
প্রিন্ট: ১৬ জুন ২০২৫, ০৭:২৭ এএম
পরিবহন সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার ও কোম্পানি বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৫২ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
আজকের মানববন্ধনে সংবাদ সংগ্রহের উদ্দেশ্যে আপনাদের উপস্থিতির জন্য শহীদ পরিবার, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সমাজ ও এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
আপনারা সকলেই অবগত আছেন, গত ১৭ বছর ধরে একটি ফ্যাসিবাদী সরকারের ছত্রছায়ায় আমাদের দেশে কীভাবে দখল, লুটপাট ও সহিংসতার সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। আওয়ামী লীগ সরকারের অন্তরালে কিছু স্বার্থান্বেষী মহল দেশের প্রতিটি সেক্টর — বিশেষ করে পরিবহন খাত — দখল করে সীমাহীন চাঁদাবাজি, হত্যা, গুম এবং অর্থ লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করেছে।
পরিবহন সেক্টর লুটপাটের অন্যতম নায়ক ছিল বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির নেতা খন্দকার এনায়েত উল্লাহ, যার সঙ্গে যুক্ত ছিল সাবেক মন্ত্রী শাহজাহান খান ও জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা। এদের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগপন্থী একটি 'সিন্ডিকেট' গড়ে ওঠে, যারা হাজার হাজার গাড়ির রুট পারমিট নিজেরা দখল করে নেয় এবং ব্যবসার নামে তা বাণিজ্যিকভাবে কিনে-বেচে অবৈধ অর্থ উপার্জন করে।
বিহঙ্গ পরিবহনের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ এমপি পঙ্কজ দেবনাথ, প্রজাপতি পরিবহনের চেয়ারম্যান ও মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী শহিদা তারেখ দিপ্তী, পরিস্থান পরিবহনের চেয়ারম্যান শিরিন শান্তি, এবং এদের সহযোগী বিহঙ্গের খোকন, প্রজাপতির রফিক, পরিস্থানের ওয়াজউদ্দিন ও বসুমতির বুলবুল এই লুটপাট চক্রের সক্রিয় সদস্য ছিল। তাদের সবাইকে ছত্রছায়া দিয়েছে সাবেক মন্ত্রী কাওসার কাদের।
উল্লেখযোগ্য যে, কেবল এনায়েত উল্লাহর পকেটেই ১১ হাজার কোটি টাকারও বেশি টাকা ঢুকেছে — যার প্রমাণ দেশি গণমাধ্যমেও প্রকাশিত হয়েছে।
সম্মানিত গণমাধ্যমের প্রতিনিধি ভাই ও বোনেরা,
গত বছরের জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের সময় এই দানবীয় চক্র নগদ অর্থ, অস্ত্র এবং সন্ত্রাসী সরবরাহ করে আন্দোলন দমন ও ছাত্র-যুবকদের হত্যা করার চেষ্টা চালায়। এর ফলে মিরপুর ১, ২, ১০, ১২, ১৩, রূপনগরসহ বিভিন্ন এলাকায় বহু তরুণ প্রাণ অকালে ঝরে যায় এবং শত শত মানুষ আহত ও পঙ্গু হয়।
আজ পর্যন্ত এই অপরাধীদের অধিকাংশ এখনো তাদের কোম্পানি ও অফিসে বহাল তবিয়তে রয়ে গেছে। অনেকে আবার নতুন পরিচয়ে নিজেদের আড়াল করার চেষ্টা করছে।
আমরা আজকের মানববন্ধন থেকে জোরালোভাবে দাবি জানাচ্ছি:
- এসব হত্যাকারী ও অর্থলুটেরাদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে।
- তাদের প্রতিষ্ঠিত পরিবহন কোম্পানিগুলো বাতিল করতে হবে।
- পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনে শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
- চাঁদাবাজি ও অবৈধ সিন্ডিকেট কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ করতে হবে।
আপনাদের মাধ্যমে আমরা সরকারের সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টা, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠন এবং মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, যাতে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
পরিশেষে, আজকের মানববন্ধনে উপস্থিত থেকে সংবাদ সংগ্রহ এবং মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য শহীদ পরিবার, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সমাজ ও এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে আপনাদের প্রতি পুনরায় আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।