ড ডিপ্লোমেটিক সিকিউরিটি বিভাগ। প্রয়োজন হলে এসপিবিএন সদস্যদেরও মোতায়েন করা হবে।
বিমানবন্দর থেকে গুলশানের বাসভবন পর্যন্ত খালেদা জিয়ার যাত্রাপথে থাকবে বিশেষ ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা। কাকলী পর্যন্ত সড়ক আংশিকভাবে বন্ধ রাখা হতে পারে এবং বিকল্প হিসেবে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উন্মুক্ত করে দেয়ার চিন্তাভাবনা রয়েছে। ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার মো. সরওয়ার জানান, খালেদা জিয়ার নির্বিঘ্ন যাত্রা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, "চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী বিমানবন্দর থেকে বাসায় সরাসরি নেওয়া হবে খালেদা জিয়াকে। সোমবার কর্মদিবস হওয়ায় যাতে যানজট বা জনদুর্ভোগ না হয়, সেজন্য দলীয়ভাবে কোনো জনসমাগম বা সড়ক কর্মসূচি থাকবে না।"
উল্লেখ্য, দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে ২০১৮ সালে কারাবন্দি হন খালেদা জিয়া। পরবর্তীতে করোনাকালে তাকে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেওয়া হয়। গত বছর ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্রপতির আদেশে তাঁর মুক্তি নিশ্চিত হয় এবং মামলার রায় বাতিল করে আদালত। চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে নেওয়া হয় খালেদা জিয়াকে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দীর্ঘ সময় কাটানোর পর এবার পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন শেষে তিনি দেশে ফিরছেন।
বিএনপি নেত্রীর শারীরিক অবস্থা এখনো পুরোপুরি সুস্থ নয়। লিভার সিরোসিস, কিডনি জটিলতা, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস এবং আর্থ্রাইটিসসহ নানা অসুস্থতা তার শরীরে বিদ্যমান। তাই দেশে ফেরার পর তার চিকিৎসা ও নিরাপত্তার বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে প্রশাসন।