সংবাদপত্রের মানোন্নয়নে বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করবে সরকার : তথ্য উপদেষ্টা

সংবাদপত্রের গুণগত মান বাড়াতে সরকার একটি বিশেষ টাস্কফোর্স গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম। তিনি জানান, এই টাস্কফোর্স সংবাদপত্রের প্রকৃত প্রচারসংখ্যা নির্ধারণ, ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়ন, বিজ্ঞাপন হার নির্ধারণ এবং সার্বিক মানোন্নয়নে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে।

সোমবার (২১ এপ্রিল) তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের (ডিএফপি) অংশীজন সভায় এসব কথা বলেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।

তিনি বলেন, “যেসব সংবাদপত্র সরকারের নির্ধারিত নীতিমালার অনুসরণে পরিচালিত হবে, কেবল তারাই সরকারি বিজ্ঞাপন ও অন্যান্য সুবিধা পাবে।” একই সঙ্গে তিনি সংবাদপত্র সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো কর প্রদান করছে কি না, তা খতিয়ে দেখার ওপর গুরুত্ব দেন।

উপদেষ্টা আরও বলেন, “সরকার সংবাদপত্র বন্ধের পক্ষপাতী নয়, বরং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে প্রতিযোগিতামূলক গণমাধ্যম ব্যবস্থা গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য।” তিনি অভিযোগ করেন, “বিগত ফ্যাসিবাদী শাসনামলে অনেক মন্ত্রী-এমপি ব্যক্তিগত স্বার্থে গণমাধ্যম মালিকানা গ্রহণ করেছেন, যা এখন একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এসব প্রতিষ্ঠান পুনর্মূল্যায়নের প্রয়োজন রয়েছে।”

গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ বলেন, “যেসব সংবাদপত্র প্রতিযোগিতার পরিবেশ বজায় রাখতে ব্যর্থ, তাদেরকে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার বাইরে রাখা উচিত।” তিনি ইংরেজি ভাষার সংবাদপত্রগুলোর জন্য আলাদা নীতিমালার কথাও উল্লেখ করেন এবং কোনো পত্রিকা বন্ধ না করার আহ্বান জানান।

চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদা বেগম বলেন, “সংবাদপত্র নিরীক্ষা ব্যবস্থার সংস্কার এখন সময়ের দাবি। ডিএফপি যেন নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারে, সে লক্ষ্যে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।”

সভায় আরও আলোচনা হয় সংবাদপত্রের প্রকৃত প্রচারসংখ্যা নির্ধারণ, নিরীক্ষা ব্যবস্থার মানোন্নয়ন এবং সরকারি বিজ্ঞাপন বণ্টনে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার উপায় নিয়ে।

সভায় উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. গীতি আরা নাসরীন, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ, মানবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, বিএফইউজের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী, ডিইউজের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরীফ, দিনকালের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক শিমুল বিশ্বাস, নয়া দিগন্তের নির্বাহী সম্পাদক মাসুমুর রহমান খলিলীসহ বিভিন্ন সংবাদপত্র ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা।