
প্রিন্ট: ০৪ জুলাই ২০২৫, ০৩:২৬ এএম
গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:৪২ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান গণহত্যার প্রতিবাদে আগামীকাল (৭ এপ্রিল, সোমবার) ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশের একাধিক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এই কর্মসূচির আওতায় শিক্ষার্থীরা কোনো ক্লাস, ল্যাব, অ্যাসাইনমেন্ট বা পরীক্ষায় অংশ নেবেন না। ইস্ট ওয়েস্ট ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রথমে এই ঘোষণা দেন ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন (পিইউএসএবি)’ নামের একটি ফেসবুক গ্রুপে। পরে ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিসহ আরও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও এই কর্মসূচিতে সংহতি জানান।
শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ব পরাশক্তিদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় ইসরায়েল ফিলিস্তিনের নিরীহ মানুষদের উপর ভয়াবহ গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে। শিশু, নারী, বৃদ্ধ—কেউই রক্ষা পাচ্ছেন না। এমনকি আহতদের সেবাদানকারী চিকিৎসকরাও হামলার শিকার হচ্ছেন। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর সামনে এসব ঘটলেও তারা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। তারা বলেন, “এই নৃশংসতার বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে যে প্রতিবাদ গড়ে উঠছে, আমরা তার অংশ হতে চাই। ‘দ্য ওয়ার্ল্ড স্টল ফর গাজা’ কর্মসূচির প্রতি সংহতি জানিয়ে আমরা আগামীকাল কোনো ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নেব না।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতারাও এই কর্মসূচিকে সমর্থন জানিয়ে বলেন, ফিলিস্তিনের নির্যাতিত জনগণের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশে সোমবার ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচিকে সফল করতে হবে। পাশাপাশি, গাজায় চলমান হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে সারাদেশে সংহতি সভা ও বিক্ষোভ সমাবেশের আহ্বান জানান তারা।
এছাড়া খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ ফেসবুকে একটি ছবি পোস্ট করে ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল আনটিল জেনোসাইড স্টপস’ বার্তা দেন। ক্যাপশনে তিনি লেখেন, “হ্যাঁ, সংহতি জানাই। ইসরায়েলি দখলদারিত্ব এবং গণহত্যার বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী ধর্মঘটে অংশ নিন।”
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম তার ফেসবুক পোস্টে বলেন, “মানবিক দায়িত্ববোধ থেকেই এই কর্মসূচিতে আমাদের অংশগ্রহণ করা উচিত। এটি কোনো দল বা মতের কর্মসূচি নয়। ‘বাংলাদেশ’ নামেই আগামীকাল গাজার মজলুম মানুষের পাশে দাঁড়ানো দরকার। রাজপথে নেমে ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদ জানানোর এখনই সময়।”
একই আহ্বান জানিয়েছেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় নেতা ও জুলাই আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক আবু সাদিক কায়েম। তিনি বলেন, “গাজার প্রতি বৈশ্বিক সংহতির অংশ হিসেবে আগামীকাল ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচি সফল করুন।”
উল্লেখ্য, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের বোমা হামলা অব্যাহত রয়েছে। সর্বশেষ হামলায় দক্ষিণ খান ইউনিসে একজন সাংবাদিকসহ বহু ফিলিস্তিনি নিহত হন। উত্তর গাজা সিটিতে দুই শিশুও প্রাণ হারায়। যুদ্ধবিরতি ভঙ্গের পর থেকে প্রতিদিন গড়ে ১০০ শিশুকে হত্যা বা আহত করছে ইসরায়েলি বাহিনী—যা আন্তর্জাতিক মহলে গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।